জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে শঙ্কায় প্রবাসীরা। তবে, ভোট দিতে না পারলেও এনআইডি দ্রুত দেওয়ার সুপারিশ করেছেন প্রবাসীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটাধিকার প্রয়োগ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি ওঠে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
সভায় প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সুবিধা-অসুবিধা, চ্যালেঞ্জ ও ইসির উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান ইসি’র উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করতে এনআইডি উইং ও এমআরপি যৌথভাবে কাজ করতে পারে। ভোটের বিষয়টি জটিল হলেও এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে, দ্বৈত নাগরিকদের ভোটার করায় ‘সমস্যা রয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোট দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, ভোট দিতে এনআইডি লাগে না। সেক্ষেত্রে প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়ার দ্রুত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা উচিত। সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবের মতো বড় কোনো দেশে কাজ শুরু না করে যেখানে কম বাংলাদেশি রয়েছেন, সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে এনআইডি দেওয়া যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি.এম. কাদের বলেন, এমআরপি যাদের রয়েছে, তাঁদেরকেই অগ্রাধিকার দিয়ে এনআইডি দেওয়া যেতে পারে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন তাঁদের সময়ে (২০০৭-১২) নেওয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এটা সম্ভব না হলেও কাজটা যেন চলমান থাকে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিত্র তুলে ধরে জানান, ২১ লাখ প্রবাসীর মধ্যে ৪৫ শতাংশ লোকের হাতে এনআইডি নেই। ইসি উদ্যোগ নিলে দূতাবাস থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, এআইডি দেওয়াও ভীষণ কঠিন কাজ। প্রবাসী অনেকেই দেশে এসে এনআইডি করেছেন; কিন্তু যাদের নেই তাঁদের মধ্যে এমআরপিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে।
ইতালিতে রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার ও যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ মিশনের ডেপুটি চিফ মাহবুব হাসান সালেহ জানান, দ্বৈত ভোটারদের এনআইডি দেওয়ার সুযোগ নেই।
সিইসি নূরুল হুদাও একই কথা জানান। তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার করতে দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রধান সমস্যা। বর্তমানে প্রক্সি ভোট ও পোস্টাল ভোটের নিয়ম রয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা ভোট দিতে পারেন। আগামী নির্বাচনের আগে এসব পদ্ধতি নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment