Social Icons

Tuesday, February 7, 2017

কবর থেকে নায়িকা অন্তরার দেহাবশেষ উত্তোলন

মৃত্যুর তিন বছর পর আদালতের নির্দেশে চিত্রনায়িকা পারভীন আক্তার অন্তরার দেহাবশেষ তোলা হয়েছে কবর থেকে। ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা আজিমপুর কবরস্থান থেকে ওই দেহাবশেষ তোলেন।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, ‘আজ দুপুরে তার দেহাবশেষ ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠঅনো হয়। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে আমরা আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব। মূল ঘটনা তদন্তের পর জানা যাবে।’
২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি রাজধানীর মনোয়ারা হাসপাতালে মারা যান অন্তরা। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয় বলে তখন জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে অন্তরার পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ করা হয় অন্তরার স্বামী শফিকুল ইসলাম খোকন মিয়ার বিরুদ্ধে।
অন্তরার মা আমেনা খাতুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগে পিটিশন মামলা করেন। গত ১২ জানুয়ারি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (দশম) আদালতের বিচারক অন্তরার লাশ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দেন। ময়নাতদন্ত শেষে ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্তরা চাঁদপুর জেলা সদরের চরপুয়া গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে।
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন পারভীন আক্তার অন্তরা। ‘পাগল মন’, ‘প্রেমের কসম’, ‘লেডি র‌্যাম্বো’ ‘শয়তান মানুষ’, ‘নাগ-নাগিনীর প্রেম’সহ বিভিন্ন  দর্শকপ্রিয় ছবির এই নায়িকা বাস্তবে প্রেমে পড়েছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা উত্তরপাড়ার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম খোকন মিয়ার। গাজীপুরে শুটিং করতে গিয়েই তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান অন্তরা। কিন্তু বিধিবাম। বিয়ের পর অন্তরা জানতে পারেন তিনি খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রী। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ।
অন্তরারও আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। অপ্সরি নামে তার একটি কন্যাসন্তান রয়েছে সেই সংসারে। আর খোকনের আগের সংসারে ছিল পাঁচ সন্তান। রাজধানীর রমনা এলাকার আড়ং প্লাজার নবম তলার একটি ফ্ল্যাটে সংসার শুরু করেন খোকন-অন্তরা। কিন্তু বনিবনা হচ্ছিল না দুজনের। এর মধ্যেই আইয়ান ইসলাম অর্থ নামে এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয় এই দম্পতির। এ অবস্থাতেই অন্তরাকে গাজীপুরে নিতে চাপ দেন খোকন। সতিনের সংসারে যাবেন না অন্তরা। এ নিয়ে গাজীপুরে আদালতে শরণাপন্ন হন খোকন।
একপর্যায়ে আপোষের জন্য স্ত্রী অন্তরার বাসায় আসা-যাওয়া শুরু করেন খোকন। তারপরই ঘটে নির্মম ঘটনাটি।  দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি। ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটায় অন্তরার বাসায় যান খোকন। অন্তরার মেয়ে অপ্সরি জান্নাত, অন্তরার ভাই সাজ্জাদ হোসেন রনি ও এক গৃহকর্মী তখন বাসায়। তারা জানান, খোকন বাসায় ঢুকেই অন্তরার কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পর দুজনের ঝগড়ার শব্দ। চিৎকার করে কথা বলছিলেন অন্তরা ও খোকন। প্রায় দুই ঘণ্টা পরে বাসা থেকে দ্রুত বের হয়ে যান খোকন। ওই সময়ে অন্তরার কক্ষে ঢুকে তাকে অচেতন অবস্থায় পান অপ্সরি ও সাজ্জাদ।
খবর পেয়ে অন্তরার মা আমেনা খাতুনসহ স্বজনরা ওই বাসায় ছুটে যান। তারা অন্তরাকে ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। কিন্তু খোকন সেখান থেকে অনেকটা জোর করে অন্তরাকে সিদ্ধেশ্বরীর মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন বলে পরিবারের দাবি।
অন্তরার পরিবার জানায়, মনোয়ারায় গোবিন্দ বণিক নামে খোকনের এক ঘনিষ্ঠ ডাক্তার রয়েছেন। ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মারা যান অন্তরা। ২ জানুয়ারি থেকে ওই দিন পর্যন্ত অন্তরার মাসহ কাউকেই অন্তরার কাছে যেতে দেয়া হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। এমনকি অন্তরার মৃত্যুর পর ডাক্তারের চিকিৎসাপত্রও দেখতে দেয়া হয়নি তাদের। তাদের জানানো হয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
অন্তরার মার ভাষায়, খোকন-অন্তরার সন্তান অর্থকে গাজীপুরে নিয়ে গেলে সেখানে সৎমায়ের নানা অত্যাচারের  শিকার হয় শিশুটি। এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে অর্থকে আদালত আমেনা খাতুনের হেফাজতে দেন। এ নিয়ে ২০১৫ সালের ৫ মার্চ বাসায় গিয়ে আমেনাকে হুমকি দেন খোকন। খোকন বলেছিল ‘তোর মেয়েকে শেষ করেছি। এবার তোদেরও শেষ করে দেব’। তারপরই ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগে পিটিশন মামলা করেন আমেনা খাতুন।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates