ঋতুস্রাব বা মাসিকের সময় তলপেটে কোনো ব্যাথা বা কষ্টদায়ক অনুভূতি হয় না, এমন নারীর সংখ্যা কম। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ ব্যাথার পরিমাণ যখন এমন হয় যে তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে, তখনই কেবল এটাকে অসুস্থতা বা ডিজমেনোরিয়া বলে গণ্য করা হয়। ডিজমেনোরিয়া দুই ধরনের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।
প্রাইমারি ডিজমেনোরিয়া
সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ বছরের তরুণীরা এতে বেশি ভোগেন। এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা নেই, তবু কারণ হিসেবে কিছু বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়ে থাকে। যেমন, মাসিকের সময় ব্যথার প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া, ঘরে-বাইরে অশান্তি, পরীক্ষার চাপ, বেকারত্ব, ভগ্নস্বাস্থ্য ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণায় কিছু হরমোনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে অন্তত একবার গর্ভধারণ এবং স্বাভাবিক প্রসবের পর এ সমস্যাটি আপনা আপনি সেরে যায়। গর্ভধারণ ও প্রসবের মাধ্যমে জরায়ু পরিপক্বতা লাভ করে এবং সাধারণত এরপর ডিজমেনোরিয়া হয় না। মাসিক শুরুর সঙ্গে এ ব্যাথা শুরু হয় এবং প্রথম দিনের পর আর ব্যাথা থাকে না। তলপেটে মোচড়ানো ধরনের ব্যাথা হয়। কোমরে ব্যাথা হতে পারে, ঊরু বা থাইয়ের ভেতরের অংশেও ব্যাথা হতে পারে। এ সময় ব্যাথার প্রভাবে রোগীকে বিমর্ষ দেখায়। তার বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে।
সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া
অনেক গাইনি রোগের কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হতে পারে, যেমন-তলপেটের ইনফেকশন, জরায়ুর টিউমার, পলিপ, জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি। বিবিধ কারণ থাকায় মাসিকের সময় ব্যথার ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত মাসিক চক্রের শেষ সপ্তাহে তলপেটে ভার ভার অনুভূত হয়। মাসিক শুরুর তিন-চার দিন আগে থেকেই ব্যথা হয়। মাসিক শুরু হলে ব্যথা কমতে থাকে। সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়ার জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই। প্রথমে অন্তর্নিহিত রোগটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। এরপর সে রোগের চিকিৎসাতেই ভালো হবে প্রতি মাসের এ যন্ত্রণা।
মাসিকে পেটে ব্যাথা সমাধান
সাধারণ পদ্ধতিঃ
কোন বোতলে গরম পানি ভরে বা কাপড় গরম করে তলপেটে ২০/২৫ মিনিট ছ্যাক লাগাতে হবে। এটা সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন করে করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে মাসিকের সময় ব্যাথা কমে যাবে।
এছাড়া আরেকটা পদ্ধতি আছে- সিজ বাথঃ
৩ মিনিট গরম পানিতে কোমর ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। পরের ২/১ মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে। এভাবে ২০/২৫ মিনিট সিজ বাথ নিতে হবে। এটাও সপ্তাহে টানা ৩/৪দিন নিতে হবে। শুধু পানি বা পানিতে কিছু লবন, বেকিং সোডা বা ভিনেগারও ব্যবহার করা যায়।
আরেকটা পদ্ধতি আছে- কেজেল ব্যায়ামঃ
কেগেল ব্যায়াম/কেগেল এক্সারসাইজ/ কেজেল এক্সারসাইজ (Kegel Exercises) প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রোণী এলাকা (পেলভিস) অর্থাৎ তলপেটের নিম্নভাগের মাংশপেশীর সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। এখানে কেগেল ব্যায়াম কিভাবে সঠিক ভাবে করতে হয় তার একটা স্টেপ বাই স্টেপ গাইড দেয়ার চেষ্টা করা হলো। কেগেল ব্যায়াম শ্রোর্ণী মেঝের পেশীকে দৃঢ এবং শক্তিশালী করে যা জরায়ু, মূত্রথলি এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে সাহায্য করে। আপনি প্রায় যে কোনো সময়ে শুয়ে বা বসে কেগেল ব্যায়াম করতে পারেন। এমনকি গর্ভবতী অবস্থায়ও করা যেতে পারে।
