Social Icons

Friday, February 2, 2018

দক্ষিণ আফ্রিকায় আটকে পড়া ৯৫৫ খনি শ্রমিক উদ্ধার

প্রায় একদিনের বেশি মাটির তলায় আটকে থাকার পর দক্ষিণ আফ্রিকার এক স্বর্ণখনির ৯৫৫ জন শ্রমিকের সবাইকে শুক্রবার অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় এ বিপর্যয় ঘটেছিল বলে জানান খনিটির মালিক সিবানইয়ে গোল্ড। খবর এএফপি।
খনিটির মুখপাত্র জেমস ওয়েলস্টিড এএফপিকে জানান, সবাই বেরিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, কারো ক্ষেত্রে পানিশূন্যতা ও উচ্চরক্তচাপের সমস্যা দেখা দিয়েছে, তবে গুরুতর কিছু ঘটেনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েলকম নগরের অদূরে ছোট্ট শহর থেউনিসেনের বিয়াট্রিস স্বর্ণখনিতে শ্রমিকরা আটকা পড়েছিলেন। ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় রাতের শিফটে কাজ করা শ্রমিকদের উপরে উঠিয়ে আনা সম্ভব না হওয়ায় তারা ৩০ ঘণ্টার মতো মাটির নিচে আটকা পড়েছিলেন।
কয়েক ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর প্রকৌশলীরা বিদ্যুতের পুনঃসংযোগ দিতে সমর্থ হন এবং বুধবার থেকে আটকা থাকা শ্রমিকদের ভাগে ভাগে উপরে তুলে আনেন।
গতকাল সকালে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে সব শ্রমিককে উপরে উঠিয়ে আনা সম্ভব হয়। খনির একজন শ্রমিক মাইক খোন্তো এএফপিকে বলেন, এটি ছিল ভীষণ চাপের। সেখানে যথেষ্ট বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না।
ওয়েলস্টিড দাবি করেন, কেউ চাপে ছিল, এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে সেটি ছিল ‘আঘাতমূলক অভিজ্ঞতা’।
আটকে পড়া চাচার খোঁজে সারা রাত উদ্বেগের সঙ্গে বাইরে কাটানো এক তরুণী তার নাম প্রকাশ না করে বলেন, আমরা অব্যাহতি পেয়েছি। সেই তরুণীর মতো আটকে থাকা শ্রমিকদের আরো বেশকিছু আত্মীয়স্বজন নিরাপত্তারক্ষীদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এএফপির এক প্রতিবেদক জানান, রাতের বেলা সেখানে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত হয়। সূর্যোদয়ের পর কর্মস্থলের পোশাক ও হেলমেট পরিহিত উদ্ধারকৃত শ্রমিকরা মেডিকেল চেকআপ শেষ করে বাসযোগে স্থানটি ত্যাগ করেন।
সব শ্রমিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সত্ত্বেও জোহানেসবার্গ থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত শহরটির এ বিপর্যয় দেশটির খনি শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, আমরা এ ঘটনাটি প্রতিরোধ করতে পারতাম। তাদের কিছু কার্যকর জেনারেটর থাকা উচিত ছিল। নিরাপত্তা নিয়ে তাদের চিন্তা ন্যূনতম পর্যায়ের। তারা কেবল উৎপাদন নিয়েই চিন্তিত থাকে।
ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মাইনওয়ার্কার্স ‘বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে’ শ্রমিকদের কাজ বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন। খনি বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরো একটি ইউনিয়ন নুমসা দাবি করেছে যে, পরিপূর্ণ একটি তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত খনিটি বন্ধ রাখতে হবে। এক বিবৃতিতে নুমসা বলে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা শ্রমিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে না পারছে, ততক্ষণ তাদের খনি চালানোর অনুমোদন দেয়া উচিত না। কোম্পানিটি জানায়, সোমবার আবার খনির কার্যক্রম শুরু হবে।
গত বছরের আগস্টে জোহানেসবার্গের বাইরে একটি স্বর্ণখনির এক অংশ ধসে পড়লে পাঁচজন নিহত হন। ২০১৬ সালে একটি কয়লা খনির গুহা ধসে পড়লে এর বাইরে দাঁড়ানো তিনজন এর নিচে চাপা পড়েন। তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বহু দশক ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতির মেরুদণ্ড ছিল স্বর্ণ। তবে মূল্যবান ধাতুটির মজুদ কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates