Thursday, April 26, 2018
গিবতকারী জানে না তার পরিণতি কতো ভয়াবহ
গিবত বা পরনিন্দা করতে অনেকেই ভালোবসেন, কিন্তু সে জানে না এর ভয়াবহতা কত খারাপ। যে ব্যক্তি এই নিকৃষ্ট কাজের সঙ্গে জরিত, সে তার সুবিবেচনা ও সুনীতি হারিয়ে ফেলে। এই গিবত বা পরনিন্দার দরুন এক মানুষের সঙ্গে অন্য মানুষের সুসর্ম্পক নষ্ট হয়ে যায়।
এখন জেনে নেই গিবত বা পরনিন্দা কাকে বলে-
শরিয়তের পরিভাষায় গিবত বলা হয়, কারও অনুপস্থিতিতে তার এমন কোনো দোষ অন্যের কাছে বর্ণনা করা যা শুনলে সে কষ্ট পাবে । প্রকৃতপক্ষে যদি তার মধ্যে সেই দোষ থাকে তাহলে তাকে গিবত বলে, আর যদি না থাকে তবে তাকে অপবাদ বলে। আর অপবাদ গিবতের চেয়েও নিকৃষ্ট।
ইসলামের দৃষ্টিতে গিবত করা ও শ্রবণ করা দুটিই সমান অপরাধ। জীবিত মানুষের গিবত করা যেমন হারাম, মৃত মানুষের গিবত করাও তেমন হারাম। গিবত জেনার চেয়েও নিকৃষ্ট ও আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সমান।
এ সর্ম্পকে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ইমানদারগণ! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পেছনে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার কারও ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? বস্ততঃ তোমরা তো একে ঘৃনাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সুরা হুজুরাত, আয়াতঃ ১২)
এখন আসুন, পবিত্র হাদিস থেকে গিবত সর্ম্পকে কিছু জেনে নেই-
হজরত হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘চোগলখোর (পরনিন্দাকারী) বেহেশতে প্রবেশ করবে না। (মেশকাত শরীফ)
হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয়ই এ দুই কবরবাসীকে আজাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বড় কোনো অপরাধের কারণে নয়, এদের একজন প্রসাব থেকে নিজেকে হেফাজত করত না। অন্যজন গিবত করে বেড়াত। (বুখারী শরীফ)
অন্য এক হাদিসে আছে, গিবত জেনার চেয়েও নিকৃষ্ট। (মেশকাত শরীফ)
হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই (দুনিয়ায় থাকতেই) তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়, ওইদিন আসার আগে যেদিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম কাজে আসবে না। সেদিন তার কোনো নেক আমল থাকলে সেখান থেকে জুলুমের সমপরিমাণ কর্তন করে নেওয়া হবে। আর তার কোনো নেক আমল না থাকলে মজলুমের গুনার কিছু অংশ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে”। (বুখারী শরীফ)
আসুন, আমরা সকলেই গিবত বা পরনিন্দা ছেড়ে দিয়ে ভালো হয়ে চলি। আল্লাহ আমাদের সকলকে এ জাতীয় সকল ফেৎনা থেকে বেঁচে থাকার তাউফিক দান করুন। (আমিন)
Labels:
ধর্ম ও জীবন
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment