জার্মানির মিউনিখের শপিং মলে শুক্রবার যে বন্দুকধারী গুলি চালিয়েছিল তার সঙ্গে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। এদিকে ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। হামলার কোনো ভিডিও থাকলে তা পুলিশের কাছে সরবরাহ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। খবর বিবিসি’র
পুলিশ জানিয়েছে, ১৮ বছর বয়স্ক ওই তরুণ ইরানি বংশোদ্ভূত, এবং তার জার্মানি ও ইরান দু’দেশেরই পাসপোর্ট ছিল। তার নাম এখনও পুলিশ প্রকাশ করেনি। আরো জানা গেছে তরুণটির মানসিক অবসাদের জন্য চিকিত্সা চলছিল। পুলিশ বলছে, মিউনিখের হামলাকারী ছিল একজন ছাত্র এবং গুলি করে গণহারে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর প্রতি তার একটা অন্ধ আকর্ষণ ছিল বলে তথ্য প্রমাণও তারা পেয়েছে। তার বাসাবাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ যেসব কাগজপত্র পেয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া হামলা সংক্রান্ত নানা খবরের কাটিং এবং ‘ছাত্ররা কেন হত্যা করে’ এই শিরোনামে একটি নিবন্ধ।
পুলিশ জানায়, গুলি চালানোর আগে ওই তরুণ কিছু একটা বলে চিত্কার করছিল, কিন্তু তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত বের করতে পারেনি ওই তরুণ আসলে কি বলেছিল। প্রথম দিকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসলামি জঙ্গীবাদকে দায়ী করা হলেও মিউনিখ পুলিশ এখন জানিয়েছেম ওই তরুণের সঙ্গে কোনো জঙ্গী গোষ্ঠির যোগাযোগ ছিল না। তবে মোবাইলে ফোনে তোলা ভিডিও ছবিতে ‘আমি জার্মান’ কথাটি কাউকে বলতে শোনার পর এমন ধারণার কথাও শোনা যাচ্ছে যে উগ্র ডানপন্থী মতাদর্শের কোনো সমর্থক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। পুলিশ বলছে, নরওয়ের গণহত্যাকারী অ্যান্ডারস্ বেহরিং ব্রেভিক যে ২০১১ সালে ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল তার সঙ্গে এই যুবকের যোগাযোগের প্রমাণও তারা পেয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ এমন সন্দেহও করছে যে ওই তরুণ একজন মেয়ের ছদ্মনামে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে খুন করার জন্য লোকজনকে ম্যাকডোনাল্ড এর দোকানে ডেকে এনেছিল। ঘটনার পরপরই আক্রমণকারী আত্মহত্যা করে। শপিং সেন্টারের ভেতর একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, হামলাকারী সেনা স্টাইলের বুট পরেছিল এবং তার পিঠে ব্যাগ ছিল। হামলার ঘটনায় ৯ জন নিহত হওয়া ছাড়াও শিশুসহ ২৭ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। মিউনিখ পুলিশের প্রধান বলেছেন, আহত অনেকে ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে- যাদের হিসাব পুলিশের কাছে নেই। জার্মানিতে শনিবার নিহতদের স্মরণে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ওই শপিং এলাকায় মানুষজন নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়েছে এবং মোমবাতি জ্বালিয়েছে।
No comments:
Post a Comment