ইংরেজিতে সাধারণত এটা আমাজান জঙ্গল হিসেবেই পরিচিত, ব্রাজিলের প্রায় ৭ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এটি একটি ব্যাপক ও বৃহৎ অরণ্য। এটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী হিসেবে একটি বিস্ময়কর স্থান যার দুনিয়া জুড়ে একটি আলাদা মূল্য রয়েছে। এটি কার্বন ডাইঅক্সাইড হ্রাস করে এবং প্রাণীজগতের জন্য এক বিস্ময়কর অভয়ারণ্য। এমনকি এটা বিভিন্ন ধরনের উপজাতিদেরও বাসস্থান।
✬ আজ থেকে ১১ হাজার বছর আগে এই বনের আশে পাশে মানুষ বসতি স্থাপন করতে শুরু করে।
✬ দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত এই বনটির মালিক নয়টি দেশ।। সবচেয়ে বেশি জায়গা ব্রাজিলের (৬০ ভাগ), পরেই পেরু (১৩ ভাগ)! আরও আছে কলাম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়েনা, সুরিনেইম, ফ্রেঞ্চ গায়ানা।
✬ আমাজান বন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট (প্রচুর উঁচু উঁচু গাছে ভরা, উষ্ণ আবহাওয়া এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের বনাঞ্চলকে বলা হয় রেইনফরেস্ট।)। প্রচুর পরিমাণে গাছপালা থাকায় একে বলা হয় ‘পৃথিবীর ফুসফুস’।
✬ বিশ্বের শতকরা ২৫ ভাগ ফার্মাসিটিক্যাল ঔষধের গাছ আসে এই আমাজান অরণ্য থেকে।
✬ এই বনে যত গাছ বিজ্ঞানীরা ঔষধের জন্য পরীক্ষা করেছেন তার পরিমাণ মোট পরিমাণের মাত্র ১%, বাকি ৯৯% গাছই এখনো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।। কে জানে, সেই বাকি ৯৯% গাছে হয়তো রয়ে গেছে বিভিন্ন নতুন কোনো রোগের
চিকিৎসা।
✬ সারা পৃথিবীর লোকজন যেখানে মাত্র ২০০ জাতের ফল ভোগ করে সেখানে আমাজানের বাসিন্দারা ২০০০ জাতের বিভিন্ন ফল উপভোগ করেন।
✬ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতি স্কয়ার কিমি’তে এক হাজারেরও বেশি বৈচিত্রের জীবের বসবাস।
✬ এক স্কয়ার কিমিতে যে পরিমাণ গাছপালা আছে তার ওজন গড়ে ৯১ হাজার টন।
✬ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এই বনে দুই হাজার প্রজাতির পাখি ও প্রায় সম পরিমাণ প্রজাতির প্রাণির ঘর সংসার এই অরণ্যে।
✬ ৩ হাজার প্রজাতির মাছের বাস আমাজানের জলাভূমিতে।
✬ ১.৩ লক্ষ প্রজাতির প্রাণি আছে যাদের কোন মেরুদণ্ড নেই।
✬ ২.৫ মিলিয়ন প্রজাতির শুধু পোকামাকড় বাস করে।
✬ ৪০ হাজার প্রজাতির বিচিত্র উদ্ভিদের বসত বাড়ি।
✬ আমাজনের শাপলা ফুল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শাপলা হিসেবে গণ্য করা হয়। এরা ৬ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে।। তবে দৈর্ঘ্যের তুলনায় এর ওজন হয় খুবই কম।
✬ মাঝে মাঝে আমাজানের কোনো জলাশয় বা বদ্ধ পানিতে এতো বেশি শাপলা জন্মে যে, সেখানে শাপলারএ কটা মেঝের মত তৈরি হয়। যার উপর দিয়ে একটা ছোট বাচ্চা নির্দ্বিধায় হেঁটে যেতে পারে।
✬ আমাজানের অর্কিড ফুল তার সৌন্দর্য এবং সুগন্ধের জন্য জগত বিখ্যাত।
✬ আমাজানকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলা হয়। কারণ এটি পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত অক্সিজেনের ২০% একাই সরবরাহ করে।
✬ আমাজনের বর্তমান আয়তন হলো ২.৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। পূর্বে কত ছিল ৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। বন ধ্বংস এবং বাসস্থানের জন্য বন কাটায় আজ এর আয়তন এতো কমেছে।
✬ পৃথিবীতে যত ধরনের গাছপালা আছে তার মধ্যে ১/৩ (এক তৃতীয়াংশ) পাওয়া যায় এই আমাজান বনে।
✬ গাছপালা নিধন এবং খনি খননের কাজের জন্য আমাজানে প্রতি সেকেন্ডে একটি ফুটবল মাঠের আয়তনের সমান জায়গা ধ্বংস করা হচ্ছে।
✬ এখানে এক শ্রেণীর বাঁশগাছ দিনে ৯ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়তে পারে।
✬ গাছপালাগুলো একেকটা একেকটার সাথে এমন ঘনভাবে লাগানো যে এক ফোঁটা বৃষ্টির পানি সবচেয়ে বড় গাছের শীর্ষ থেকে মাটিতে পৌঁছতে প্রায় ১০ মিনিট সময় নেয় (ব্যাপারটা পরিষ্কার করি, সবচেয়ে উঁচু গাছ থেকে তার চেয়ে ছোটটায় পড়ে, এভাবে আস্তে আস্তে মাটিতে আসে। কিন্তু গাছের পরিমাণ এতই বেশি যে হয়তো এক ফোঁটা পানিকে প্রায় ৬০ টি গাছের পাতা পাড়ি দিয়ে মাটিতে পৌঁছতে হয়।)
✬ আমাজানের ৪ বর্গকিলোমিটার স্থানে ১৫০০ বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ, ৭৫০ রকমের গাছ, ৪০০ ধরনের পাখি, এবং ১৫০ প্রকারের প্রজাপতি থাকতে পারে!
No comments:
Post a Comment