বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। ধান আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। প্রতি বছর বৈশাখের শুরু থেকেই ধান কাটার ধুম পড়ে দেশের গ্রামাঞ্চলে। সবার মধ্যে স্ফীত হাসি লেগে থাকে উৎপাদিত ফসল দেখে।
একদিকে হরেকরকম মৌসুমি ফল, অন্যদিকে উৎপাদিত সোনালি ধানে কৃষকের হৃদয় জুড়িয়ে যায়। সেই হাসি অনেক সময় কালবৈশাখী ও বজ্রপাতের কারণে মুহূর্তেই উবে যায়। এতে কিছু মানুষকে প্রিয়জন হারানোর বেদনা সারা জীবনের জন্য বয়ে বেড়াতে হয়। সেই সময় বজ্রপাত নামের যমদূতে কৃষক-শ্রমিকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
পৃথিবীর যে ক’টি দেশে বজ্রপাত বেশি হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই বাড়ছে বজ্রপাতের ঘটনা। তাছাড়া পরিবেশ দূষণের কারণেও বজ্রপাত হয়ে থাকে।
তাপমাত্রার পরিমাণ যত বাড়বে বজ্রপাতের ঘটনাও তত বৃদ্ধি পাবে। আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নানের ভাষ্যমতে ১৯৮১ সাল থেকে বজ্রপাতের ঘটনা বাড়তে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা জরিপে উঠে এসেছে ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে বাংলাদেশে।
যেভাবে বাঁচবেন বজ্রপাত থেকে- উঁচু জায়গায় বা খেলার মাঠে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। খোলা জায়গা থাকলে ছাতা ব্যবহার করবেন না। গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না।
বাইরে হাঁটার সময় বজ্রপাত দেখা দিলে দ্রুত মাটিতে বসে পড়ুন। বাড়িতে আশ্রয় নিন। মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল আরোহীরা দ্রুত নেমে পড়–ন এবং নিরাপদ আশ্রয় নিন।
পুকুর, জলাশয়, খাল, নদী জাতীয় স্থানে অবস্থান করবেন না। তীব্র বজ্রপাতের সময় ঘর থেকে বাইরে যাবেন না। মোবাইল ফোনের ব্যবহার মানুষের ওপর বজ্রপাতের আশঙ্কা বাড়ায়। চামড়ার ভেজা জুতা ও খালি পায়ে থাকা বিপজ্জনক। এগুলো মেনে চললে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হবে।
শিব্বির আহমদ আরজু সম্পাদক, সাহিত্য পত্রিকা তরঙ্গ
No comments:
Post a Comment