Social Icons

Saturday, July 30, 2016

জঙ্গি আতঙ্ক : জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তারা ঢাকায় ফিরছেন না

জার্মান দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা আর ঢাকায় ফিরছেন না বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিঞ্জ। যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১লা জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি আগের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ঘটনার পর অনেকেই বাংলাদেশ ছাড়ছেন। বিশেষ করে যাদের শিশু-সন্তান রয়েছে। তবে ঠিক কতজন একেবারে ছেড়ে গেছেন তা এখনই বলা যাবে না। কারণ, শ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে। ছুটি শেষ হলেই পুরো চিত্র পাওয়া যাবে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার অন্তত দুজন সহকর্মী গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যাওয়ার পর আর ঢাকায় ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দূতাবাসের ইন্টার্নি প্রোগ্রাম, লিগ্যাল এইড ট্রেনিংয়ের মতো কর্মসূচিও আমাদের বাতিল করতে হয়েছে। নিরাপত্তায় সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ড. প্রিঞ্জ বলেন, নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে নিরাপত্তা অনেক বেড়েছে। কিন্তু এটাও সত্য গুলশানে অনেক লোকের বাস। এখানে বাইরে থেকে অনেকে আসেন। এ রকম একটি এলাকাকে শতভাগ নিরাপদ করা হয়তো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত। শ্রীষ্মের ছুটিতে জার্মান দূতাবাসের কূটনীতিক, উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং স্টাফদের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে কূটনৈতিক সূত্রে যে খবর বেরিয়েছে তা হলো- তাদের অনেকে ঢাকায় ফেরার বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। এর মধ্যে এক কূটনীতিক এবং একজন ডেভেলপমেন্ট অফিসার আর ঢাকায় না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিতও করেছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ফ্রান্স: ওদিকে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফিয়া অ্যাবোর্ট জানিয়েছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং বাস্তবতা বিবেচনায় ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনায় আগ্রহী ফ্রান্স। ১লা জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছেন দূতাবাসে নিযুক্ত কূটনীতিক, কর্মকর্তা ও স্টাফরা। তাদের এখানে থাকার বিষয়টি সময় এবং পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আমরা কাবুল কিংবা বাগদাদে বাস করছি না। এখানে সুনির্দিষ্ট হামলার হুমকি নেই। বাংলাদেশে পুলিশ কিভাবে কাজ করছে, মানুষের মনে আস্থা ফিরছে কি-না? কোনো হামলার হুমকি এলে তা মোকাবিলার কৌশল কী হবে? এসবের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ফ্রান্সের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি গোয়েন্দা তথ্য সবচেয়ে জরুরি। কারা কখন এ ধরনের হামলা করতে পারে তাদের গতিবিধি জানাতে হবে সবার আগে। আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সঙ্গে মিলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।
নিরাপত্তা নিয়ে জার্মান রেডিও’র প্রতিবেদন: ঢাকায় থাকা বিদেশিদের বিষয়ে সম্প্রতি জার্মান রেডিও’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এখানে থাকা বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক হয়ে চলাফেরা করছেন। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। একাধিক বিদেশি নাগরিককে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল নীপিন গঙ্গাধরের। বিদেশি এক বেসরকারি সংস্থার শীর্ষ পদে আছেন ওই ভারতীয়। গুলশানে হামলার পর তার বন্ধুমহলের অনেকেই এখন ঢাকায় নেই। কয়েক দিন আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘হামলার কথা জেনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়েছি, ওটা একটা নিরাপদ জায়গা ছিল, আমরা প্রায়ই সেখানে যেতাম, ওখানকার রুটি আমার বাসার নিয়মিত খাবার ছিল, ওই হামলা বিদেশিদের শঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ অনেকে ওই হামলার গোলাগুলির শব্দ নিজ কানে শুনেছে, কোনো পত্রিকা পড়ে বা টিভিতে দেখে নয়।’ নীপিন গঙ্গাধর জানান, তারা সবাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন, তবে তার বিদেশি বন্ধুরা আরও কিছুটা সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান। মূলত নিজেদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা কাজ করছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশে একটি ভারতীয় এয়ারলাইন্সের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন শ্রীলঙ্কান নাগরিক জে এফ মার্জিয়া। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, এটা একটা সুন্দর দেশ। ২৫ বছর আগে এই দেশে এসে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। এখনো ভালো লাগে। তবে সাম্প্রতিককালের ঘটনা খানিকটা উদ্বিগ্ন করেছে, এখন সতর্কভাবে চলাফেরা করি।
আতঙ্ক কাটাতে বহুমুখী সরকারি উদ্যোগ: গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর কূটনৈতিক জোনসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা বিদেশি নাগরিকদের বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে সরকার। বিদেশিদের আতঙ্ক কাটাতে ‘ক্লোজ প্রটেকশন’ দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দূতাবাস এবং জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের বাসভবন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বিদেশি নাগরিকদের অবস্থানস্থল, যাতায়াত এবং অনুষ্ঠানস্থলে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates