Social Icons

Wednesday, November 15, 2017

দেশে বিনিয়োগের আগ্রহ হারাচ্ছে প্রবাসীরা

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। একই সাথে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহী। কিন্ত দেশের ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ নিয়ে প্রবাসী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে দেশকে বিনিয়োগবান্ধব বলা হলেও প্রবাসীরা ভরসা পাচ্ছেন না। স্বদেশের টানে অনেক প্রবাসী জায়গা-জমি কেনা, ব্যাংকে এফডিআর, স্থায়ী আমানতসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করেছেন। প্রথম প্রজন্মের অনেক প্রবাসীরা এসব ক্ষুদ্র বিনিয়োগেই মন দিয়েছেন। তবে তাঁদের এই বিনিয়োগ মানসিকতা এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে প্রবাসী অনেকেরই দেশের জায়গা-জমি বেদখল হয়ে গেছে। ফেলে আসা দেশকে অনেকেই আর নিরাপদ মনে করেন না। জীবনের ভয়ে অনেকে দেশে আসছেননা।
প্রবাসের কষ্টার্জিত অর্থে ক্রয় করা জমি বেদখল হচ্ছে। ব্যাংকে টাকা রাখাও নিরাপদ মনে করছেন না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে প্রবাসীদের অনেক বিনিয়োগকারীরা দেশে বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। এক সময় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রবাসীরা বিশেষ করে সিলেটে প্রচুর ভূসম্পত্তি কেনা বেচা করতেন, যা আজ শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। এরই মধ্যে সিলেটে বর্তমানে জমির মূল্যে ধস লক্ষণীয়। এর মধ্যে যারা জমি ক্রয় করেছিলেন বিনিয়োগের জন্য, তারা আজ সবাই বিক্রেতার তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাবুল রহমান, পঙ্কি মিয়া ও আশিক মিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত শামসুর রহমান, নিউইয়র্কের জান্নাত আরা বেগম, শেরোয়ান আহমদ চৌধুরী, আব্দুল মোমিত চৌধুরী উমেল, নুরুদ্দীন সকলেরই একই ধরনের মতামত দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। প্রবাসীদের সম্পদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকলে অচিরেই প্রবাসীরা নতুনভাবে বিনিয়োগ করবেন না। জায়গা-জমি ছাড়াও অনেক প্রবাসী ব্যাংকে জামানত হিসেবে এফডিআর কিংবা স্থায়ী আমানতের টাকাগুলো দেশের ব্যাংকগুলি ব্যবহার করে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করছেন।
অথচ গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক খবরে জানা যায়, যুক্তরাজ্যপ্রবাসীর ১০ বছর আগে ব্যাংকে এফডিআর’এর মাধ্যমে রাখা ৭০ লাখ টাকা সিলেটের জিন্দাবাজারে একটি ব্যাংকের ম্যানেজার জমাদানকারীর সঁই জাল করে পুরো টাকাই হাতিয়ে নিয়েছে। ওই বিনিয়োগকারী এ পর্যন্ত ১৬ বার দেশে দৌড়াদৌড়ি করে আইনের আশ্রয় নিয়ে অনেক টাকা ব্যয় করে ৫৭ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ফেরত পান। এখনো মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রবাসীরা মনে করেন, ব্যাংকে রক্ষিত টাকার দায়-দায়িত্ব ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বা বাংলাদেশ ব্যাংকের অথবা মন্ত্রণালয়ের। প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের ওই সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলার সুরাহা যদি অর্থ মন্ত্রণালয় কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংক সুষ্ঠুভাবে করত তবে প্রবাসীদের আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকত না। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে প্রবাসী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রণালয় বা বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা সরকারের আলাদা কোন মন্ত্রণালয় নজরদারি একান্ত জরুরি বলে মনে করেন প্রবাসীরা । দেশের সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে প্রবাসীদের জন্য নানা ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প রয়েছে। এসব সঞ্চয় প্রকল্প সম্পর্কে প্রবাসীদের সঠিক ধারণা না থাকার কারণেও এ খাতে প্রবাসীরা এখন আর খুব উপকৃত হচ্ছেন বলে মনে করেন না সাধারণ প্রবাসীরা। বেসরকারি এক ব্যাংকের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শাহীনা পারভিন বলেন, সঞ্চয় প্রকল্পগুলো এক সময় প্রবাসীদের জন্য বেশ আকর্ষণীয় ছিল। এ ধরনের সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ নিরাপদ। তার মতে, কোন অসৎ ব্যাংক কর্মকর্তার কারণে এসব প্রকল্প থকে প্রবাসীদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates