Social Icons

Tuesday, May 9, 2017

বনানীতে ধর্ষণ: পাসপোর্টসহ লাপাত্তা সাফাত

রাজধানীর বনানীতে এক হোটেলে আটকে দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ তার পাসপোর্টসহ লাপাত্তা হয়ে গেছেন।

সাফাত সোমবারও গুলশান-২ এর ৬২ নম্বর রোডের এন ডব্লিউ (সি) হোল্ডিংয়ের নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

কিন্তু মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার বাড়িটিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সেখানে তাকে আর খুঁজে পায়নি। এ সময় বাড়িতে তার পাসপোর্টও পাওয়া যায়নি বলে  জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বনানী থানার এক কর্মকর্তা।

সাফাতের বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম জানিয়েছেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত তার ছেলে পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে অবস্থান করছিল। এরপর থেকে তার খোঁজ নেই, কোথায় আছে তারা তা জানেন না।

মঙ্গলবার সাফাতের বাড়িতে ১০-১৫ জন পুলিশ অভিযান চালায় বলে জানান গুলশান জোনের এডিসি আবদুল আহাদ।

দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল মতিন জানান, বাড়িতে অভিযানকালে সেখানে সাফাতকে পাওয়া যায়নি।

পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বাড়িটি থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছে বলেও জানান তদন্ত কমর্কর্তা।

উল্লেখ্য, বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে গত শনিবার রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হল- সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, তাদের গাড়ি চালক বিল্লাল ও সাফাতের দেহরক্ষী (নাম অজ্ঞাত)।

মামলার এক নম্বর আসামি সাফাত আহমেদের বাবার নাম দিলদার আহমেদ সেলিম। তিনি দেশের শীর্ষ স্থানীয় স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্সের মালিক।

দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। তিনি রাজধানীর মিরপুর এলাকায় থাকেন বলে জানা গেছে।

মামলার তিন নম্বর আসামি সাদমান সাকিফের বাবার নাম মোহাম্মদ ওরফে জনি। তিনি রাজধানীর তেজগাঁও লিংক রোডে অবস্থিত রেহনাম রেগনাম সেন্টারের মালিক।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন ২৯ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত তার এক বান্ধবী ও দুই ছেলে বন্ধুকে গুলশানের রেইনট্রি নামের একটি হোটেলে অস্ত্রের মুখে আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে তাকে ও তার বান্ধবীকে আসামিরা জোর করে হোটেলের রুমে নিয়ে যায়।

সেখানে তাদের মদ পান করানোর পর এক নম্বর আসামি সাফাত আহমেদ তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর বান্ধবীকেও একাধিকবার ধর্ষণ করে দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ।

এজাহারে আরও বলা হয়, তিন নম্বর আসামি সাদমান সাকিফকে তারা গত দুই বছর ধরে চিনতেন। তার মাধ্যমেই এক ও দুই নম্বর আসামির সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। ২৮ মার্চ এক নম্বর আসামির জন্মদিন উপলক্ষে সাদমান সাকিফ তাদের দাওয়াত দেন। অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য তাদের কাছে গাড়ি চালক বিল্লাল ও বডিগার্ড পাঠানো হয়। ওই গাড়িতে তারা গুলশানের রেইনট্রি হোটেলে যান।

অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাদের বলা হয়েছিল, হোটেলের ছাদে অনেক বড় অনুষ্ঠান হবে। সেখানে অনেক লোকজন থাকবে। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিন্ন দৃশ্য দেখেন। তারা সেখানে রুম পার্টির আয়োজন দেখতে পান। তাছাড়া হোটেলে গিয়ে তারা আরও দুই তরুণীকে দেখতে পান।

এজাহারে বলা হয়, ওই দুই তরুণীকে নিয়ে সাফাত ও নাঈম বার বার হোটেলের ছাদ থেকে নিচে নেমে যাচ্ছিলেন। এসব দেখে অনুষ্ঠানের পরিস্থিতি ভালো মনে হয়নি তাদের।

একপর্যায়ে সেখান থেকে তারা চলে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। এতে আসামিরা তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। আসামি সাফাত ও নাঈম তাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। তাদের বেদম মারধর করা হয়।

একপর্যায়ে দুই তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসামিরা। শুধু তাই নয়। ধর্ষণের সময় এক নম্বর আসামি সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লালকে দিয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়।

হোটেলে নির্যাতিত হওয়ার পর ঘটনা গোপন রাখার জন্য তাদের ওপর চাপ দেয়া হয়। বিশেষ করে সাফাত তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতির মধ্যে রাখে।
এ কারণে তাদের মামলা করতে দেরি হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
 

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates