ঢাকা থেকে মোঃ নুর হুসাইন----------------------
*******************************************
পবিত্র মাহে রমজান সমাগত। মুসলমানদের কাছে এ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসের ইবাদত বন্দেগির সওয়াব অন্য মাসের চেয়ে শতগুণ বেশি। অন্য মাসে যারা ইবাদত বন্দেগিতে অলসতা দেখান, তারাও এ মাসের ইবাদতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করেন। সব মাসের মধ্যে রমজানকে বছরের সরদার বলা হয়েছে। এ মাসে সৎ কাজ করলে যেভাবে সওয়াব দেয়া হয়, একইভাবে ইসলামবিরোধী কর্ম করলেও গুনাহের পাল্লা ভারী হয় এ মাসে। মুসলমানরা চান তাদের ভালো কাজের পাল্লা ভারী হোক। কোনো মুসলমান কামনা করেন না যে, এ মাসে আল্লাহ ও বান্দার ন্যায্য অধিকার নষ্ট করে তার নাম অপরাধীর খাতায় লেখা হোক শুধু মানুষ খুন করলেই অপরাধ হবে এমন ভাবা ঠিক নয়। আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীব, মানুষকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অতি মুনাফা অর্জনের জন্য পণ্য মূল্য বৃদ্ধি করা বড় অপরাধ। নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মানবতাকে সঙ্কটে ফেলা কবিরা বা বড় গুনাহের মধ্যে পড়ে। এ গুনাহের জন্য শরিয়াহ বা ইসলামের ফয়সালা মতে তওবা করতে হয়। তওবা ছাড়া কবিরা গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না। রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা মারাত্মক গুনাহের কাজ। রহমত, নাজাত, বরকত আশা করলে কোনো মুসলমান ব্যবসায়ী এমন অন্যায় আচরণ করতে পারেন না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা হয় এবং রোজাদারদের জন্য শোভন আচরণ করা হয়। ছোলা, চিনি, মাছ, গোশতের বাজার স্থিতিশীল রাখা হয়। অথচ, বিপরীতভাবে দেখা যায় বাংলাদেশের বাজারের বেহাল অবস্থা। বাংলাদেশ ৮৬ শতাংশ মুসলমানের দেশ। এখানে রমজান মাসে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজা, নামাজ, তারাবিহ আদায় করে থাকেন। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই রোজার মাসকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে সিয়াম পালন করেন। দেখা যায়, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী অতি মুনাফালোভী হয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে ধনাঢ্য বনে যায়। তাদের জন্য এ আয় সম্পূর্ণভাবে হারাম। এটা অবৈধ ও অনৈতিক। 
সমাজকে খাদ্যে স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের ভূমিকার তুলনা নেই। ব্যবসায়ীরা দেশকে স্থিতিশীল ও অস্থিতিশীল দুটোই করতে পারেন। দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, জাতির প্রতি স্নেহ মায়া মমতা থাকলে তারা কখনো সমাজ ও মানবতাবিরোধী কাজ করতে পারে না। মুনাফার নিয়ম মেনে ব্যবসায় করেও মানুষ প্রচুর অর্থের মালিক হচ্ছে। হালাল ও ন্যায্য ব্যবসায়ের সুখানুভূতি অন্যরকম। সে চিন্তা মাথায় রেখে ব্যবসায় করলে ইহকাল ও পরকাল দু’টিই শান্তিপূর্ণ হবে। সরকারের যত প্রচেষ্টা থাকুক না কেন, এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এগিয়ে না এলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কখনো সফল হতে পারে না। তাই আশা করব, সরকারের সাথে সমন্বয় করে ব্যবসায়ীরা রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে এগিয়ে আসবেন।
ই-মেইল : mh.hoqueansari@gmail.com
No comments:
Post a Comment