Wednesday, April 6, 2016
অবৈধ অভিবাসীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবে ইইউ
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশীদের ফেরত আসার পর তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় অভিবাসন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাংলাদেশ-ইইউ প্রথম সংলাপে ইইউ’র পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক ও ইইউ’র পক্ষে সংস্থাটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান লেফলারের নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। তবে বাংলাদেশ ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবস্থানরত ‘অনিয়মিত’ অভিবাসীদের ‘ফিরে আসা ও পুনর্বাসন প্যাকেজ’ চেয়েছে। ওই প্যাকেজে ইইউ’র সহায়তায় প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন ও ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরুর সহযোগিতা করার কথা বলছে বাংলাদেশ। যাতে ওই অভিবাসীরা দেশে ফিরে সমাজে সম্মানজনকভাবে বাঁচতে পারেন। সোমবার ক্রিশ্চিয়ান লেফলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ হয়ে যাওয়া ৮০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত আনার অনুরোধ জানান। এরপর মঙ্গলবার সংলাপে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেয়া হল। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার ইইউ প্রতিনিধি দলের সংলাপের পর কোনো পক্ষই সাংবাদিকদের কাছে ইউরোপে অবস্থানরত ‘অনিয়মিত’ বাংলাদেশীর সংখ্যা উল্লেখ করেননি। সংলাপের পর পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনা, তাদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনে কিভাবে সহায়তা দেয়া যায়, সেসব বিষয় ইইউ খতিয়ে দেখছে। এ ক্ষেত্রে ইইউ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তিনি বলেন, যে বাংলাদেশী অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে আছে, তাদের ফিরিয়ে আনা এ দেশের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এটি কতটা নিরাপদে ও ভালোভাবে করা যায় এবং তাদের ফিরিয়ে আনার পর জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করে দেয়ার উপায় দেখতেও ইইউ রাজি হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশীরা যাতে আইনি পথে নিয়মিতভাবে ইউরোপে যেতে পারে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে সেগুলো দূর করার বিষয়টি ইইউ দেখার আশ্বাস দিয়েছে বলেও পররাষ্ট্র সচিব জানান। ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্রিস্টিয়ান লেফলার সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি পুরোপুরি একটি বিকাশমান পরিস্থিতি। আমরা কোনো সংখ্যা (অনিয়মিত বাংলাদেশীর সংখ্যা) দিতে পারি না। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের একসঙ্গে কাজ করা এবং স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নেয়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ৮০ হাজার অনিয়মিত বাংলাদেশীর যে সংখ্যাটি গণমাধ্যম বলছে তা তার কাছ থেকে পায়নি এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। তবে এটি ঠিক যে অন্য বিদেশীদের মতো ইউরোপে অনিয়মিত বাংলাদেশীও আছে। সংলাপের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় ইইউ-বাংলাদেশ প্রথম সংলাপবিষয়ক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংলাপে বৈশ্বিক অভিবাসন পরিস্থিতি, উন্নয়ন ও অভিবাসনবিষয়ক বৈশ্বিক ফোরাম এবং পাচার, অনিয়মিত অভিবাসন ও অভিবাসন সম্পর্কিত ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডাসহ অভিবাসন ও চলাচলবিষয়ক সব কিছুই গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য একটি সমন্বিত রাজনৈতিক ঘোষণার মাধ্যমে অভিবাসন ও চলাচল বিষয়ে ব্যাপক পরিসরে সহযোগিতার সম্ভাবনার বিষয়টিও সংলাপে আলোচিত হয়েছে। সংলাপে উভয় পক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশীদের অনিয়মিত পরিস্থিতি এবং তাদের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অবৈধ অভিবাসনের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তথ্যসমৃৃদ্ধ প্রচারণা কর্মসূচির পাশাপাশি ফেরত আসা ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে বিশেষ কর্মসূচিতে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে ইইউ। বাংলাদেশ পক্ষ অনিয়মিত পরিস্থিতিতে থাকা সব ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের নীতির পাশাপাশি নিরাপদ, বৈধ ও নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। অভিবাসন ও চলাচল ইস্যু মোকাবিলায় আরও বিশদ পরিসরে উদ্যোগ নিতে উভয়পক্ষ আগামীতেও সংলাপ অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে।’
Labels:
আন্তর্জাতিক
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment