Social Icons

Wednesday, August 24, 2016

অলিম্পিক কতটা বদলে দেবে ব্রাজিলকে

সাত বছর আগে অলিম্পিক আয়োজনের লড়াইয়ে রিও ডি জেনিরো জিতেছিল বিশাল ব্যবধানে। শেষ রাউন্ডে স্পেনের মাদ্রিদকে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে হারানোর পর আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন ব্রাজিলের সেই সময়ের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ব্রাজিলকে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর সারিতে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ব্রাজিলের যে সুসময় আসছে, আজ সারা পৃথিবী তার স্বীকৃতি দিয়েছে।’ অলিম্পিকের সৌজন্যে ব্রাজিলে সুশাসন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিলেন তিনি।
২০০৯ সালে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বিশেষ সভায় বলা লুলা দা সিলভার সেই কথাগুলো এখন ফাঁকা বুলি বলে মনে হতে পারে অনেক ব্রাজিলিয়ানের। ব্রাজিলের বহু মানুষের মনে আজ স্বস্তি নেই।  রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশটি।

অবশ্য এসব সমস্যা নিয়েও অলিম্পিক মোটামুটি ভালোভাবেই আয়োজন করেছে ব্রাজিল। সবচেয়ে বড় সাফল্য, অলিম্পিক চলার সময় কোনো সন্ত্রাসী হামলা হয়নি। ৮৫ হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে গড়া বিশাল বাহিনী নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে রেখেছিল গেমস ভিলেজকে। ছোটখাট কিছু অপরাধ আর অঘটন অবশ্য ঠেকানো যায়নি।
বছর দুয়েক আগে আইওসির একজন সিনিয়র সদস্য জানিয়েছিলেন, অলিম্পিক আয়োজনের জন্য ব্রাজিলের মতো এত খারাপ প্রস্তুতি তিনি আর দেখেননি। রিও ডি জেনিরো ঠিকমতো অলিম্পিক আয়োজন করতে পারবে কিনা, সেই শঙ্কা অবশ্য তার আগেই দেখা দিয়েছিল। তবে অলিম্পিক পার্কের ভেতর দিয়ে নতুন মেট্রো লাইন নির্মাণসহ অনেক কাজ শেষ হয়েছে যথাসময়ে। সব মিলিয়ে আয়োজনের দিক দিয়ে রিও অলিম্পিককে সফল বলতেই হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অলিম্পিকের রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে একটি বইয়ের লেখক জুলস বয়কফের এনিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তাঁর মনে একটা ‘কিন্তু’ও আছে রিও অলিম্পিক নিয়ে, ‘এটা ঠিক যে কোনো বড় ধরনের বিপর্যয় ছাড়া সফলভাবেই অলিম্পিক সম্পন্ন হয়েছে। তবে রিওর সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে ধরলে এই অলিম্পিককে সফল বলা যাবে না। বিশাল এক সুযোগের অপচয় হয়েছে।’

গত শতাব্দীর তিরিশের দশকের পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। অথচ অলিম্পিক আয়োজনে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে দেশটিকে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞর ধারণা, অংকটা ১২০০ কোটি ডলারেরও বেশি। এই বিশাল ব্যয়ের একটা বড় অংশ বহন করতে হচ্ছে জনগণকেই।

২৫ বছর বয়সী ছাত্রী লুসিয়ান কাব্রালের মনে তাই অলিম্পিক নিয়ে মিশ্র অনুভূতি, ‘অলিম্পিকের অবকাঠামো নির্মাণে মোট কত খরচ হয়েছে আমরা তা জানি না। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমি বলতে চাই না যে পুরো আয়োজন ব্যর্থ ছিল। তবে এমন অনেক কিছু ছিল যা ভালো হতে পারত।’

গত রোববার মারাকানা স্টেডিয়ামে যখন সমাপণী অনুষ্ঠান চলছিল, তখন রিওর অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। রাতের অন্ধকারে আতশবাজির আলোর রোশনাই দেখে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হয়েছিল শহরটির অনেক নাগরিককে। অলিম্পিক তাঁদের জীবন থেকে অন্ধকার দূর করবে, নাকি আরো দুর্দশা ডেকে আনবে তার উত্তর বোধহয় শুধু সময়ই দিতে পারবে!

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates