Social Icons

Wednesday, November 1, 2017

কেন এতো বিচ্ছেদ ?

সংসার অনেক সুন্দর একটা জায়গা। যদি এখানে থাকে বিশ্বাস, ভালোবাসা আর একে অপরকে  ছাড় দেয়ার মানসিকতা। কিন্তু দেশ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সম্পর্কগুলোও কেমন যেন জটিল থেকে জটিলতর আকার ধারণ করছে। আগেকার দিনে সংসার ছিল পুরুষ প্রধান।
তখন নারীরা নিরবে সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার করত। কারণ তারা আর্থিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী ছিল না।  কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে কেউ যেন কাউকে এক চুলও ছাড় দিতে চায় না। 
এখন আগের তুলনায় নারী শিক্ষার হার বেশি এবং তারা আর্থিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। 
বিবাহ বিচ্ছেদ আসলেই একটা যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার। তবে এমন অনেক সময় আসে যখন বিবাহ বিচ্ছেদটা একান্ত অপরিহার্য হয়ে উঠে। এই সময় একে অপরের ওপর বিশ্বাস ভালোবাসা কিছুই থাকে না।
  • বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে একতরফাভাবে শুধুমাত্র মেয়েরা দায়ী নয়। এখানে উভয়ে সমানভাবে দায়ী। একটা সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে গেলে যেমন একজনের দ্বারা সম্ভব না, তেমনি একজনের কারণে একটা সম্পর্ক ভেঙেও যায় না। একটা কথা প্রচলিত আছে এক হাতে তালি বাজে না। তেমনি সমস্যাও একদিনে সৃষ্টি হয় না। অনেক দিনের ক্ষোভ, অভিমান, রাগ, দুঃখ মিলে সম্পর্কে ফাটল ধরে। আর এর জন্য বিবাহ নামক পবিত্র বন্ধন ছিন্ন করে মানুষ বিচ্ছেদের কথা চিন্তা করে। তবে বিচ্ছেদ কখনোই কোনো ভালো সমাধান হতে পারে না।
  • আমরা সবসময় নিজের চোখ দিয়ে অন্যকে দেখার চেষ্টা করি আর ভাবি, আমি যেভাবে চাইছি আমার জীবনসঙ্গী হবে ঠিক আমার মনের মতো। আমি যা কিছু পছন্দ করি সেও তাই করবে, আমার সবকিছুকে সে নিজের করে নেবে, সে হবে আমার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ। কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে অনেক পার্থক্য। কল্পনায় অনেক সময় আমরা অনেক কিছু ভাবতে পারি, কিন্তু বাস্তবে তার সবটা সম্ভব হয় না। এখানে প্রত্যেকটা মানুষের চাল-চলন, আচার-আচরণ একেক রকম। কেউ আসলে কারো মতো হয় না। তবে হয়তো আপনি যদি বিয়ের পর থেকে আপনার জীবনসঙ্গীকে আপনার পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে একটা ধারণা দেন তাহলে হয়তো বোঝাপড়াটা অনেক ভালো হবে।
  • অনেক সময় দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক এমন একটা পর্যায়ে যায় যখন একসঙ্গে থাকার আর কোনো পথই খোলা থাকে না। তখন একে অপরের শুধু দোষ খোঁজা ছাড়া আর কিছুই করে না। সেই সময় বিবাহ বিচ্ছেদ জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু এই বিচ্ছেদ বেশিরভাগ সময় হয় সন্তান হওয়ার পরে। আর তখনই শুরু হয় সন্তানকে নিয়ে টানাটানি। আর আমরা চিন্তা করেও দেখি না বাবা-মায়ের বিচ্ছেদে সন্তান কতটা অসহায় অবস্থায় থাকে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, সন্তান বাবা-মা দুজনকে একসঙ্গে কাছে পেতে চায়। শুধুমাত্র সন্তানের ভালো দিকটা বিবেচনা করেও অনেক মানুষ মুখ বুজে সংসার করে চলেছে।
  • দেখা যায় স্বামী এমনভাবে অত্যাচার করছে কিংবা তার চারিত্রিক কিছুটা ত্রুটি আছে অথবা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিচ্ছে। আবার স্ত্রী যদি হয় স্বার্থপর মনোভাবের এবং স্বামীর বাবা-মাকে সে কোনোভাবেই মানতে চাইছে না তাহলে এই সব পারস্পরিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মানুষ একপর্যায়ে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সমস্যা যাই থাকুক না কেন, তার সমাধানের পথও কিন্তু আছে। আমরা যদি কিছু ব্যাপারে একে অপরকে ছাড় দেই তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমবে। সবাই একটা কথা হলফ করে বলা শুরু করেছে, প্রেমের বিয়েতেই শুধু বিচ্ছেদের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। কারণ প্রেমের বিয়েতে অধিকাংশ সময় ছেলেমেয়েদের বয়স সমান থাকে এবং তাদের একে অপরের কাছে চাহিদাটাও বেশি থাকে। তাদের সবসময় ধারণা, বিয়ের পরের দিনগুলোও হবে সবসময় সুখের। কিন্তু সংসার আর প্রেম সম্পূর্ণ আলাদা। মূলত একে অপরের কাছ থেকে বেশি চাহিদার কারণে এই বিয়েতে সবচেয়ে সমস্যা হয়।
  • প্রেমের বিয়েতে বুদ্ধি বিবেচনা না করে মানুষ এমন একটা জায়গায় বিয়ে করে যে আবেগ থেকে বেরিয়ে বাস্তবতায় মানাতে পারে না। আর পারিবারিক বিয়ের বেলায় অনেক সময় আমরা পাত্র-পাত্রীর নাম যশ প্রভাব প্রতিপত্তি আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সাবধানতার সঙ্গে কাজ করি। কিন্তু পরবর্তীতে অতি লোভের বশবর্তী হয়ে কাঙ্ক্ষিত জিনিস না পেলে সম্পর্কে ফাটল ধরে।
  • তবে পারিবারিক বিয়েতেও যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় না তা কিন্তু নয়। পারিবারিক বিয়েগুলো অধিকাংশ সময় স্বার্থের বেড়াজালে বন্দী হয়ে যায়। লোভের বশবর্তী হয়ে বিয়েতে রাজি হয় এমন সম্পর্ক অনেক সময় ভেঙে যায়।
  • সুন্দর ও সুখের পারিবারিক বন্ধনকে অটুট রাখতে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। প্রেমের বিয়ে এবং পারিবারিক দুই বিয়েই টিকবে, যদি আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি। সংসার মানে কিন্তু কিছুটা সমস্যা থাকবে। এটা যদি আমরা খোলামেলাভাবে আলোচনা করি, তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ নামক জটিল সমস্যার কিছুটা সমাধান করা সম্ভব হবে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates