দেশে কিংবা বিদেশে বাংলার নারীরা এখন আর ঘরের চার দেয়ালে বন্দী হয়ে থাকছেন না। সুদূর ব্রিটেনেও পুরুষের পাশাপাশি নারীরা বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতার নুতন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করছেন। রাজনীতির মাঠ, খেলার মাঠ থেকে শুরু করে অর্থনীতির নানান খাত-উপখাতে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছেন তাঁরা। ব্রিটেনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন বাংলাদেশি নারীরা। ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট এক পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর ব্রিটেনের জাতিগত সম্প্রদায়গুলো কঠিন সময় পার করলেও তুলনামূলক ভালো অবস্থানে ছিল বাংলাদেশি সম্প্রদায়। এটি সম্ভব হয়েছে কাজের প্রতি বাঙালি নারীদের ব্যাপক আগ্রহের কারণে।
ম্যানচেস্টার সিটির বাংলাদেশি কাউন্সিলর শেফালি আক্তার বলেন, অর্থনৈতিক মন্দার সময় ব্রিটেনের নাগরিকদের আয় দ্রুত কমলেও এর বাইরে ছিল বাংলাদেশি কমিউনিটি। তিনি বলেন, এ সময় বাংলাদেশি পারিবারগুলোর আয় বেড়েছে। তাঁদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার হারও বেড়েছে। অথচ এই কমিউনিটি ব্রিটেনের অন্য জাতিগুলোর চেয়ে এক সময় অনেক পিছিয়ে ছিল। তিনি বলেন, ব্রিটেনের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে বাংলাদেশি নারীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
২০০২ থেকে ২০০৫ পযর্ন্ত ব্রিটেনের শ্রমবাজারের পরিসংখ্যান তুলে ধরে দ্য ইকোনমিস্ট জানায়, ব্রিটেনের শ্রমবাজারে ওই সময় ব্রিটিশ নারীর সংখ্যা ছিল ৭৭ শতাংশ, পক্ষান্তরে বাংলাদেশি নারীর সংখ্যা ছিল ২১ শতাংশ। তবে ২০০৮ সাল থেকে বর্তমানে এই হার ১৩ শতাংশ বেড়ে ৩৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নের যে চার্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় সর্বপ্রথমে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। অথচ ৬০ বা ৭০-এর দশকে ব্রিটেনে আগত বাংলাদেশি নারীরা সাধারণত ঘরেই আবদ্ধ থাকতেন। কর্মক্ষেত্র জয়ে বাংলাদেশি নারীদের সাম্প্রতিক এই আগ্রহকে নতুন প্রজন্মের উত্থান বলেই মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনে। বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের বয়সোপযোগী নারীরা এখন শিক্ষাক্ষেত্রও এগিয়ে আছেন। এখানে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশিরাও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছেন।
No comments:
Post a Comment