ইসলামিক স্টেট (আইএস) নামধারী জঙ্গিগোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে লিবিয়ায় বিমান হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। লিবিয়ার জাতিসংঘ-সমর্থিত সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার আইএসের শক্তিকেন্দ্র বন্দর শহর সির্তের জঙ্গি অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে হামলাগুলো চালানো হয়। এসব হামলায় আইএসের 'ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে বলে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে জানিয়েছেন লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ সাররাজ।
এই বিমান হামলাই প্রথম ঘটনা যার ক্ষেত্রে লিবিয়ার ঐক্যমত্যের সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশটিতে হস্তক্ষেপ করল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বরে লিবিয়ায় আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে দুবার হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। লিবিয়ায় আইএসের ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে পশ্চিমা শক্তিগুলো।
এক বিবৃতিতে পেন্টাগন (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অনুমোদন নিয়ে আইএসের সঙ্গে লড়াইরত লিবীয় সরকারি বাহিনীকে সহায়তা করতে হামলাগুলো চালানো হয়। এতে আরো বলা হয়, 'এই পদক্ষেপ এবং এর আগে নেওয়া পদক্ষেপগুলো আইএসআইএলকে (আইএস) লিবিয়ায় নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলতে বাধা দিবে, যে আশ্রয় থেকে গোষ্ঠীটি যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের মিত্রদের ওপর হামলা চালাতে পারে।'
পেন্টাগনের মুখপাত্র পিটার কুক বলেছেন, 'গত কিছুদিন ধরে লিবীয় প্রশাসনের জানানো অনুরোধে সাড়া দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এসব হামলা চালানো হয়েছে, এসব লক্ষ্যের মধ্যে একটি ট্যাঙ্কও আছে।'
এই হামলার মাধ্যমে সির্তেতে আইএস গোষ্ঠীর সামরিক সক্ষমতা হ্রাস করতে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধারাবাহিক বিমান অভিযান শুরু করলো এমন একটি ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। মে মাস থেকে সির্ত শহরে আইএসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে লিবীয় সরকারি বাহিনী। তারপর থেকে শহরটিতে জঙ্গিগোষ্ঠীটির অবস্থান দুর্বল হতে থাকে। তবে লিবীয় সরকারের পক্ষে যে সব সশস্ত্র দলগুলো আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আছে, দিন দিন তাদের পক্ষেও নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।
২০১১ সালে নিহত সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মাম গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া ক্রমাগত বিভিন্ন দল-উপদলের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ও পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনীগুলো এলাকা দখল ও নিজ নিজ প্রভাব বৃদ্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে। বিশৃঙ্খল এসব পরিস্থিতি লিবিয়াকে ভঙ্গুর করে তোলে, যার সুযোগে আইএস যোদ্ধারা, যাদের অনেকেই সিরিয়া থেকে এসেছে, দেশটিতে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে। বিবিসি।
No comments:
Post a Comment