Social Icons

Wednesday, May 17, 2017

রাষ্ট্রপতিকে জরুরি আইন জারিতে বাধ্য করা হয়

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আইনবর্হিভূত কর্মকাণ্ড নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি কিছু কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতিকে জরুরী ক্ষমতা জারি করতে বাধ্য করে। দুর্নীতির অপবাদ ছড়িয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। যদিও তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। ওই সময়ে সদস্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তা রাজনীতিবীদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের কীনারে নিয়ে যায়। আইন বহির্ভূতভাবে কিছু সেনা কর্মকর্তা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকে। রায়ে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কি ভূমিকা থাকা উচিত তার ছয় দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে আপিল বিভাগ সে সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে জোর করে নেওয়া ৬শ ১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছে। রায়ে বলা হয়েছে, জোর করে নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককের আইনগত কোনো বাঁধা নেই। ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জোর করে আদায় করা এসব অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা যেমন ঝুকিপূর্ণ, তেমনি ভয়ানক বিপদও। দেশ থেকে জরুরী অবস্থা প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ওই টাকা সংশ্লিষ্টদের ফেরত দিতে পারতো। কিন্তু কি কারণে তা আটকে রেখেছে তা বোধগম্য নয়। ভবিষ্যত ট্যাক্স আদায়ের জন্য ওই টাকা রেখে দেওয়ার যুক্তি আমাদের অর্থনৈতিক আইনে সম্পূর্ণ অজানা। রায়ে বলা হয়, কোন ক্ষমতাবলে এবং কিভাবে তারা টাকাগুলো উদ্ধার করে বা জোর পূর্বক নেয় তার ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব ছিল সরকারের। সরকার নীরব থেকেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তার প্রধান নির্বাহী এ অনৈতিক ও অমানবিক কাজকে সমর্থন করেছে।   প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ এই রায় গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। আপিল বিভাগের পক্ষে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা এর মূল রায়টি লিখেছেন।

আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। তিনি শুনানিতে আদালতকে বলেন, দুটি কারণে ওই টাকা ফেরত দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিতে পারে না। এর প্রথমটি হলো, ওই টাকা সরকারের বিভিন্ন একাউন্টে চলে গেছে। সেটা বিতরণ হয়ে গেছে। তাই সেই টাকা আর ফেরত দেওয়ার সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, এ টাকা ফেরত দিতে হলে সংসদে আইন পাস করতে হবে। রায়ে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের এ যুক্তি খন্ডন করে আদালত বলেছেন, এ যুক্তির সত্যতা নেই। তা গ্রহণযোগ্যও নয়। কারণ জোর করে আদায় করা ওই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি একাউন্টে (একাউন্ট নম্বর-০৯০০) জমা রয়েছে। আদালত বলেছেন, কোনো আইন ছাড়াই অবৈধভাবে জনগনের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে আদালতের নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে। হাইকোর্ট যথাযথভাবেই টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদে আইন করার প্রয়োজন নেই। জোর করে আদায় করা এ টাকা ডিজিএফআই’র এক কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখার জন্য পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে এই টাকা উদ্ধারের বৈধতা দিতে চেষ্টা করে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

রায়ে বলা হয়েছে, ডিজিএফআই দেশের একটি স্বাধীন সংস্থা এবং নির্বাহী বিভাগ থেকে তাদের কর্মকান্ড সমপূর্ণ আলাদা। নির্বাহী বিভাগের মত তারা কাজ করতে পারেনা। আবার বেআইনি কাজও তারা বৈধতা দিতে পারে না।

রায়ে বলা হয়, বিশেষ পরিস্থিতি কিংবা সংবিধানের ক্ষমতাবলে জরুরী অবস্থা জারির মাধ্যমে কিংবা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে সরকারি সংস্থা বিশেষ করে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ডিজিএফআইকে আইন বহির্ভূতভাবে জনগণের জীবন, সম্পদ  ও ব্যবসায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।

