জার্মানিতে যেসব বাংলাদেশি অবৈধ হয়ে পড়েছেন তাঁদের সবাইকে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে। এরই মধ্যে ৬৭ জন অবৈধ বাংলাদেশিকে ঢাকায় পাঠিয়েছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দু’বছরের আলোচনায় জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস (এসওপি) চুক্তি সই হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে যারা অবৈধ হয়ে পড়েছেন তাঁরা নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে সই হওয়া এসওপি জানিয়েছে, স্বেচ্ছায় ফিরতে আগ্রহীদের নিজস্ব খরচে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জার্মানিও দু’টি ভাড়া করা বিমানে দু’দফায় মোট ৬৭ বাংলাদেশিকে ঢাকা পৌঁছে দিয়েছে।
একই সঙ্গে আইওএম-এর মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় দেশটি সহায়তা করছে বলে জানান সরকারের প্রতিনিধিরা। তাঁরা আরও বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন, যারা দেশগুলোতে বৈধ হওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা করছেন। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ায় তাঁরা প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তাঁদের সবাইকে দেশে ফিরতে হবে।
জার্মানি থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অন্তত তিন বছর আগে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৬ সালের এক ঘোষণায় জার্মান সরকার এক লাখ অনিবন্ধিত অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে উদ্যোগী হয়।
এ লক্ষ্যে প্রায় এক হাজারের মতো অভিবাসী বৈধতা পাওয়ার আইনি লড়াইয়ের শেষ ধাপ অতিক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে জার্মান সরকার বাংলাদেশকে আড়াইশ’ জনের একটি তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে থেকে ২০০ জনের ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে। তাদের যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত নোট পাওয়ার পর বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাস ১৮০ জনের ট্রাভেল পাস ইস্যু করেছে।
ওই তালিকায় থাকা ৩৬ জন বাংলাদেশি গত ডিসেম্বরে দেশে ফিরেছেন। দ্বিতীয় দফায় ৩১ জনকে গত ১১ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে এসওপি। দ্বিতীয় দফায় ৬৯ জনকে ফেরানোর কথা থাকলেও ৩৮ জন আবার আইনি লড়াইয়ের সুযোগ চাওয়ায় তাঁদের অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউরোপ থেকে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে গেল বছরে এতোটাই চাপে ছিলো ঢাকা-ইইউ, রীতিমতো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে এ সংক্রান্ত আইনি কাঠামো ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস বা এসওপি’র সইয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলো। যার প্রক্রিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরানোর কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে পেরেছে বলে জানিয়েছে জার্মান কর্তৃপক্ষ।
No comments:
Post a Comment