Monday, April 18, 2016
শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জয়কে অপহরণ করবে, হত্যা করবে। এটা কিন্তু আমেরিকার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। কোর্টে তারা (আমেরিকা) যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে সেখানে বেরিয়ে এসেছে সেই শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানদের নাম। যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে মায়াকান্না হয় কেন? সবারই মানবাধিকার আছে, আমাদের নেই! যারা ষড়যন্ত্রকারী তাদের জন্য মানবাধিকার। যারা ভিকটিম সেখানে মানবাধিকার হরণ হয় না? সেটা নিয়ে তোলপাড় হয় না। তাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত। তাদের নাম বিদেশে তদন্তে আসে। আর অপরাধীকে গ্রেফতার করা হলে যদি অপরাধ হয়, তাহলে কোনো হত্যার বিচার হবে না। তারা একজন সাংবাদিক দেখল; তার অপরাধটা দেখেনি। অপরাধটা তো করেছে আমেরিকায়।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা: দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নগর নেতা এ কে এম রহমত উল্লাহ, আবুল হাসনাত, শাহে আলম মুরাদ, সাদেক খান প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে, যখন আমার মা-বাবা, ছোট ভাইকে হত্যা করা হলো তখন ইনডেমিনিটি দেয়া হলো, সে বিচার করা যাবে না। সেই বিচার আমরা করেছি। আমাদের কি কোনো মানবাধিকার নাই? আমাদের হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আমরা বিচার করতে পারবো না? সবার মানবাধিকার আছে, অধিকার শুধু আমাদের নাই। আওয়ামী লীগের কেউ হত্যার শিকার হলে অধিকার নাই?’ মানবাধিকার কর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা মানবাধিকারের কথা বলেন তারা বিএনপি-জামায়াতের কাছে কিভাবে যান? তাদের (বিএনপি-জামায়াত) কাছে পোড়া মানুষের গন্ধ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ব্লগে লেখার কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আরেক শ্রেণি বেরিয়েছে কি? মুক্ত চিন্তা। মুক্ত চিন্তা যদি নোংরা ভাষায় লেখা হয়, মুক্তচিন্তা যদি পর্ন হয়, এটা কখনই মুক্ত চিন্তা নয়। এটা বিকৃত মানসিকতা। পড়তে লজ্জা হয়, ঘৃণা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। রুচিবোধ রেখে লিখুক। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ যার যার ধর্ম পালন করতে পারবে। আমাদের ইসলাম ধর্মেও সেই কথা বলা আছে। আমিও ধর্ম মানি। কিন্তু যখন; আমি যাকে মানি তার সম্পর্কে বিকৃত কথা লেখে, তখন আমার খারাপ লাগে। তার সম্পর্কে কেউ নোংরা কথা বললে মানব না। আসলে ষড়যন্ত্রকারীদে চরিত্র নানা রকম থাকে। একইসাথে ব্লগার হত্যায় জড়িতদের সমালোচনা করেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুন-খারাবী করার দায়িত্ব আল্লাহ কাউকে দেয়নি। আল্লাহ কাউকে বিচারের দায়িত্ব দিয়ে দেননি। পবিত্র কোরআনেও আছে শেষ বিচার আল্লাহ নিজেই করবেন। বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির ইতিহাসটা কী! ২০০১-০৬ পর্যন্ত অপকর্মের কারণেই এক-এগারো এসেছিলো। বিরোধীদলে থাকতে ২০১৩ সালে তারা নির্বাচন ঠেকানোর নামে মানুষ পুড়িয়ে মারলো। যারা রাজনীতি করে তারা মানুষের জন্য রাজনীতি করে, পুড়িয়ে মারা জন্য নয়। ছোট শিশুকে পর্যন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তা ঘটিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। তারা কিভাবে এ দেশের মানুষের সমর্থন পায়! যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তারা কিভাবে এদের সাথে দেখা করে? শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এটা বিস্ময় নয়। যারা জাতির মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে তারা যখন ক্ষমতায় আসে খুব স্বাভাবিক ভাবে সে দেশের উন্নতি হবে। যারা স্বাধীনতা চায়নি, গণহত্যাকারী, তারা ক্ষমতায় থাকলে সে দেশের উন্নয়ন হবে না। এটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধু সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পূনর্গঠন করছিলেন তখনও স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত ছিলো। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক শক্তির ষড়যন্ত্রের হাত ছিলো। সেই ষড়যন্ত্রের পথ ধরে ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। সেই পথ সোজা ছিলো না। যখনই আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেছে তখনই ষড়যন্ত্র হয়েছে। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চেয়েছে, কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা চাইতো না।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment