Social Icons

Saturday, August 20, 2016

কাশ্মিরে এক মাসে সাড়ে ১৩ লাখ ছররা ব্যবহার

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সাম্প্রতিক অস্থিরতা সামলাতে চলতি মাসে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ ছররা ব্যবহার করেছে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী । একই সময়ের মধ্যে সাড়ে আট হাজার কাঁদুনে গ্যাসও নিক্ষেপ করেছে তারা।
 
আধা সামরিক বাহিনীর ছোঁড়া ছররা গুলি বা কাঁদানে গ্যাসে ৬৬ জন মারা গেছেন, বহু মানুষ আহত হয়েছেন, অনেকে অন্ধ হয়ে গেছেন।
 
আদালতে দায়ের করা এক মামলার জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী নিজেরাই এই হিসাব দিয়ে বলেছে ছররা বন্দুক ব্যবহার না করে যদি তারা গুলি ব্যবহার কর, তাতে অনেক বেশী মৃত্যু হতে পারত।
 
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে উগ্রপন্থী কমান্ডার বুরহান ওয়ানির নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলিতে মৃত্যুর পর থেকেই সেখানে চলছে ব্যাপক বিক্ষোভ। ওই বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশ আর অর্ধ সৈনিক বাহিনীগুলি ব্যাপকহারে ছররা গুলি ব্যবহার করেছিল।
 
৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত ৬৬ জন মারা গেছেন। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলি বলছে সবথেকে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ছররা গুলিতে। আদালতে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে তারা ১১ অগাস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ শুরুর ৩৪ তম দিন পর্যন্ত তিন হাজার ছররা গুলির কার্তুজ ছুঁড়েছে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তেরো লক্ষ ছররা ছোঁড়া হয়েছে।
 
ওই একই সময়ে সাড়ে আট হাজার কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়া হয়েছে। কাশ্মীরের হাসপাতাল প্রশাসন বলছে এখনও পর্যন্ত ছররায় আহত ৬০০ মানুষের অপারেশন করা হয়েছে যাদের মধ্যে ১১২ জনের চোখে ছররা লেগেছে। আহতদের অনেকের পরিবার বলছে অপারেশনের পরেও আহতরা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না।
 
চিকিৎসকেরা বলছেন অনেক ক্ষেত্রেই ছররা গুলি বন্দুকের গুলির থেকেও মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
 
রাজা হরি সিং হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ড. জাভেদ বিবিসিকে বলছিলেন, গুলির আঘাত শুধু মাত্র একটি-ই হয়, কিন্তু ছররা মানুষের শরীরে একই সঙ্গে অনেকগুলি আঘাত বা ছিদ্র তৈরি করে দেয়। অপারেশনের সময়ে দেহে থেকে যাওয়া সবগুলি ছররার সন্ধান পাওয়াও কঠিন। এর ফলে আহতের মৃত্যুও হতে পারে।
গত মাসে ভারত শাসিত কাশ্মীরে এক সফরে এসে ঘোষণা করেছিলেন যে ছররা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাহিনীগুলিকে সংযত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছররা কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠিত হয়েছে।
 
তবে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর এক মুখপাত্র রাজেশ যাদব বলছেন, পরিস্থিতি এমনিই হয়ে গেছে কেউ পাথর ছুঁড়ছে, কেউ পেট্রল বোমা ছুঁড়ছে, আবার অনেক জায়গায় তো গ্রেনেডও ছোঁড়া হয়েছে বিক্ষোভকারীদের দিক থেকে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন যদি বাহিনীর সদস্যদের বলতে হয় সংযত হওয়ার কথা তাতে তো বাহিনীর মনোবলই ভেঙ্গে যাবে। সব কিছুর তো একটা সীমা থাকে।
 
একসময়ে শিকার করার জন্য এধরণের ছররা গুলি ব্যবহার করা হত। ছোট ছোট ধাতব বলের ভেতরে বারুদ ভরে তারপরে প্লাস্টিকের আচ্ছাদন দিয়ে একেকটি ছররা তৈরি হয়। একেকটি কার্তুজে সাড়ে চারশো ছররা থাকে – যেটা বন্দুক থেকে ছোঁড়া হলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীদের আহত করে।
এই একই ছররা বিএসএফও বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যবহার করছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে। মারণাস্ত্রের ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে এই ছররা বন্দুক দেওয়া হচ্ছে সীমান্ত রক্ষীদের। এই ছররা গুলিতেও সীমান্তে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন গত কয়েকবছরে – যাদের বেশীরভাগকেই বি এস এফ চোরাচালানকারী বলে অভিহিত করে। বিবিসি

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates