বিবিসি তাদের নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই করবিনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন অ্যাঙ্গেলা ইগল। ব্রেক্সিট বলে পরিচিতি পাওয়া ব্রিটেনের গণভোটের 'লিভ' পক্ষের জয়ের পর গত রোববার লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিসভার যে ২০ জন সদস্য পদত্যাগ করেন, ইগল তাদের একজন। ওই গণপদত্যাগের ঘটনাই জেরেমি করবিনের বিরুদ্ধে এমপিদের অনাস্থা ভোট দেয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দেয়।
গত মঙ্গলবার লেবার এমপিদের ভোটে করবিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয় ১৭২-৪০ ভোটে। তবে ওই ভোটের 'সাংবিধানিক বৈধতা' নেই জানিয়ে পদত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন করবিন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ৬০ শতাংশ পার্টি মেম্বারের ভোটে তিনি নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না তিনি।
এর আগে বুধবার পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, করবিনের লেবার পার্টির নেতৃত্বে থাকাটা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তিনি বলেন, 'তার থাকাটা আমার দলের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট হতে পারে, জাতীয় স্বার্থে নয়। তাই ঈশ্বরের দোহাই, আপনি সরে যান।' ক্যামেরনের এমন মন্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দুই দলের এমপিরা।
এদিকে সমর্থকরাও যে করবিনকে ছেড়ে কথা বলছেন, তা নয়। অনেক সমর্থকই তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছেন। যেমনটি ঘটেছে, লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের সামনে। সমর্থকরা সেখানে করবিনকে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, 'ইউরোপের কী হবে? আমাদের যখন প্রয়োজন ছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন?'
এ রকম প্রেক্ষাপটেই অ্যাঙ্গেলা ইগল, করবিনের নেতৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে যাচ্ছেন। লেবার পার্টির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নেতার দর্শনে যে বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে তার সমাধান এখন একমাত্র ভোটাভুটির মাধ্যমেই হতে পারে। উল্লেখ্য, করবিনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে যে ৫১ জন এমপির সমর্থন প্রয়োজন, সেটি রয়েছে ইগলের। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জে করবিন সরাসরি অংশ নিতে পারবেন, নাকি তারও ৫১ জন এমপির সমর্থন লাগবে, সেটি নিয়ে এখনো জল্পনা চলছে।
তবে প্রত্যক্ষভাবে কোনো অবস্থান না নিলেও লেবার পার্টির সদস্য এবং লন্ডনের মেয়র সাদিক খান আস্থা জানিয়েছেন, তিনি করবিনের পক্ষেই। করবিনের দলীয় প্রধানের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন। তার আশঙ্কা, দলের মধ্যকার সাম্প্রতিক বিভক্তির কারণে লেবাররা আসন্ন নির্বাচনে পরাজিত হতে পারে। নেতৃত্বের এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে তিনি নিজে কোনোভাবেই নেতৃত্বের লড়াইয়ে নামবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment