সরকারের পাওনা শোধ না করায় বন্ধ হতে চলছে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল। এই কোম্পানিটির কার্যক্রম যে কোনো সময় বন্ধ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।
সেক্ষেত্রে আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে এই অপারেটরের গ্রাহকদের বিকল্প সেবা বা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও এটা জানিয়ে দেবে বিটিআরসি। ক্রমাগত গ্রাহক কমতে থাকায় বড় ধরনের সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বিটিআরসির হিসেবে, গত জুন মাস শেষ নাগাদ এই অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ৭ লাখ। যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক শতাংশেরও কম।
বিটিআরসি থেকে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিটিসেলের কাছে আমাদের পাওনা রয়েছে প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকা। বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তারা এ পাওনা মেটানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আইন অনুযায়ী পাওনা না দেওয়ায় যে কোনো সময় সিটিসেল বন্ধ করে দিতে পারি। বিটিআরসি যে কোনো সময় এর তরঙ্গ বাতিল এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, সিটিসেলের যে গ্রাহক রয়েছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে আগামী ১৬ অগাস্টের মধ্যে বিকল্প সেবা বা ব্যবস্থা নিতে। খুব শিগগিরই এ অপারেটরটির কার্যক্রম বন্ধ করা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে বিটিআরসি প্রধান বলেন, ‘আইন অনুযায়ী যে কোনো সময় আমরা এটি বন্ধ করতে পারি।
এ বিষয়ে সিটিসেলের কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, ২০১২ সালে ৮ দশমিক ৮২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নবায়ন করলেও লাইসেন্স শর্ত অনুযায়ী তরঙ্গ নবায়ন ফির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কিস্তি এখনও পরিশোধ করেনি সিটিসেল। এ খাতে ২২৯ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বিটিআরসির, বার্ষিক লাইসেন্স ফি বাবদ পাওনা ১০ কোটি টাকা।
এছাড়া বার্ষিক তরঙ্গ ফি ( ২০১৩ থেকে ২০১৬) ২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ( ২০১৪ থেকে ২০১৬) ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল ( ২০১১ থেকে ২০১৬) ৮ কোটি ৯২ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ও বিলম্ব ফি ১৩৫ কোটি টাকা মিলে সর্বমোট ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা পাওনা বিটিআরসির।
বিটিআরসির হিসাবে জুন শেষ নাগাদ গ্রাহকের হাতে থাকা মোট মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ১৩ হাজারের বেশি। ১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার লাইসেন্স পায় সিটিসেল বা প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড।
No comments:
Post a Comment