কেন কেগেল ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ সেটা আগে বুঝতে হবে। অনেক কারণে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান প্রসব, বয়স বৃদ্ধি, এমনকি মুটিয়ে গেলে বা ওজন বৃদ্ধি পেলেও এমন হতে পারে। এ কারণে শ্রোণী অঙ্গ থেকে যোনির অনেক পেশী ঢিলা হয়ে নিচের দিকে নেমে যেতে পারে। এতে প্রস্রাবের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া সহ আরো অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কেগেল ব্যায়াম কিছু অবশ্যম্ভাবী ঘটনাকে বিলম্বিত করে, শ্রোর্ণী অঙ্গ স্থানচ্যুতি এবং সম্পর্কিত উপসর্গ প্রতিরোধ করে আপনার তারুণ্য অনেকদিন ধরে রাখতে পারে। এছাড়া যাদের চরমপূলক লাভে সমস্যা হয় তাদের জন্যও এটা উপকার হতে পারে। কিভাবে কেগেল ব্যায়াম করতে হয়- সেটা জানার আগে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের পেশী চিহ্নিত করে নিতে হবে এবং কিভাবে পেশী সংকুচন এবং প্রসারণ করতে হয়।
সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তরঃ
এই ব্যথা কে বলা হয় DYSMENORRHOEA .. এটা adoloscent মেয়েদের বেশি হয়. এটা Physiological কারনেও হতে পারে আবার অন্য কোনো কারণ ও থাকতে পারে .এজন্যে Ultasonogram of Lower Abdomen করে কারণ বের করতে হবে..
*প্রতিকার :
১)Tab Algin /Norvis (৫০ mg )… অথবা Tab Butaphen (২০ mg )
১+১+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন
২)ব্যথা খুব বেশি হলে , Tab Dysmen / Fenaton (৫০০ mg )
১+১+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন
৩) Tab Seclo /Omep /Esoral (20mg )
১+0+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন ( খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে )
আর বিবাহিত রা সল্প মাত্রার পিল খেয়েই এই ব্যথা কমাতে পারেন . ০+০+১ — মাসিকের প্রথম ২১ দিন , ৩ মাস
*প্রতিকার :
১)Tab Algin /Norvis (৫০ mg )… অথবা Tab Butaphen (২০ mg )
১+১+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন
২)ব্যথা খুব বেশি হলে , Tab Dysmen / Fenaton (৫০০ mg )
১+১+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন
৩) Tab Seclo /Omep /Esoral (20mg )
১+0+১ —- যখন ব্যথা থাকে তখন ৩-৫ দিন ( খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে )
আর বিবাহিত রা সল্প মাত্রার পিল খেয়েই এই ব্যথা কমাতে পারেন . ০+০+১ — মাসিকের প্রথম ২১ দিন , ৩ মাস
মাসিক চলাকালিন ছ্যাক নিব না আগে? সপ্তাহ বলতে কি পুরো মাস বুঝানো হয়েছে?
সপ্তাহ বলতে মানে প্রতি সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন। মাসিক হোক বা না হোক। যখন ব্যথা হয়, তখনও ছ্যাক নিতে পারেন।
কোন ঔষধ কি খাওয়া যাবে?
আগে ডাক্তার দেখাতে হবে, তারপর ব্যথার ধরণ বুঝে ঔষধের ব্যবস্থা করতে হবে। মাসিকের ব্যাথার জন্য “গরম পানির ব্যাগ” ব্যবহার করবেন, আর বেশী পানি খাবেন, এতে রক্ত জমাট না বেধে সাধারন প্রক্রিয়ায় বের হবে । ভিতরে আগুল দিয়ে পরিস্কার করবেন না , পরিস্কার প্যাড ও কাপড় ব্যবহার করবেন , যাদের সব সময় ধাতু বের হয় তাদের সাধারনত মাসিকের সময় ব্যাথা হয় ।
আমার মাসিকের সময় যখন ব্যথা করে তখন পেইন কিলার ঔষধ খাই, এতে কি কোন ক্ষতি হবে?
এটা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। খুব পেইন হলে ঔষধ খাওয়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে।
প্রস্রাব করার সময় দু-একবার প্রস্রাব করার প্রবাহ বন্ধ করে দিন। প্রস্রাব করার সময় কেগেল ব্যায়াম করবেন না। এতে পেশী আরো শিথিল হয়ে যাবে বা প্রস্রাব করা অপূর্ণ থেকে যাবে যা মূত্রনালিতে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। লাইন গুলো কনফউজিং, ক্লিয়ার করে বলবেন প্লিজ?