রায়ে বলা হয়, সেনাবাহিনী আমাদের দেশের সম্পদ। সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক কাজ হচ্ছে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। দেশের ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এবং আইনের শাসন রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখা। গণতন্ত্রে রাষ্ট্রকে দুই ধরনের সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত: রাজনীতিবিদ, যাদের সামরিক উচ্চাকাঙ্খা রয়েছে এবং দ্বিতীয়ত: রাজনৈতিক উচ্চাভিলাস নিয়ে সামরিক বাহিনীতে থাকেন তাদের থেকে দেশকে রক্ষা করা।

রায়ে বলা হয়, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা এবং সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণের কিছু সাধারণ নীতিমালা থাকা উচিত মন্তব্য করে রায়ে ৬টি বিষয় তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো-

এক. রাষ্ট্র ও স্বশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ আইনী ও সাংবিধানিক কাঠামোগত মৌলিক সংজ্ঞা থাকতে হবে।

দুই. সশস্ত্র বাহিনী আইন ও নিরাপত্তা, জাতীয় নীতি প্রণয়নে কৌশল, জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নীতিতে ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট অনুমোদন দিতে স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরিতে জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে।

তিন. এ সংস্থার কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগ বা সরকারের সামরিক জনপ্রশাসন সংস্থা থাকবে। যা পরিচালিত হবে সরকারের তত্ত্বাবধানে। সরকারের প্রতি সেনাবাহিনীর পুরোহিততান্ত্রিক দায়দায়িত্ব থাকবে।

চার. উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ সেনাসদস্য বেসামরিক কর্তৃপক্ষের মর্যাদা বাড়ায়। বেসামরিক নীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ন্ত্রণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষপাতিত্ব নিয়ন্ত্রণ ও তাদের দ্বারা সম্ভব।

পাঁচ. একটি উন্নত নাগরিক সমাজের অস্তিত্ব, স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়ে দেশব্যাপী ঐক্যমতেও সামরিক বাহিনী ভূমিকা রাখতে পারে এবং

ছয়. জনসমক্ষে প্রতিরক্ষা বিভাগের উপস্থিতি হতে হবে যুক্তিসংগত বেসরকারী উপস্থিতি। যেখানে নিরাপত্তা নীতি ও প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে কোন বিতর্ক থাকবে না।

রায়ে বাংলাদেশ সসস্ত্র বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা  করে বলা হয়, আমাদের সসস্ত্র বাহিনী পেশাদার সামরিক বাহিনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। বেসামরিক বাহিনীকে ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো দূর্যোগ মোকাবেলার মতো সামাজিক কাজে অংশ নিচ্ছে। অভ্যন্তরীন শান্তি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোস্টগার্ড় চোরাচালানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। সমুদ্রসীমায় সম্পদ রক্ষা করছে। সেনাবাহিনী ১৯৭০ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ দায়িত্ব পালন করে আসছে। নৌবাহিনী সমুদ্রসীমা এবং মায়ানমারের আগ্রাসন রুখতে ভূমিকা রাখছে। ১৯৮০ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহনী আজ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুর্শংখলবাহিনীতে পরিনত হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, তবে সসস্ত্র বাহিনীর একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে। এ বাহিনীর কিছু বিপদগামী কর্মকর্তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার ও আত্মীস্বজনকে হত্যায় অংশ নেয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নৃসংশভাবে হত্যা করে। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে কিছু বিভান্ত্র উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা সামরিক আইন জারি করে। একইভাবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি কিছু কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতিকে জরুরী ক্ষমতা জারি করতে বাধ্য করে। দুর্নীতির অপবাদ ছড়িয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। যদিও তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। ওই সময়ে সদস্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তা রাজনীতিবীদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের কীনারে নিয়ে যায়। আইন বহির্ভূতভাবে কিছু সেনা কর্মকর্তা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকে।     

