মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি অর্ধেকে নামিয়ে আনতে খুবই সহজ একটি কাজ করতে পারেন গর্ভবতী নারীরা। আর তা হলো, গর্ভাবস্থার শেষদিকে কাত হয়ে হয়ে ঘুমানো।
ইংল্যান্ডের একটি গবেষণায় এক হাজারেরও বেশী গর্ভাবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এদের মাঝে ২৯১টি ক্ষেত্রে স্টিলবর্ন অর্থাৎ মৃত সন্তান হতে দেখা যায় এবং ৭৩৫টি ক্ষেত্রে স্বাভাবিক, সুস্থ সন্তান জন্ম নেয়। গবেষণা থেকে এটাও দেখা যায়, যেসব অন্তঃসত্ত্বা নারী চিৎ হয়ে ঘুমান, তাদের ২৮ সপ্তাহের পর মৃত সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা থাকে ২.৩ শতাংশ বেশী।
ব্রিটিশ জার্নাল অফ অবস্ট্রেট্রিকস অ্যান্ড গাইনেকোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় মায়ের ঘুমানোর অভ্যাস এবং মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকির ওপর কাজ করা হয়। নিউজিল্যান্ডের ২০১১ সালের একটি গবেষণা এবং অস্ট্রেলিয়ার ২০১৫ সালের একটি গবেষণার সঙ্গে এর মিল পাওয়া যায়।
“গর্ভাবস্থার শেষের দিকে ঘুমের সময়ে শরীরের অবস্থান যে মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়, সেক্ষেত্রে প্রমাণ আরো শক্ত করে এই গবেষণা,” বলেন এডওয়ার্ড মরিস, রয়াল কলেজ অফ অবস্টেট্রিসিয়ানস অ্যান্ড গাইনেকলোজিস্টস এর ক্লিনিক্যাল কোয়ালিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। মৃত শিশু প্রসবের ব্যাপারটা অনেক সময়েই ব্যাখ্যা করা যায় না, সুতরাং সেক্ষেত্রে এই গবেষণাটি বেশ জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
ইংল্যান্ডের মোটামুটি প্রতি ২২৫টি গর্ভধারণের একটিতে মৃত সন্তান প্রসব দেখা যায়। বিশেষ করে বেশী বয়সে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে এটা হয়। আমেরিকাতে প্রতি ১০০ জনে একটি দেখা যায়। কিন্তু ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এটা প্রতিরোধ করা যায়। নতুন গবেষণাটি থেকে জানা যায়, ইংল্যান্ডে প্রতি বছর কমপক্ষে ১৩০ টি শিশুর প্রাণ বেঁচে যাবে যদি মায়েরা গর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাস কাত হয়ে ঘুমান। রাতের ঘুম বা বিকেলের ছোট্ট ভাতঘুম সব ক্ষেত্রেই কাত হয়ে ঘুমানো উপকারী।
কীভাবে আপনি ঘুমাচ্ছেন, এ ব্যাপারটা সন্তানের জীবন-মৃত্যুর মত এত বড় ব্যাপারটাকে কীভাবে প্রভাবিত করে? গবেষকেরা অনুমান করেন, চিৎ হয়ে শোয়ার ফলে শিশু এবং গর্ভের ওজনটা পড়ে রক্তনালীগুলোর ওপরে, ফলে কমে যায় ভ্রূণে রক্ত এবং অক্সিজেনের প্রবাহ। এছাড়াও ধারণা করা হয়, চিৎ হয়ে শুলে আপনার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস পরিবর্তিত হয়।
তবে আপনি যদি ঘুম থেকে উঠে দেখেন চিৎ হয়ে আছেন, চিন্তিত হবার কিছু নেই। ঘুমাতে যাবার সময়ে যে অবস্থানে ছিলেন, সেটাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment