Social Icons

Saturday, May 20, 2017

সৌদি আরবে সর্বোচ্চ সম্মাননা পেলেন ট্রাম্প

নিজের দেশে তুমুল বিতর্কের মধ্যেই প্রথম বিদেশ সফরে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশে তার জনসমর্থন তলানিতে গিয়ে ঠেকলেও সৌদি আরবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পেয়েছেন সর্বোচ্চ সম্মাননা। তার এই সফরকে অতীতের অন্য সব মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বিদেশ সফরের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই সফরের মাধ্যমেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দেশে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর উপায় খুঁজতে হচ্ছে। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ২শ’ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হবে। মার্কিনীরা তার সফর নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ না করলেও সৌদি আরবের বাদশাহ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সফর বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে বাড়াবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা দিয়েছেন বাদশাহ সালমান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে মুসলিম বিশ্বের কোনো দেশকে বেছে নিলেন।

সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা

স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে রিয়াদের কিং খালিদ ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌছায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বহনকারী বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ান। বিমানবন্দরে       তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানান বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ। রিয়াদের আল ইয়ামায়াহ প্যালেসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব আব্দুল আজিজ আল-সৌদ মেডেল’ দেওয়া হয়। তাকে মেডেলটি পরিয়ে দেন বাদশাহ সালমান। এর আগে রিয়াদে পৌছেই টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, রিয়াদে এসে আমি গর্বিত। পরবর্তী কর্মসূচির দিকে নজর দিচ্ছি। বিমানবন্দরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বাদশাহ সালমানকে বন্ধুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিতে দেখা যায়। এরপরই কঠোর নিরাপত্তায় তাদের গাড়ি বহর রাজপ্রাসাদে পৌছায়। শনিবার সকালে ট্রাম্প বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে রাজপ্রাসাদে বৈঠক করেছেন। এরপর তার যুবরাজ ও ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্সদের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৯ দিনের বিদেশ সফরের প্রথমেই সৌদি আরব গেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যেমন সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করবেন তেমনি থাকবে ইসলাম নিয়ে বক্তৃতা করে মুসলিম বিশ্বকে একত্র করার প্রচেষ্টা। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইল, বেলজিয়াম ইতালি এবং ভ্যাটিকান সিটিতে যাবেন।   

২শ’ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হবে

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের কোম্পানির মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হবে। এর মধ্যে গতকালই বড় ধরনের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১৫০টি অত্যাধুনিক ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টার কিনবে সৌদি আরব। সৌদি আরবের এক সরকারি বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, লকহিড মার্টিন ব্ল্যাকহক নামের হেলিকপ্টার ক্রয়ে সৌদি সরকারের ৬০০ কোটি ডলার খরচ হবে। তবে এর ফলে সাড়ে ৪শ’ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, এই অস্ত্র চুক্তি এক দশকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার শাসনামলের শেষ দিকে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি কমিয়ে আনে যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি আরবের অস্ত্র সরবরাহকারীদের মধ্যে শীর্ষ দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাদশাহের সঙ্গে করমর্দন মেলানিয়ার

প্রেসিডেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউসের একদল শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে কঠোর ধর্মীয় আইন-কানুনের দেশ সৌদি আরবে হেডস্কার্ফ ছাড়াই গেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। তিনি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে হাতও মেলান। এ নিয়ে কট্টরপন্থীরা সমালোচনা শুরু করছেন। মেলানিয়াই প্রথম নন, তার পূর্বসূরি ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাও ২০১৫ সালে সৌদি সফরে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে হেডস্কার্ফ ছাড়াই অংশগ্রহণ করেন। ট্রাম্পের মেয়ে ও তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইভাঙ্কা ট্রাম্পও সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরবে এসেছেন। তিনিও হেডস্কার্ফ ব্যবহার করেননি। অথচ মিশেল ওবামা স্কার্ফ না পরায় সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।

ইরান ইস্যু গুরুত্ব পাবে

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সৌদি সফরে কিছু রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক চুক্তির সমাধান হতে পারে। বিশেষ করে ইরান ইস্যু এখানে গুরুত্ব পাবে। কারণ সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের শত্রুতার সম্পর্ক রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে পছন্দ করেন না। তিনি ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি বাতিল করার পক্ষে।  সফরে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলিম বিশ্বকে একত্র করার চেষ্টা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দুই দিনের সফরে তিনি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন। এর মধ্যে অন্তত ৫০টি মুসলিম দেশের নেতৃত্বের বা প্রতিনিধিদের সামনে ইসলাম নিয়ে বক্তৃতা করবেন। তিনি ইসলাম যে শান্তির ধর্ম সেই বিষয়টি সামনে আনবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকেই উত্পত্তি হওয়া বিশ্বের তিনটি ধর্মাবলম্বী মানুষদের মাঝে সমপ্রীতির আহ্বান জানিয়েও বক্তব্য রাখবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, ট্রাম্প রিয়াদে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে বিমান হামলা চালিয়েছে। সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, সানা থেকে হুতি বিদ্রোহীরা রকেট ছুড়েছিল। সৌদিতে ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বৈঠক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের জনসমর্থন কমছে

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোস প্রকাশিত জনমত জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য জানিয়ে দেওয়া ও এফবিআইয়ের তদন্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠার পর জনসমর্থন আরো কমেছে। গত ১৪ থেকে ১৮ মে সময়ের মধ্যে জরিপটি করা হয়। এতে দেখা যায়, ৫৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক লোক ট্রাম্পের বিপক্ষে এবং ৩৮ ভাগ মার্কিনী তাকে সমর্থন জানিয়েছে। বাকি ছয় ভাগ মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates