বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বের করা স্মরণিকার ১৯ নম্বর পৃষ্ঠায় এ তথ্য উল্লেখ করেছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। এই স্মরণিকায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৫ বছর উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব রেজাউর রহমান ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন।
সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বিবরণীতে জিয়া হলের বর্ণনায় তিনি লেখেন, 'জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযু্দ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং ১৯৮১ সালের ৩০ মে সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।'
এতে আরও লেখা হয়, 'তাঁর (জিয়াউর রহমান) স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য ১ জুন ১৯৮৮ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের যাত্রা শুরু। উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান হলটি উদ্বোধন করেন। ড. রহিম বক্স তালুকদার হলে প্রভোস্ট ডাইরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের সেরা বিদ্যাপীঠের একটি বিশেষ দিবসের লেখনীতে এমন ভুল তথ্য উপস্থাপন করায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ঘটনায় তারা শুক্রবার দুপুরে রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ঘেরাও করে। এ সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে তার কার্যালয়ে প্রায় এক ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখেন ছাত্রলীগের নেতারা। দুপুর ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত তালাবন্দি করে রাখা হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউর রহমানকে তালামুক্ত করে বের করে নিয়ে যান।
এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মেহেদী হাসান রনি এবং আদিত্য নন্দীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় ছাত্রলীগের অগ্নিসংযোগ
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন ও শোভাযাত্রা শেষে টিএসসিতে এক আলোচনা সভায় বিষয়টি উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইয়ের এক সদস্য।
পরে ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক স্মরণিকাটি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন এবং সেটি প্রকাশে গঠিত কমিটিও বাতিল ঘোষণা করেন।
এছাড়া স্মরণিকার ১৩ নং পৃষ্ঠায় জগন্নাথ হলের বর্ণনায় লেখা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তথা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং উপজাতি ছাত্রদের জন্য এই হল প্রতিষ্ঠিত।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment