নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জীবনে উন্নতির স্বপ্নে বিভোর হয়েই মূলতঃ বিদেশগামী হচ্ছেন বাংলাদেশেরর অনেক মানুষ। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের জীবনে কতোটা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে- এ এক বিরাট প্রশ্ন। প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের জীবনে কষ্টের শেষ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অত্যন্ত নিম্নমানের কর্মপরিবেশে তাঁদের কাজ করতে হয়, থাকতে হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। তা সত্ত্বেও প্রবাসীদের শ্রম অধিকার ও সামাজিক অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশের নেয়া উদ্যোগ পর্যাপ্ত নয়।
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘ কমিটি এসব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কনস্যুলার ও আইনি সেবা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে গত মার্চে জাতিসংঘে শুনানির পর মূল্যায়ন ও সুপারিশ সংবলিত একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি শ্রমিকরা বিদেশে নিম্নমানের পরিবেশে চাকরি ও বসবাস করলেও তাঁদের স্বার্থ সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেই।
বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের বঞ্চনা রোধে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের পরও এসব কর্মীকে নিগ্রহের শিকার হতে হচ্ছে। প্রবাসী শ্রমিকদের বঞ্চনা ঠেকাতে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি সংক্রান্ত বিধিমালা শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। একইসঙ্গে প্রবাসী শ্রমিকদের সহায়তা দিতে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে কনস্যুলার ও আইনি সেবা জোরদারের পরামর্শ দেয়া হয় প্রতিবেদনে। এছাড়া, নারী কর্মী পাঠানোর বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তিগুলো জোরদারের কথাও উল্লেখ রয়েছে এতে। নারীদের শ্রম ও সামাজিক অধিকার সুরক্ষার এসব চুক্তির পদ্ধতিগত পর্যালোচনারও পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ।
গৃহপরিচারকদের অধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ২০১১ সালের চুক্তি বিদ্যমান রাখার পাশাপাশি, বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমঅধিকার, সমাজে বৈষম্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বাসস্থান ও আদিবাসীদের অধিকারসহ বিভিন্ন মানবাধিকার ইস্যুতেও জাতিসংঘ কমিটি বেশকিছু সুপারিশ করেছে।
No comments:
Post a Comment