Social Icons

Wednesday, November 8, 2017

কেন পরকীয়া সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে ?

নুর হুসাইন-
পরকীয়া সম্পর্ক, এটি নতুন কোনো বিষয় নয়! বর্তমান বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশেও এখন এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে  মোবাইল ফোন, ফেসবুকসহ নানা প্রযুক্তি মানুষের হাতের মুঠোয়, তাই আজকাল পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলা অনেক সহজ। কিন্তু কি এই পরকীয়া সম্পর্ক? কেন এটি গড়ে উঠছে? এটাকে রোধ করার উপায় কি? 

পরকীয়া সম্পর্ক হচ্ছে, বিবাহিত জীবন থাকা স্বত্ত্বেও অন্য কোনো নারী বা পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। বেশির ভাগ পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে নারী বা পুরুষের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা মেটানোর জন্য। আমাদের সমাজে এমন কি ধর্মেও এই পরকীয়া সম্পর্ককে অবৈধ সম্পর্ক হিসেবে বলা হয়েছে। কিন্তু কখনো কি আমরা এটা জানার বা বুঝার চেষ্টা করেছি যে, কেন আমাদের সমাজে, আমাদের দেশে এই সম্পর্কের হার বেড়ে গিয়েছে? নারী বা পুরুষ তাদের বিবাহিত জীবন নিয়ে কি সন্তুষ্ট নন? এর উত্তর হচ্ছে, আমরা নিজেরাই প্রধানত দায়ী। আমাদেরই বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজ এই পরকীয়া সম্পর্কের হার বেড়ে গিয়েছে এবং ঘরে ঘরে তালাক বা ডিভোর্স হচ্ছে। সমাজতাত্ত্বিকরা এর ভালো বিশ্লেষণ করতে পারবেন। তবে আমার বিবেচনায় নিম্নের প্রধান বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হল- 

১. অল্প বয়সে বিয়ে : আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক তরুণ তরুণী কম বয়সে বিয়ে করে ফেলে। এই সময়ে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে মানসিক বুদ্ধি-চিন্তা কাজ করে না। যুক্তির চেয়ে আবেগই বড় হয়ে দেখা দেয়। যার কারণে বিয়ের কিছুদিন পরই সেইসব স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন রকমের মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এবং এই সময়েই সেই স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ফলে, একসময় এই বিবাহিত জীবন ডিভোর্স এর পর্যায় চলে যায়।

২. শারীরিক সমস্যা : বিবাহিত জীবনে এটি হচ্ছে প্রধান সমস্যা। এই সমস্যাটি তখনই দেখা দেয়, যখন স্বামী ও স্ত্রী সমবয়সী হয় অথবা স্বামীর থেকে স্ত্রী যদি বয়সে বড় হয়ে থাকে। যার কারণে সেসব স্বামী বা স্ত্রী বাইরের অন্য কারো সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে।

৩. বিয়ের ক্ষেত্রে ভুল মানুষ কে নির্বাচন করা: মূলত এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায় অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ বা অভিভাবকের পছন্দানুযায়ী বিয়ে করার ক্ষেত্রে। অনেক সময় অভিভাবকরা তাদের নিজেদের কথাই ভাবেন এবং ভাল-মন্দ কোনো কিছু না দেখে-শুনে অনেক তাড়াহুড়ো করেই তাদের সন্তান দের বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু ছেলে-মেয়ের পছন্দ বা মতামতকে তারা প্রাধান্য দেন না। যার ফলে এসব ছেলে-মেয়েদের বিবাহিত জীবন সুখের হয় না। আর তখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পরবর্তীতে তারা পরকীয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

৪. বিয়ের অল্পকিছু দিন পরই অভিভাবক হওয়া: কথাটি বেশ কড়া হলেও এটাই বাস্তব যে, বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যের মধুর সম্পর্কে তখনি ব্যাপক পরিবর্তন আসে, যখন তারা অভিভাবক হয়ে যান। একটা সন্তান পরিবারে আসার পর মূলত সন্তানদের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। সন্তানদের নিয়ে অতি ব্যস্ত থাকার কারণে স্বামী-স্ত্রী কেউই একে অপরকে সময় দিতে পারছে না। যার কারণে আগের মত সেই মায়া, ভালবাসা থাকে না। তখনই সেসব পুরুষ বা নারীদের মন বাইরে চলে যায় অর্থাৎ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

৫. ক্যারিয়ার আডভান্সমেন্ট : খুব দুঃখজনক হলেও, এটাই সত্যি। কিছু পুরুষ বা নারী তার ক্যারিয়ার প্রমোশন দ্রুত বৃদ্ধি করার জন্য তার কর্মস্থল এর ম্যানেজার কিংবা উপরের লেভেলের বসদের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হন। কারণ তারা মনে করেন এতে করে তারা জব এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণই ভুল চিন্তা! উল্টো এটা একটা মানুষের ব্যক্তিস্বত্তা, তার চরিত্র স্বত্তাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যায়। এসব সম্পর্কও যেমন বেশিদিন টিকে না, ঠিক তেমনিভাবে চাকরি হারানোর আশঙ্কা থাকে ১০০%। পরবর্তীতে এগুলোর প্রভাব পড়ে পরিবারের সন্তানদের উপর। বিশ্বাস, ভালবাসা, সম্মান সবকিছুই বিনষ্ট হয়ে যায়, এই সাময়িক পরকীয়া সম্পর্কের কারণে।  

সমাধান : অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও যেহেতু এই সমস্যা ব্যাপক ভাবে বেড়ে গিয়েছে, সুতরাং এগুলো দ্রুত প্রতিকারও করতে হবে। একমাত্র কেবল মানুষ নিজেই পারেন এই সমস্যার সমাধান করতে। আবেগ দিয়ে নয়, বরং বিবেক দিয়ে প্রতিটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সমাজ এবং পরিবার কেউ উপরের উল্লিখিত বিষয় গুলির ওপর বিশেষ জ্ঞান ও চিন্তা-ভাবনা রাখতে হবে। তবেই হয়তো এই পরকীয়া নামক অভিশাপ কে সমাজ থেকে দূর করা সম্ভব হবে।

1 comment:

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates