বুলন্দশহর ধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের তিন মাসের মধ্যে শাস্তি না হলে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দিল নির্যাতিতার পরিবার।
গত শুক্রবারের ভয়াবহ রাতের পর জীবনটাই যেন বদলে গেছে নয়ডার ওই পরিবারটির।
ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেছে। এখনও অভিযুক্তদের সবাইকে ধরতে পারেনি পুলিশ। একাধিক পুলিশ কর্তাকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি তিন অভিযুক্তকে ধরেছে পুলিশ। তবে পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় নির্যাতিতার পরিবার। নির্যাতিতার বাবা পেশায় ট্যাক্সিচালক।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, আমাদের পেটানো হয়েছে, লুঠপাট চালানো হয়েছে আর সবাই জানেন আমার মেয়ের ওপর কী পাশবিক অত্যাচার করেছে দুষ্কৃতীকারীরা... আমি চাই আমার স্ত্রী-মেয়ে ওদের শাস্তি দিক।
এর পরেই তার হুঁশিয়ারি, আগামী তিন মাসের মধ্যে ওই অপরাধীদের শাস্তি না হলে আমরা তিন জনই আত্মহত্যা করব।
গত শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের কাছে ৯১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তিন ঘণ্টা ধরে মা-মেয়েকে গণধর্ষণ করে লুঠপাট চালায় সাত-আট জন দুষ্কৃতীকারী। ওই ঘটনায় তোপের মুখে পড়ে অখিলেশ যাদবের সরকার।
সংসদেও এ নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সমালোচনায় বিঁধতে কসুর করেনি বিরোধীরা। সংসদে অখিলেশ যাদবের পদত্যাগের দাবিও করে বিজেপি।
ওই দিন শাহজাহানপুরে এক আত্মীয়ের অন্ত্যেষ্টিকাজে যোগ দিতে যাচ্ছিল নয়ডার ওই পরিবার। বুলন্দশহর বাইপাসের কাছে হঠাৎ গাড়িতে লোহার রড এসে লাগে।
চালক গাড়িটি থামাতেই সেটি ঘিরে ধরে জনা আটেক লম্পট। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আরোহীদের টাকা, মোবাইল, গয়না কেড়ে নেয়। কিন্ত এতেই শেষ নয়।
ঘটনার রাতের বিবরণ দিতে গিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, সে রাতে ওরা সাত-আট জন ছিল। পুরুষদের সবাইকে একটি খোলা মাঠে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে দেয় ওরা। এর পর শুরু হয় বেধড়ক মার। এমনকী পানি চাইলে বা একটু নড়াচড়া করলেও মার খেতে হয়েছে।
মার খেতে খেতেই তিনি দেখেছিলেন তার স্ত্রী-মেয়ে এবং শ্যালিকাকে টেনে মাঠের অন্য ধারে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এর পর তার ৩১ বছরের স্ত্রী এবং ১৪ বছরের মেয়ের ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার। ঘণ্টা তিনেক পরে চলে যায় অপরাধীরা।
মেয়েটি ক্যারাটে জানে। বাবার কথায়, কিন্তু, কেউ যদি বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ওই ঘৃণ্য অপরাধ করে তবে সে কী করতে পারে!
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ঘটনার পর আমরা মিনিট পনের ধরে ১০০ নম্বরে ডায়াল করতে থাকি। কিন্ত, লাইন ব্যস্ত ছিল। শেষে এক বন্ধুকে ফোন করি। সেই বন্ধুই পুলিশে খবর দেয়।
ওই ঘটনার পর এখনও নয়ডায় নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেননি তারা। তিনি বলেন, এর পর পাড়া-পড়শিদের কাছে মুখ দেখাব কী করে? ১৮ বছর ধরে ওই এলাকায় রয়েছি... সকলেই জেনে গেছে সে দিন কী ঘটেছিল।
ঘটনার পর থেকে ঘরছাড়া ওই পরিবার। এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওই ভদ্রলোকর কথায়, এখন কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাদের।
Tuesday, August 2, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment