বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা সরকার করাতে চায় না বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে সেবা নিতে সুযোগ না দেয়ায় তিনি ‘অধিকার বঞ্চিত’হচ্ছেন। এটা পরিষ্কার যে, সরকার খালেদা জিয়ার সঠিক চিকিৎসা করতে দিতে চায় না। এর একটি মাত্র কারণ তারা তাকে ভয় পায়। কারণ তিনিই একমাত্র গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারেন এবং এই দুঃশাসনকে পরাজিত করতে পারেন।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার যে নূন্যতম প্রাপ্য অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার যখন ডিভিশন প্রাপ্তির কথা ছিল, প্রথম কয়েকদিন তা দেয়া হয়নি। তাকে একটি পরিত্যক্ত নির্জন একটি কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। একটি সভ্য দেশে এমন কোনো নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ফখরুল বলেন, আমার তো মনে হয় আওয়ামী লীগ দেশ চালাচ্ছে না। অন্য কেউ দেশ চালাচ্ছে। কারণ একটি রাজনৈতিক দল দেশ চালালে কখনও বিরোধী দলের সঙ্গে এমন আচরণ করে না। ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয় না।
দুদকের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারের ইচ্ছা পূরণে কাজ করছে। সরকার যে ভাবে চায় তারা সেভাবে কাজ করছে। এখন আমাদের দলের ৮ নেতার চরিত্র হনন করতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে। তারা নাকি ১২৫ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন করেছেন? আমি বলবো দুদকের এ অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট মনগড়া।
তিনি বলেন, সরকারের যারা দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যারা রাষ্ট্রের অর্থ পাচার করছে, ব্যাংক লুট করছে, শেয়ারবাজার ধ্বংস করেছে তাদের বিষয়ে দুদক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এমনকি যারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন তারা এখনও মন্ত্রী পদে বহাল আছেন। এদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকার সময় আমাকে নিয়ে যেভাবে মনগড়া নিউজ করা হয়েছে। তাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না। আমি খুব উদ্বিগ্ন হয়েছি যখন আমি হাসপাতালে ভর্তি তখন আমাকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে মনগড়া নিউজ। এসবের ফলে শুধু একটা দল বা ব্যক্তি নয় গোটা জাতির ক্ষতি হয়। তাই আমি আহ্বান জানাবো যাতে এমন কোনো সংবাদ প্রচার না হয় যাতে দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়।
মনগড়া তথ্যে সংবাদ প্রকাশ বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করবে যাতে দেশ ও জাতি উপকৃত হতে পারে। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য প্রচার করে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা কখনো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা হতে পারে না।
তিনি বলেন, ২০ দল আগেও ছিল এখনও আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আছি। আমরা দলীয় ও জোটগতভাবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্যাতনের মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জনগণের মুক্তি একই সূত্রে গাথা। জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে নৌকা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করা। অবরুদ্ধ মানবাধিকার যা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, সেটি প্রতিষ্ঠিত করা। এক্ষেত্রে এক বিন্দুও আমরা পিছপা হবো না। হয় সফলতা, না হয় মৃত্যু। এর বাইরে আর কোনো রাস্তা নেই।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে এ সময় রুহুল কবির রিজভী, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment