আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। আমার মনে হয় রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির পদটি বেশিদিন খালি (শূন্য) রাখবেন না। তিনি বলেন, সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি যেরূপ দায়িত্ব পালন করেন অনুরূপ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি। তাই এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কোর্সের একটি অধিবেশনে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, একটু পেছনে তাকালে দেখা যাবে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছিলেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতিও হন। তখন একজন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনকালে উনি অ্যাপয়েনমেন্ট দিয়েছেন এবং শপথও পড়িয়েছেন। অতএব অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির শপথ পড়ানোর নজির নেই এটা বলার সুযোগ নেই। এজন্য সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে ‘অনুরূপ’ শব্দটির কথা বলা হয়েছে। একারণে সেটার ওপর জোড় দিতে হবে। ‘অনুরূপ’ মানে হচ্ছে প্রধান বিচারপতির সকল দায়িত্ব অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি পালন করতে পারবেন। সেখানে কিন্তু কোনো বিভাজন করে দেওয়া হয়নি তিনি কি করতে পারবেন কি পারবেন না?
এর আগে প্রশিক্ষণ কোর্সের অধিবেশনে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪, মানি লন্ড্রারিং প্রতিরোধ আইন এবং ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৮ নিয়ে বক্তব্য রাখেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে দুদক আইনটি করা হয়েছিল। তখন দুদকের চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। দুদক আইনানুযায়ী ওই কমিশন সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি। এরপর ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনকে পুন:র্গঠন করা হয়। ওই কমিশন আবার বেশি অ্যাকটিভ হয়ে গেলো এবং ব্যক্তি বিশেষের কাছে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিলো। এরপরই দুদক আইনের বিভিন্ন ধারা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা হতে লাগল। আমার মনে হয় দুদক আইনের ৩৮টির ধারার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ধারা আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে।
তিনি বলেন, যত বেশি চ্যালেঞ্জ হয় তত আইনের শুদ্ধতা বাড়ে। বৃদ্ধি পায় আইনের কার্যকারিতাও। আইনমন্ত্রী বলেন, একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হলেই ছেলে খেলার মত মামলা করা যাবে না। কারণ এরসঙ্গে একজন ব্যক্তির মর্যাদার বিষয়টি জড়িত। এ কারণে দুদক আইনটি করার পরই ওই আইনের অধীনে বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। এর ফলে দুর্নীতির অভিযোগ আসলেই কারও বিরুদ্ধে মামলা হয় না। প্রথমে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধান শেষে এজাহার এবং তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। যাকে তাকে ধরে এনে যাতে বিচার না করা হয় সেটা ঠেকাতেই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সময় প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment