Tuesday, March 13, 2018
মানব পাচার রোধে ইকুয়েডর সব ধরনের ভিসা বন্ধ করেছে বাংলাদেশ সহ আরো সাত দেশের নাগরিকদের জন্য ।
বিশ্বের সব দেশের নাগরিককে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ দিতে ইকুয়েডর সরকার যে 'খোলা দরজা নীতি' (ওপেন ডোর পলিসি) গ্রহণ করেছিল, তা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশিদের। মানব পাচার রোধে সম্প্রতি ইকুয়েডর সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও আরো আটটি দেশ (আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান) এ কালো তালিকায় রয়েছে। ইকুয়েডর সরকার ট্রানজিট নেয়া দেশ কলম্বিয়া , পেরু , বলিভিয়া এয়ারপোর্ট কে সতর্ক করেছে এই ৯ দেশের নাগরিকদের ট্রানজিট না দিতে ।এর ফলে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের 'ভিসামুক্ত' এ দেশে যেতে হলে কালো তালিকাভুক্ত ৯টি দেশের নাগরিকদের ভিসা নিতে হবে। বাংলাদেশে ইকুয়েডর প্রজাতন্ত্রের কোনো দূতাবাস না থাকায় দেশটিতে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের সমস্যা আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইকুয়েডর দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ওই দেশের সরকারের ভিসাবিষয়ক সাম্প্রতিক এ সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ইকুয়েডর দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইকুয়েডর সরকারের মাইগ্রেশন ও কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি লিওনার্দো ক্যারিওন বলেছেন, ৯টি দেশ থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই ইকুয়েডরকে ট্রানজিট করে তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়া ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের পরও দেশগুলোর সঙ্গে ইকুয়েডরের সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকবে বলে লিওনার্দো ক্যারিওন মনে করেন। জানা গেছে, ভিসা ছাড়া প্রবেশাধিকারের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ইকুয়েডরে মানব পাচার বেড়েছে। এ ছাড়া ইকুয়েডরে যাওয়া অভিবাসীরা শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আবেদনের পাশাপাশি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাই ইকুয়েডরের খোলা দরজা নীতির সুবিধা সব দেশকে দেওয়ার ব্যাপারে ভুক্তভোগী দেশগুলোর আপত্তি ছিল। এটিই ইকুয়েডর সরকারকে বাংলাদেশসহ মোট ৯টি দেশকে খোলা দরজা নীতির বাইরে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহী করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ইকুয়েডরের ভিসা বাধ্যতামূলক করা প্রসঙ্গে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি দেশেরই নিজেদের ভিসা ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। তবে অনেক সময় বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করার পর মানব পাচার ঠেকাতে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। ইকুয়েডর সরকারের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, জীবিকার তাগিদে মানুষ অন্য দেশে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে দেশে চাকরির সুযোগ বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার। তবে অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়া বা মানব পাচার ঠেকাতে সরকারকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের ব্যাপারে সন্দেহ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে তিনি চীনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রায় ২০ বছর আগেও চীনের নাগরিকদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দরজা বন্ধ হয়ে আসছিল। কিন্তু ব্যাপক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে এখন চীনের নাগরিকদের ব্যাপারে আর কারো আপত্তি নেই।
Labels:
আন্তর্জাতিক,
লাতিন আমেরিকা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment