২০ বছর আগের এক অনৈতিক কার্যকলাপের কথা তুলে ধরলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি বোমা ফাটালেন মিশেল প্লাতিনি। রীতিমতো বোমা ফাটালেন তিনি। যিনি এখন ফিফা এবং উয়েফায় পরিত্যক্ত। প্লাতিনির দাবি, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিল বনাম ফ্রান্সের ফাইনাল ম্যাচটি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল!
সাবেক উয়েফা প্রেসিডেন্টের কথায়, '১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের ক্রীড়াসূচি গড়ার ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা চাতুরি করেছিলাম। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপটা যাতে আমরা জিততে পারি সে জন্যই ফাইনালের আগে যাতে ব্রাজিলের সঙ্গে দেখা না হয়, সে রকম একটা প্রস্তাবিত সূচি আমরা করে দিই ফিফাকে। সেই প্রস্তাবিত সূচি মানার ফলেই আমরা ফাইনালে উঠি। এবং ব্রাজিলকে ৩ -০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হই।'
কী ছিল সেই চাতুরি? আর্থিক দুর্নীতিতে উয়েফার পদ খুইয়ে চার বছর সাসপেন্ড থাকা প্লাতিনির বলেছেন , 'এমনভাবে আমরা গ্রুপ সাজিয়েছিলাম, যাতে গ্রুপের খেলায় ব্রাজিল এক নম্বর হলে আর আমরা ফ্রান্সও গ্রুপ শীর্ষে থাকলে নক আউট পর্বে আমাদের দেখা হবে না। দেখা হবে সেই ফাইনালে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিশ্বাস করুন ব্রাজিল বনাম ফ্রান্স ফাইনাল হবে, এটা স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন সত্যি করার জন্য আমাদের দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হয়। সে সময় ব্রাজিল র্যাংকিংয়ে এক নম্বর আর ফ্রান্স দুই নম্বর ছিল। তাই কাজটা করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়নি। যদিও আমি মনে করি, এটা অনৈতিক নয়। কারণ আয়োজক দেশ সূচি গড়ার জন্য সুপারিশ করার সুযোগ পেয়েই থাকে। তার বাছাইয়ের মর্যাদাও পায়। এবারও রাশিয়া বাছাইয়ের মর্যাদা পেয়েছে। তবে আমাদের স্বপ্নটা সত্যি হয়েছিল ভাগ্য সঙ্গ দেওয়ায়। ব্রাজিল ও ফ্রান্স গ্রুপের সেরা হয়েছিল। ’
প্লাতিনিই জানিয়েছেন, ক্রীড়াসূচিতে কেমনভাবে বাড়িতি সুযোগ নেওয়া যায় তার জন্য ৬ বছর ধরে পরিকল্পনা করতে হয়েছিল তাদের! তারপর মার্সেইয়ে এক সভায় সেই ষড়যন্ত্রের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল। প্লাতিনি বিশ্বকাপ আয়োজনের মূল দায়িত্বে ছিলেন। ফলে এক পরিকল্পনার তিনি ছিলেন অন্যতম কারিগর।
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ব্রাজিলের পক্ষে ভালো হয়নি। গ্রুপ লিগে স্কটল্যান্ড, মরক্কোকে হারালেও তারা নরওয়ের কাছে হেরেছিল। তা সত্ত্বেও গ্রুপেসেরা হয়েছিল। জিনেদিন জিদানের ফ্রান্স কিন্ত্ত গ্রুপ লিগের তিন ম্যাচে জিতেই সেরা হয়। ফাইনালে নামার আগেই ব্রাজিল ধাক্কা হয়েছিল আচমকা রোনাল্দো অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফাইনালে ব্রাজিল হারে ৩-০ ব্যবধানে। জিদান দুই গোল করেন, এমানুয়েল পেতিত একটা।
প্লাতিনি এমনিতেই বিশ্ব ফুটবলে এখন নির্বাসিত। অর্থনৈতিক দুর্নীতির কারণে তার আট বছর নির্বাসন হয়েছিল ২০১৫ সালে। পরে তা কমে চার বছর হয়। অর্থাৎ, ২০১৯ সালের আগে প্লাতিনি ফুটবলের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারছে না। তার আগে তার এই স্বীকারোক্তি ফিফাকে কিছুটা হলেও চাপে ফেলে দিল। রাশিয়া বিশ্বকাপে এমন কিছু হবে না তো?
No comments:
Post a Comment