বার্ষিক গড় আয়ের দিক থেকে সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন। প্রথম সারিতে রয়েছে সুইজারল্যান্ড এবং জার্মানির নাম। পরিসংখ্যানে জানা যায়, সুইডেনে একজন প্রবাসীর গড় বার্ষিক আয় ৮৪ হাজার ৮০২ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ প্রবাসী জানিয়েছে, দেশটিতে কাজের পরিবেশ ভালো।
স্থানীয় প্রবাসীরা জানান, সুইডেন বরাবরই অত্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল একটি রাষ্ট্র। সেই সূত্র ধরে সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকলেও সবাই একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সাথে সাথে তাদের মধ্যে ধর্মীয় কোন ভেদাভেদ নেই বলেও জানা যায় প্রবাসীদের কাছ থেকে।
সুইডেন প্রবাসী সাদিকা ইসলাম জানান, সুইডেনে মুলত শিক্ষার্থী ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা), কাজের অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) নিয়ে যায় বাংলাদেশিরা। তবে গত কয়েকবছর থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের জাতীয়তা গ্রহণকারী (পাসপোর্ট) অনেক বাংলাদেশিও পাড়ি জমাচ্ছেন ।
এই প্রবাসী আরো বলেন, আগে সুইডেনের ইউনিভার্সিটিগুলোতে গেলেই বাংলাদেশি নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের পাওয়া যেত। ছাত্রদের উপর টিউশন ফি আরোপ করার পর পরিস্থিতি তেমনটি এখন আর নেই আর। বর্তমানে সুইডেনের শিক্ষা ব্যয়বহুল। প্রতি বছর প্রায় ১০-১২ হাজার ইউরো যা ১০-১২ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ টিউশন ফি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের।
সাদিয়া জানান, সুইডেনে পড়াশুনার সময় বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সময় পায়। যা দিয়ে লিভিং কস্ট ম্যানেজ করা সম্ভব হলেও টিউশন ফি জোগার অসম্ভব। ২০১১ সালের পর থেকে সুইডেনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নন-ইউরোপিয়ান ছাত্র ড্রপ করা হয় ৮০%, যা কল্পনাতীত। তাই উচ্চশিক্ষা অর্জনে ইদানিং আর কেউই সুইডনের দিকে পা বাড়াচ্ছেনা।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে সুইডেন কিছুটা কঠোরতা অবলম্বন করে। দেশে খোঁজ-খবর নিয়ে সত্যিকার অর্থেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার মনে হলে তবেই কর্তৃপক্ষ সেই ব্যক্তি বা পরিবারকে সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে থাকে।


No comments:
Post a Comment