সমাজ ও পরিবারের অবক্ষয়কে পেছনে ফেলে মানবতার জায়গান গেয়ে আলোর পথে চলার শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে জাতি বরণ করে নিল ১৪২৩ বঙ্গাব্দ।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও বাংলা সনের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।
চির নতুনের ডাক দিয়ে আসা পহেলা বৈশাখ যেন রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে বাঙালির মনে, যার প্রকাশ ঘটেছে নারী-পুরুষের রঙিন সাজে, শিশুদের মুখে ফুটে ওঠা আনন্দের হাসি আর বর্ণিল পোশাকে।
কাকডাকা ভোর থেকে নগরবাসীকে ছুটতে দেখা যায় রমনা পানে। বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন শুরুর বেশ আগে থেকেই সেখানে দলে দলে মানুষ সমবেত হতে থাকে। এক সময় পুরো রমনাই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
উৎসবে যোগ দিতে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের সঙ্গে বাবা-মার হাত ধরে রমনামুখী হয়েছে শিশুরাও। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আর্চওয়ে পার হয়ে পার্কে ঢুকতে হয়েছে সকলকে। সকাল ৭টার আগেই রমনায় প্রবেশে দীর্ঘ লাইনে পড়তে হয় মানুষকে।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে রমনা পার্ক ও আশপাশের এলাকাসহ পুরো নগরী। লাল ও সাদা রঙের শাড়িতে নারী, আর পাজামা-পাঞ্জাবিতে দেখা গেছে পুরুষদের।
বেশ কয়েকজন বিদেশীকেও দেখা গেছে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে রমনার উৎসবে যোগ দিতে। তাদের কারও কারও গালে ফুটে উঠেছে বৈশাখী আলপনা।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভোরের আবহ ধরে রাখতে যন্ত্রসঙ্গীতে রাগালাপ আর কোরাসে মুখরিত হয়ে ওঠে ভোরের বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে শুরু হয় বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’।
এরপর দিনভর বাদ্যযন্ত্রে নগরী মেতে ওঠে বর্ষবরণের বাঙময় উৎসবে। বাঙালি হারিয়ে যায় উৎসবে। ভোর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে রাত পর্যন্ত।
বর্ষবরণের প্রধান অনুষঙ্গ চারুকলার এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশাল টেপা পুতুলে মা ও শিশুর অবয়ব ফুটিয়ে তুলে সামাজিক অবক্ষয় রোধের আহবান জানানো হয়েছে। ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’-এ প্রার্থনার মধ্যদিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪২৩-কে বরণ করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শাহবাগ দিয়ে রুপসী বাংলার মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হয় এ বর্ণিল যাত্রা।
সামনে-পেছনে ঢাকের বাদ্যের তালে তালে নৃত্য, আর হাতে হাতে ধরা বড় আকারের বাহারি মুখোশ। টেপা পুতুল আর বাঁশের কাঠামোতে মাছ, পাখি, হাতির মতো নানা লোকজ মোটিফে ফুটে উঠেছে বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য। সেই প্রতীক আবার ধারণ করেছে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের চিহ্ন, অমঙ্গলের আঁধার ঘোচানোর প্রত্যয়।
শোভাযাত্রার বিশাল ময়ূরপঙ্খী নাও নদীমাতৃক বাংলাদেশের সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠে এসেছে। দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখিয়েছে একরোখা ষাঁড়। গাছ আর পাখি, গরুর শিল্প-কাঠামো মনে করিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি আর পরিবেশের প্রতি দায়িত্বের কথা।
আয়োজকরা জানান, বিগত বছরজুড়ে শিশুহত্যা, মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কে অবনতির প্রেক্ষাপটে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার ‘থিম’ হিসেবে তারা বেছে নেন ‘সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’।
পহেলা বৈশাখের সকালে নগরীর অনেকে কড়া রোদ উপেক্ষা করে মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়েছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। বাংলা নববষর্কে কেন্দ্র করে জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণও বাঙালির বর্ণিল পোশাকের উজ্জ্বল সাজে সেজে উঠেছিল।
শিকড় সন্ধানী লোকজ সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চার দিনব্যাপী চৈত্রসংক্রান্তি, বৈশাখীমেলা ও বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করেছে সোনারগাঁওস্থ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। আনন্দোৎসবের প্রভাতি এ আয়োজন শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও মনোরম ঝিলের জলে নৌকাবিলাসে একঝাঁক বাউলের গান পরিবেশন মধ্যদিয়ে।
সকাল ৮টায় রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য ও আকর্ষণীয় এক শোভাযাত্রা বের করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় নববর্ষের এ শোভাযাত্রায়।
আর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাস। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
বাংলা একাডেমি চত্বরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। একক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বরচিত ছড়া-কবিতা পাঠের মধ্যদিয়ে একাডেমি বর্ষকে বরণ করে নেয়।
এ ছাড়া বিসিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাও বসিয়েছে একাডেমি নিজস্ব চত্বরে। নববর্ষ উপলক্ষে ‘বইয়ের আড়ং’ শিরোনামে একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের মেলার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি।
জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) বরণ করা হয়। মধ্যাহ্নভোজে দেশীয় বিশেষ খাবারে সদস্যরা সপরিবারে অংশ গ্রহণ করেন। সকাল ৮টায় প্রেসক্লাব সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য খৈ, মুড়ি-মুড়কি, পায়েস, বাতাসা ও মধ্যাহ্নভোজে সাদা ভাতের সঙ্গে দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিও (ডিআরইউ)।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও বাংলা সনের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।
চির নতুনের ডাক দিয়ে আসা পহেলা বৈশাখ যেন রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে বাঙালির মনে, যার প্রকাশ ঘটেছে নারী-পুরুষের রঙিন সাজে, শিশুদের মুখে ফুটে ওঠা আনন্দের হাসি আর বর্ণিল পোশাকে।
কাকডাকা ভোর থেকে নগরবাসীকে ছুটতে দেখা যায় রমনা পানে। বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন শুরুর বেশ আগে থেকেই সেখানে দলে দলে মানুষ সমবেত হতে থাকে। এক সময় পুরো রমনাই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
উৎসবে যোগ দিতে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের সঙ্গে বাবা-মার হাত ধরে রমনামুখী হয়েছে শিশুরাও। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আর্চওয়ে পার হয়ে পার্কে ঢুকতে হয়েছে সকলকে। সকাল ৭টার আগেই রমনায় প্রবেশে দীর্ঘ লাইনে পড়তে হয় মানুষকে।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে রমনা পার্ক ও আশপাশের এলাকাসহ পুরো নগরী। লাল ও সাদা রঙের শাড়িতে নারী, আর পাজামা-পাঞ্জাবিতে দেখা গেছে পুরুষদের।
বেশ কয়েকজন বিদেশীকেও দেখা গেছে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে রমনার উৎসবে যোগ দিতে। তাদের কারও কারও গালে ফুটে উঠেছে বৈশাখী আলপনা।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভোরের আবহ ধরে রাখতে যন্ত্রসঙ্গীতে রাগালাপ আর কোরাসে মুখরিত হয়ে ওঠে ভোরের বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে শুরু হয় বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’।
এরপর দিনভর বাদ্যযন্ত্রে নগরী মেতে ওঠে বর্ষবরণের বাঙময় উৎসবে। বাঙালি হারিয়ে যায় উৎসবে। ভোর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে রাত পর্যন্ত।
বর্ষবরণের প্রধান অনুষঙ্গ চারুকলার এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশাল টেপা পুতুলে মা ও শিশুর অবয়ব ফুটিয়ে তুলে সামাজিক অবক্ষয় রোধের আহবান জানানো হয়েছে। ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’-এ প্রার্থনার মধ্যদিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪২৩-কে বরণ করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শাহবাগ দিয়ে রুপসী বাংলার মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হয় এ বর্ণিল যাত্রা।
সামনে-পেছনে ঢাকের বাদ্যের তালে তালে নৃত্য, আর হাতে হাতে ধরা বড় আকারের বাহারি মুখোশ। টেপা পুতুল আর বাঁশের কাঠামোতে মাছ, পাখি, হাতির মতো নানা লোকজ মোটিফে ফুটে উঠেছে বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য। সেই প্রতীক আবার ধারণ করেছে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের চিহ্ন, অমঙ্গলের আঁধার ঘোচানোর প্রত্যয়।
শোভাযাত্রার বিশাল ময়ূরপঙ্খী নাও নদীমাতৃক বাংলাদেশের সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠে এসেছে। দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখিয়েছে একরোখা ষাঁড়। গাছ আর পাখি, গরুর শিল্প-কাঠামো মনে করিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি আর পরিবেশের প্রতি দায়িত্বের কথা।
আয়োজকরা জানান, বিগত বছরজুড়ে শিশুহত্যা, মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কে অবনতির প্রেক্ষাপটে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার ‘থিম’ হিসেবে তারা বেছে নেন ‘সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’।
পহেলা বৈশাখের সকালে নগরীর অনেকে কড়া রোদ উপেক্ষা করে মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়েছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। বাংলা নববষর্কে কেন্দ্র করে জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণও বাঙালির বর্ণিল পোশাকের উজ্জ্বল সাজে সেজে উঠেছিল।
শিকড় সন্ধানী লোকজ সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চার দিনব্যাপী চৈত্রসংক্রান্তি, বৈশাখীমেলা ও বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করেছে সোনারগাঁওস্থ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। আনন্দোৎসবের প্রভাতি এ আয়োজন শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও মনোরম ঝিলের জলে নৌকাবিলাসে একঝাঁক বাউলের গান পরিবেশন মধ্যদিয়ে।
সকাল ৮টায় রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য ও আকর্ষণীয় এক শোভাযাত্রা বের করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় নববর্ষের এ শোভাযাত্রায়।
আর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাস। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
বাংলা একাডেমি চত্বরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। একক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বরচিত ছড়া-কবিতা পাঠের মধ্যদিয়ে একাডেমি বর্ষকে বরণ করে নেয়।
এ ছাড়া বিসিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাও বসিয়েছে একাডেমি নিজস্ব চত্বরে। নববর্ষ উপলক্ষে ‘বইয়ের আড়ং’ শিরোনামে একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের মেলার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি।
জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) বরণ করা হয়। মধ্যাহ্নভোজে দেশীয় বিশেষ খাবারে সদস্যরা সপরিবারে অংশ গ্রহণ করেন। সকাল ৮টায় প্রেসক্লাব সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য খৈ, মুড়ি-মুড়কি, পায়েস, বাতাসা ও মধ্যাহ্নভোজে সাদা ভাতের সঙ্গে দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিও (ডিআরইউ)।


No comments:
Post a Comment