রায়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায়ের কথা তুলে ধরে বলা হয়, ওই রায়ে আদালত সামরিক আইন জারিকে অনুমোদন দেয়নি। আদালত এদের (সামরিক আইন জারীকারী) বেআইনী কাজের জন্য শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছে। যাতে অন্যায়কারীরা জনগণের অধিকার খর্ব করার সাহস না দেখায়। ওই রায়ে আদালত বলেছিল, সংবিধান বহির্ভূত কাজ চিরদিনের মতো বিদায় দিতে সংসদ আইন করতে পারে। এরই ধারাবাহিকতায় সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী করেছে। এতে ৭ক নামে একটি অনুচ্ছেদ সংযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যদি কেউ সংবিধান বহির্ভূতভাবে এ জাতীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে বা সংবিধান স্থগিত করে তবে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এটা একটা অনন্য ব্যবস্থা। যা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা বা উন্নয়নশীল কোনো দেশে নেই।

রায়ে ভিয়েতনামের যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঐতিহাসিক অন্যান্য যুদ্ধে বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরা হয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার মেজর জেনারেল উইলিয়াম ওয়েস্টসরল্যান্ড কিভাবে দেশের স্বার্থের প্রতি অবিচল থেকে যুদ্ধ জয়ের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তা রায়ে তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে পরবর্তীতে জেনারেল ক্রেইটন আব্রামস, ইউলিয়াম ডিপিউ ও ফ্রেডারিক সি.ওয়েন্ড আমেরিকার সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করেন তাও তুলে ধরা হয়। রায়ে বলা হয়, আমেরিকার এই চার জেনারেল আমেরিকার সেনাবাহিনীকে আধুনিক আমেরিকান জীবনে সম্মানিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। রায়ে বলা হয়, আশা করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চার জেনারেল যেমন তাদের বাহিনীকে নেতৃত্ব দেয়, তেমনি আমাদের সসস্ত্র বাহিনী জাতিকে এমনভাবে নেতৃত্ব দেবে যাতে তাদের প্রতি এদেশের নাগরিকরা গর্ব, সম্মান ও বিশ্বাস অটল থাকে।

কোন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি কি পরিমান টাকা ফেরত পাবে

ইস্ট ওয়েষ্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড একশ ৮৯ কোটি, বসুন্ধরা পেপার মিল লিমিটেড ১৫ কোটি টাকা, মেঘনা সিমেন্ট ইন্ড্রাস্ট্রিজ ৫২ কোটি, এস. আলম স্টীল লিমিটেড ৬০ কোটি টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড ৩৫ কোটি টাকা, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা, ইউনিক ইষ্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড ৯০ লাখ টাকা, ইউনিক সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড ৭০ লাখ টাকা, ইউনিক গ্রুপের মালিক নূর আলী ৬৫ লাখ টাকা এবং দি কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড ও বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেড ২শ ৩৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

রায় প্রসঙ্গে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করীম বলেন, একটি সংস্থার একজন ব্যক্তির দায় গোটা বাহিনী বা সেনাবাহিনী বহন করতে পারে না। তারা সেটার দায় স্বীকারও করেনি। তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় অবৈধভাবে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। ওয়ান ইলেভেন কুশীলবদের চাপে এ টাকা জমা দিতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা। এদের মধ্যে যারা টাকা ফেরত চেয়ে আদালতের দারস্থ হয়েছেন অর্থাত্ যারা মামলা করেছেন তারাই টাকা ফেরত পাবেন। তিনি বলেন, অন্যরা টাকা ফেরত পেতে চাইলে তাদেরও আদালতে আবেদন করতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সরিয়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ক্ষমতা নেয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই সময় দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১২শ ৩২ কোটি টাকা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করে। এ টাকা দুই শতাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ০৯০০ নম্বর হিসাবে জমা হয়। এরমধ্যে ৬শ ১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিষয়ে পৃথক ১১টি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট তিনমাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্টের দেওয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

২০১০ সালে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, তত্ত্বাবধায়ক আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২শ ৩২ কোটি টাকা যা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রয়েছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates