লস এঞ্জেলেসের হাজার হাজার কফিশপ বিশেষ করে স্টারবার্ক, ৭-ইলেভেন এবং স্থানীয় গ্যাস স্টেশনগুলোর গ্রাহকরা সম্ভাব্য ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার উচ্চ আদালতের বিচারক এক প্রাথমিক সিদ্ধান্তে এ তথ্য জানিয়েছে। গত বুধবার এক বিবৃতিতে আদালত বলছে, কোম্পানিগুলো সুস্পষ্ট ঝুঁকির বিকল্প প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি কফি তৈরি কিংবা বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের করে শিক্ষা ও গবেষণার একটি অলাভজনক কাউন্সিল। ২০১০ সালে লস এঞ্জেলেস কান্ট্রি সুপেরিয়র কোর্টে টক্সিনের বিষয়ে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়। ভোক্তাদের সাবধান করার জন্য এই মামলাটি করা হয়। ক্যান্সারের সম্ভাব্য কারণ বিবেচনা করে রাসায়নিকের একটি তালিকা তৈরি করে ক্যালিফোর্নিয়া। এগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাক্রিলামাইড, যা কফি বীজ প্রক্রিয়া করার সময় তৈরি হয়। এই উচ্চ মাত্রার রাসায়নিকটি কফিতেই বিদ্যমান থাকে বলে জানিয়েছে আদালত। অ্যাটর্নি রাফেল মিটজার বলেন, এটা এখনও একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না, কিন্তু আমি মনে করি এটা একটি বড় খবর। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো অগ্রগতি।
আদালতের প্রাথমিক নথিপত্র এটাই বলে যে, ক্যালিফোর্নিয়ার পানীয় জল নিরাপদ এবং ১৯৮৬ এর বিষাক্ত প্রয়োগিকরণ আইন, যেটি প্রস্তাব ৬৫ হিসেবেও পরিচিত, এর অধীনে ব্যবসায়ীদের অবশ্যই গ্রাহকদের এই রাসায়নিক উচ্চ স্তরের উপস্থিতি সম্পর্কে একটি ‘পরিষ্কার এবং যুক্তিসঙ্গত সতর্কবার্তা’ দিতে হবে। তাদের এটা বলতে হবে যে, এই পাণীয় পানে গ্রাহকদের স্বাস্থ্যে কী ধরণের প্রভাব পড়তে পারে। কফি কোম্পানি আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে যে, কফিতে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা আইন অনুযায়ী সুরক্ষিত রয়েছে এবং তা স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকি নয়। তবে আদালত এ ব্যাপারে একমত হয়নি।
মিটজারের মতে, অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭-ইলেভেনসহ কমপক্ষে ১৩টি কোম্পানি সতর্কবার্তা দিতে সম্মত হয়। স্টারবাকসহ অন্য কফি কোম্পানিগুলো আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছিল। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন মিটজার। ইমেইলে দেওয়া এক বিবৃতিতে ন্যাশনাল কফি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও উইলিয়াম মুরে বলেছেন, স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কফি সবসময় পরিচিত। তাই কফি নিয়ে প্রস্তাব ৬৫-এর আইনটি উপহাসের সৃষ্টি করেছে, যা ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করেছে।
অনেক বছর ধরে কফি নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, এটি বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে, যার মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি কম রয়েছে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। একই সঙ্গে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, আলঝেইমার এবং এমনকি কিছু ক্যান্সার যেমন- মেলানোমা এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। কফিতে অ্যাক্রিলামাইড নামে কোন রাসায়নিকের উপস্থিতি নেই বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে।
No comments:
Post a Comment