Tuesday, April 19, 2016
'জেলে ওরা আমাকে অন্তত ২ হাজার বার ধর্ষণ করে'
সময়টা ন’য়ের দশকের মাঝামাঝি। গাড়ি চুরির দায়ে জেলে যেতে হয়েছিল মেরিকে (আসল নাম পরিবর্তিত)। মেরি এক জন ট্রান্সজেন্ডার মহিলা। শাস্তি শোনার পর জেল কর্তৃপক্ষকে বার বার অনুরোধ করে ছিলেন তাকে যেন পুরুষদের সঙ্গে এক সেলে রাখা না হয়। তার কথায় কান দেননি কুইন্সল্যান্ড জেল কর্তৃপক্ষ। তার ঠাঁই হয়েছিল পুরুষদের সেলেই। জেলের রিসেপশনে পা দিয়েই মেরি বুঝে গিয়েছিলেন জেলের সেলে তাকে বেশ খানিকটা লড়াই করতে হবে। আশপাশের লোহার গারদ থেকে উঁকি মারা চোখগুলোর তার প্রতি কেমন যেন অদ্ভুত দৃষ্টি ছুড়ে দিচ্ছিল। কিন্তু জেলের অভিজ্ঞতা ঠিক অতটা ভয়ানক হবে সেটা বোধহয় নিজের দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি মেরি। সেলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই মেরির পুরুষ সহবন্দিরা জোর করে তার পোশাক খুলে দেয়। শুরু হয় যৌন নির্যাতনের পালা। এর পর থেকে প্রতি দিন অন্তত একবার করে ধর্ষিত হতে হয়ে তাকে। রোজ রোজ অমানসিক এই অত্যাচারে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মানসিকভাবেও বার বার ক্ষত বিক্ষত হতে থাকেন তিনি। বার বার জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েই লাভ হয়নি। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পরে থেকেছেন। কেউই ফিরে তাকায়নি। তার অসহায় চিৎকার বা অস্ফুট গোঙানি, কোনো কিছুই কারও কানে পৌঁছয়নি। টানা চার বছর চলেছে এই নারকীয় নির্যাতন। অন্তত ২ হাজার বার ধর্ষণ করা হয় তাকে। জেল থেকে বেরিয়ে এসেছেন বেশ কয়েক দিন হল। কিন্তু এখনও সেই ভয়ংকর দিনগুলোর কথা মনে পড়লে অজানা আতংকে শিউরে ওঠেন মেরি। রাতে ঘুমোতে পারেন না। সম্প্রতি নিজের সেই অসহনীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই বাসিন্দা। তবে মেরির ঘটনা কোনো ব্যতিক্রম নয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই জেলে লিঙ্গ নির্বিশেষে সহ-বন্দিদের ওপর জেলের মধ্যে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে আকছারই। কোনো অজানা কারণে এই বিষয়ে সদর্থক কোনো ভূমিকাই নেন না অধিকাংশ জেল কর্তৃপক্ষ। অনেক সময় বহু জেল পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধেও উঠেছে ধর্ষণের অভিযোগ। জেলে চার বছরে নরক যন্ত্রণার সময় মেরির মাত্র একজন সমব্যথীকে খুঁজে পেয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে তিনিও ট্রান্সজেন্ডার ছিলেন। মেরির ওপর যে ধরনের নির্যাতন চলতো, সেই একই নির্যাতনের শিকার ছিলেন তিনিও। মেরির মুক্তির কিছু দিন আগে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে প্যারোলের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ফের কারাবাসের শাস্তি শোনানো হয় তাকে। তবে মেরির বন্ধুকে আর জেলে ফিরে যেতে হয়নি। জেলে যাওয়ার কথা শুনেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি! সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Labels:
আন্তর্জাতিক
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment