দালালচক্রের বাধার মুখে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না সৌদিতে নির্যাতনের শিকার ৯ বাংলাদেশি নারী। মাত্র তিন মাস আগে এই নারীরা গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। এখন দাম্মামের খোবার এলাকায় একটি ক্যাম্পে রয়েছেন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে পাঠানো সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সোনিয়া দেওয়ান প্রীতির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকার লালবাগের সুমাইয়া কাজল সৌদি আরব যান গত ২৩ এপ্রিল। কয়েক দিনের মাথায় তাঁর ঠাঁই হয় দাম্মাম শহরের আল খোবার এলাকার এক নম্বর ক্যাম্পে। গাইবান্ধা জেলার সাথী সৌদি আরব গেছেন গত ২০ এপ্রিল। গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করার তিনদিন পর শরীরিক নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকেও ওই ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একইভাবে গত আড়াই মাসে ৯ বাংলাদেশি নারী শ্রমিকের ঠাঁই হয়েছে সেখানে। নির্যাতনের শিকার হয়েই তাঁরা এখন ক্যাম্পে অনিশ্চিত জীবন পার করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসার পর এদের কেউ কেউ সুস্থ হলেও অনেকেই এখনো অসুস্থ। জানা গেছে, তাঁরা দেশে ফিরে আসতে চাইলেও দালালচক্র তাঁদের ফিরতে দিচ্ছে না।
দাম্মামে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ ভয়েস বাংলাকে জানান, ‘ওই নারী শ্রমিকদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। তাঁদের তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে।’ সুমাইয়া কাজল ও সাথীর মতো ভোলা জেলার রীনা, ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুরের মাজেদা ও তাঁর মেয়ে বিলকিস, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের নূরজাহান, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীর পিংকি, নওগাঁর লতাসহ মোট ৯ নারী গত সাড়ে তিন মাসে সৌদি আরব গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সংসারের টানাপোড়েন থেকে একটু সুখের মুখ দেখতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে দালালের মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তাঁরা।
ভুক্তভোগী এসব নারীর পরিবারের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, মনসুর আলী ওভারসীজ অ্যান্ড ট্রাভেলস-এর মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যাওয়ার কিছুদিন পরই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন নারী গৃহকর্মীরা। পরে তাঁদের খোবার এলাকার ঐ ক্যাম্পে নিয়ে যায় দালালরা। এ সময় নির্যাতিত নারীরা দেশে ফিরতে চাইলেও তাঁদের ক্যাম্পে আটকে রাখে দালালচক্রটি। এ সময় শত চেষ্টা করেও তাঁরা এজেন্সির সংগে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। নির্যাতিতদের পরিবারের দাবি, সরকার যেন এই নয় নারী গৃহকর্মীকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
No comments:
Post a Comment