নেতাজি রহস্য প্রতিদিন নতুন মোড় নিচ্ছে। গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যে সব ফাইল প্রকাশিত হয়েছে, তার পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা সামনে এনেছেন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। প্রচলিত ধারণা যে, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইওয়ানে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নেতাজির। কিন্তু সদ্য প্রকাশিত ফাইলে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সেই দিনের পরেও তিনটি বার্তা সম্প্রচার করেছিলেন নেতাজি।
সমপ্রচারের এই তথ্য আসে বাংলার গভর্নর হাউজ থেকে। পি সি কর নামের এক সরকারি কর্মচারীর নাম উল্লেখ রয়েছে এই ফাইলে যিনি দাবি করেছেন একটি মনিটরিং সার্ভিস ৩১ মিটার ব্যান্ডে ওই তিনটি সমপ্রচার ধরেছিলেন। সেই কথা তিনি জানিয়েছিলেন তত্কালীন গভর্নর আর জি ক্যাসেকে। তার মধ্যে প্রথম সমপ্রচারটি করা হয়েছেল ১৯৪৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর। সেটিতে যে বার্তা নেতাজি পাঠিয়েছিলেন, তাতে ছিল ‘এই মুহূর্তে আমি বিশ্বের শক্তিশালী ক্ষমতার আশ্রয়ে আছি। কিন্তু ভারতের জন্য আমার মন বড়ই উতলা হয়ে রয়েছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে আমি ভারতে ফিরব। আগামী ১০ বছর বা তারও আগে সেই দিন আসতে পারে। তখন আমি সেই সব মানুষের বিচার করব যারা লাল কেল্লা থেকে আমার দেশবাসীর উপর অত্যাচার চালাচ্ছে।’
দ্বিতীয় সমপ্রচারটি এসেছিল ১৯৪৬ সালের ১ জানুয়ারি। তাতে নেতাজির বার্তা ছিল, ‘আগামী ২ বছরের মধ্যেই আমাদের স্বাধীনতা পেতে হবে। ব্রিটিশদের ক্ষমতা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। সময় এসে গেছে এবার তারা ভারতকে স্বাধীন করে এ দেশ ছেড়ে চলে যাক। অহিংসার পথে কোনোদিন স্বাধীনতা আসবে না। তবে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি আমার সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে।’
তৃতীয় বার্তাটি আসে ১৯৪৬ সালেরই ফেব্রুয়ারি মাসে। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি সুভাষ চন্দ্র বোস বলছি। জয় হিন্দ। জাপানের আত্মসমর্পণের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার আমি আমাদের দেশের ভাই বোনদের উদ্দেশে কথা বলছি... ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিস্টার পেথিক লরেন্স এবং আরও দু’জন সদস্যকে দেশে পাঠাচ্ছেন। তবে তাদের কোনো মহত্ উদ্দেশ্য নেই। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য কীভাবে আজীবন ভারতকে শোষণ করা যায়।’
No comments:
Post a Comment