ইউরোপের সেনজেনভুক্ত যেকোনো দেশে বাস করার স্বপ্ন কম-বেশি সব বাংলাদেশিরই আছে। তবে ইউরোপের সব দেশেই অভিবাসী আইন দিন দিন কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে। এক্ষেত্রে শুধু স্পেনেই অভিবাসী আইন কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে এখানেও রয়েছে অবৈধ থেকে বৈধ হবার জন্য কিছু শর্ত। এসব শর্ত পরিপূর্ণভাবে পূরণ করলেই রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়া সম্ভব।
তিন বছর ধরে যাদের এনপাদ্রন বা ঘরের চুক্তিপত্র’ রয়েছে তাঁরাই রেসিডেন্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, অনেক বাংলাদেশি পুরোনো পাসপোর্ট দিয়ে বিভিন্নভাবে ঘরের চুক্তিপত্র কেনাবেচা করছেন। এতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। এ প্রসংগে স্পেন প্রবাসী ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে স্পেনে বাস করছেন, কিন্তু তাঁদের পাসপোর্ট মেশিন রিডেবল নয়। এরাই নিজেদের পাসপোর্টে অন্য ব্যক্তির ছবি লাগিয়ে ২-৩ হাজার ইউরো’র বিনিময়ে ঘরের চুক্তিপত্র বিক্রয় করছেন। এসব চুক্তিপত্র কিনে সিটি কর্পোরেশনে একটি আট ঘণ্টার কাজের চুক্তি, স্কুলসনদসহ বিভিন্ন কাগজ জমা করলেই এক বছর মেয়াদি অস্থায়ী স্প্যানিশ রেসিডেন্ট কার্ড মিলছে; যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
এ কারণেই স্পেনে ভুয়া পাসর্পোটের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। দূতাবাসের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি পাসপোর্ট বিভিন্ন কারণে আটকে আছে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতরে। এ প্রসংগে দূতাবাসের মিনিস্টার অব চ্যান্সেরি হারুন আল রশিদ জানান, দূতাবাস টিম সর্বদা প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। যেসব পাসপোর্ট ইতিমধ্যে আটকে গেছে, সেগুলোর বিষয়ে হোম-মিনিস্ট্রি এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতরের সংগে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি। তবে বারবার চিঠি দেওয়ার পরও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এক চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে, কোনো ধরনের পাসপোর্ট পরিবর্তন করা যাবে না। ইতিমধ্যে যারা তথ্য পরিবর্তনের আবেদন জমা দিয়েছেন, তাঁদের কল নোটিশ দিয়ে আগের তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট নিতে হবে। তবে আগের তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট নিলে অনেক বাংলাদেশির রেসিডেন্স পারমিট বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে দূতাবাস সূত্র।
এদিকে আটকে পড়া পাসপোর্টের জন্য মানবেতর জীবন-যাপন করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পাসপোর্টের অভাবে তাঁরা কাজও নিতে পারছেন না।
এদিকে আটকে পড়া পাসপোর্টের জন্য মানবেতর জীবন-যাপন করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পাসপোর্টের অভাবে তাঁরা কাজও নিতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, আটকে থাকা পাসপোর্টের মধ্যে থেকে ইতিমধ্যে ৮টি পাসপোর্ট টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অবশিষ্টরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন; যাতে পাসপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার সুযোগ করে দেয়া হয়।
No comments:
Post a Comment