আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য তালেবানকে দায়ী করে জঙ্গিগোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনায় অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে দেশটিতে জঙ্গিবাদ দমনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যেই কাবুলে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। মাত্র ৯ দিনে চার চারটি জঙ্গি হামলার শিকার কাবুল। একটি হামলার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটি হামলায় ক্ষত বিক্ষত আফগানিস্তানের রাজধানী। টানা দেড় সপ্তাহ এমন চিত্রে হাপিয়ে উঠেছেন শহরের বাসিন্দারা। এ অবস্থায় ঘুরেফিরে একটি প্রশ্নই নাড়া দিচ্ছে তাদের মনে। কী করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও গোয়েন্দা বাহিনী? গত শনিবার কাবুলে পুলিশ চেকপোস্টের কাছে ভয়াবহ গাড়ি বোমা হামলায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও তার আগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে হামলায়, বিদেশিসহ ৩০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায় স্বীকার করে তালেবান।
কিন্তু সোমবারের সেনাঘাঁটিতে হামলা ও গত সপ্তাহে সেভ দ্য চিলড্রেন কার্যালয়ে হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। সাম্প্রতিক এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে, আফগানিস্তানে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার লড়াইয়ে নেমেছে তালেবান ও আইএস। সোমবার কাবুলে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ পরই দেশটিতে রাষ্ট্রীয় সফরে আসেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। আফগানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার আলোচনায়ও উঠে আসে জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গ। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে হামলায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন আশরাফ ঘানি।
এদিকে, তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার একটি উদ্যোগ শুরু হলেও তা ভেস্তে যেতে চলেছে। সোমবার হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন এই মুহূর্তে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত নয় যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প বলেন, 'আফগানিস্তানে প্রতিদিন নারী শিশুসহ বহু নিরাপরাধ মানুষ বিভিন্ন সহিংসতায় মারা পড়ছে। দেশটিতে বেশিরভাগ সহিংসতার জন্য তালেবান দায়ী। এই মুহূর্তে আমরা ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো শান্তি আলোচনায় বসতে চাই না। বরং আমরা আফগানিস্তানকে জঙ্গিমুক্ত করতে যা যা করা দরকার তাই করবো। আমরা ছাড়া অন্য কেউ দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারবে না।'
তবে মার্কিন এই হুমকি ধামকি আফগান পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর সাবেক কমান্ডার সুলতান মেহমুদ হালি রুশ গণমাধ্যম আরটি-কে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তালেবানকে আলোচনার টেবিলে আনলেই কেবল চলমান সঙ্কটের সমাধান সম্ভব।
No comments:
Post a Comment