ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণের বন্ধে একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল।
শুক্রবার প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের জন্য উত্থাপন করে নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভেনিজুয়েলা এবং সেনেগাল। ইসরায়েল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবটিতে ভেটো প্রদানের জন্য তদবির করেছিল। তাদের চাপ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দেওয়ায় প্রস্তাবটি সহজেই পাস হয়।
হস্তক্ষেপের জন্য ইসরায়েল ট্রাম্পকে অনুরোধ করার পর চাপে পড়ে নিজেদের তৈরি খসড়া প্রস্তাবটি তুলে নিয়েছিল মিসর, কিন্তু একদিন পর মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, সেনেগাল ও ভেনিজুয়েলা প্রস্তাবটি ফের পেশ করে।
জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাব থেকে যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত ইসরায়েলকে রক্ষা করে থাকে, কিন্তু ইসরায়েল ও ট্রাম্পের প্রবল চাপ থাকা সত্ত্বেও এবার দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন প্রস্তাবের বিরোধিতা করা থেকে বিরত থাকে।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে, বিপক্ষে কোনো ভোট পড়েনি। যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রবল করতালির মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাস হয়। ফিলিস্তিনিরা যে ভূমিতে ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে, সেখানে ইসরায়েলের ক্রমাগত বসতি নির্মাণে ওবামা প্রশাসনের অসন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এ ভূমিকায়।
প্রস্তাবে 'পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূমিতে বসতি নির্মাণ তাত্ক্ষণিকভাবে পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য' ইসরায়েলের প্রতি দাবি জানান হয়। এতে আরো বলা হয়, ওই ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণের 'কোনো আইনি বৈধতা নেই এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন'।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জাতিসংঘের এই প্রস্তাব মানবেন না তিনি। অপরদিকে ফিলিস্তিনি নেতারা জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন।
প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর নিউজিল্যান্ড ও সেনেগাল থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে ইসরায়েল। মালয়েশিয়া ও ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। প্রস্তাব পাসের প্রতিক্রিয়ায় এক টুইটার মন্তব্যে ট্রাম্প বলেছেন, ''২০ জানুয়ারির পর জাতিসংঘের ঘটনাগুলো অন্যরকম হবে। ''
ইসরায়েলের দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদি বসতি দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের অন্যতম কারণ, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে শান্তির পক্ষে অন্যতম বাধা হিসেবে বিবেচনা করে ফিলিস্তিনি পক্ষ।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। তারপর থেকে দখলকৃত ভূখণ্ডে ১৪০টির মতো আবাসিক এলাকা গড়ে তোলে। এসব আবাসিক এলাকায় প্রায় পাঁচ লাখ ইহুদি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব বসতিকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়, তবে ইসরায়েল তা মানে না।
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি ও রয়টার্স
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি ও রয়টার্স
No comments:
Post a Comment