এটা পেলভিস বা শ্রোণী মেঝের পেশী খুঁজে নেয়ার প্রাথমিক ধাপ। কেজেল ব্যায়াম খুব আইসোলেট টাইপের ব্যায়াম। শুধু একটা নির্দিষ্ট পেশীর দিকেই নজর দিতে হয়। যারা বিয়ে করেননি বা যোনির ভিতর আঙুল ঢুকিয়ে সঠিক পেশী খুঁজে নিতে চাইবেন না তারা কিভাবে বুঝবেন যে কোন পেশীগুলো আসলে পেলভিস পেশী? তাই প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক পেশী নির্বাচন করতে প্রস্রাব করার সময় দু একবার প্রস্রাব বন্ধ করে দিলে দেখবেন ভিতরে পিছনের দিকে (তলপেটের নয় কিন্তু) কিছু পেশী সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। ঐ পেশীগুলোই পেলভিস। যখন ব্যায়াম করবেন তখন খেয়াল রাখতে হবে যেন ঐ পেশীগুলোতেই চাপ দিয়ে সংকুচন করছেন। তলপেটের পেশী নয়।বলা হয়, কেজেল ব্যায়াম যখন তখন করা যায়, তবে প্রস্রাব করার সময় নয়। পায়খানা-প্রস্রাব করার সময় শুধু পায়খানা-প্রস্রাবের দিকেই নজর রাখা উচির যাতে পায়খানা-প্রস্রাব ক্লিয়ার হয়। অপূর্ণ না থাকে।আশা করি বুঝতে পারছেন। আরো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই প্রশ্ন করবেন।
আমি গত ১০ দিন ধরে কেজেল ব্যায়াম করার চেষ্ঠা করছি। পেলভিস পেশী সংকুচন করে শ্বাস-প্রশ্বাস অনেক কষ্টসাধ্য মনে হচ্ছে। তখন সহজে দম নেয়া যায়না। আমিকি সঠিকভাবে ব্যায়ামটি শুরু করতে পেরেছি? প্রথম-প্রথম কি এমনই হয়?
আমি যৌনমিলন সময় দীর্ঘ করার জন্য এটা শুরু করেছি। সম্পুর্ণ ফল পেতে কতদিন সময় লাগতে পারে? আমার পরবর্তী ছয় মাস সেক্স করার কোন চান্স নেই। এসময়টি কি ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া যাবে? বেশিদিন করলে কোন সমস্যা হবে কিনা?
হ্যাঁ, প্রথম প্রথম এমন হতে পারে। ৩ থেকে ৬ মাসে একটু একটু সাফল্য আসবে যদি নিয়মিত একাগ্রতার সাথে চালিয়ে যেতে পারেন। সেক্স করার আগে বা পরে বলে কথা নেই। সব সময় নিয়মিত করে যাওয়া উচিত। কোন সমস্যা নাই।
পেলভিস পেশী খুঁজাটা বেশ কঠিন। আমিও গত ১০ দিন গরে ট্রাই করছি। পেলভিস পেশী সংকুচন করা ও দম ছাড়ার সময় (৩ থেকে ৫ সেকেন্ড) প্রোস্টেট‘এ (মূত্রস্থলীর গ্রীবা সংলগ্ন গ্রন্থিবিশেষ) অনেক জোরালো অনুভূতি কাজ করে। অর্থাৎ প্রতিবার প্রোস্টেট দ্রুত কিছুটা সংকুচিত হয়ে নড়াচড়া করে ওঠে। আমিকি সঠিকভাবে ব্যায়ামটি করতে পারছি? ব্যায়াম করার সময় এমনাটাই কি হওয়ার কথা?
হ্যাঁ, প্রথম প্রথম একটু সমস্যা বা এরকম হয়ে পারে। সহজ করে বললে, পেশিটা অণ্ডথলির গোড়া থেকে মেরুদণ্ডের শেষ পর্যন্ত চলে গেছে। প্রস্রাব করার সময় হঠাত প্রস্রাব আটকে রাখলে ঐ জায়গাটা শক্ত হয়ে যায়, ঐটাই পেলভিস পেশি।
No comments:
Post a Comment