চলতি বছরে প্রায় সাড়ে সাত লাখ বাংলাদেশি কর্মী কাজের জন্য বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। এক্ষেত্রে পুরষ কর্মীদের পাশাপাশি নারী কর্মীদেরও বিদেশে যাওয়ার হার বেড়েছে। তবে অভিবাসন খাতে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। গত চার দশকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করা সম্ভব হয়নি। দেশে-বিদেশে মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম এখনো কমেনি। মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসন এখনো আশানুরুপ হয়নি।
গত বুধবার শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রামরু এই তথ্য জানিয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০১৬, সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রামরু’র চেয়ারপারসন অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক।
তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, চলতি বছরে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৯ হাজার ২৪৯ জন কর্মীর উপসাগরীয় ও অন্যান্য আরব দেশসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অভিবাসন করেছে। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি। এই সংখ্যা বাংলাদেশের অভিবাসন খাতে একটি ব্যাপক সাফল্য। নারী অভিবাসনও গত বছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেড়েছে। সৌদি আরব ও কুয়েতের মতো পুরানো শ্রমবাজারে আবারো কর্মী যেতে শুরু করেছে। তবে চলতি বছরে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে যা গত বছরের তুলনায় ১১ তাংশ কম।
তিনি বলেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে অভিবাসন এবং উন্নয়ন বিষয়ক বৈশ্বিক ফোরামের নবম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ এই সম্মেলনের মাধ্যমে অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও অধিকারের দাবি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। দেশের নিরাপত্তা ও অভিবাসন ইস্যুতে নিজেদের জোরালো অবস্থান দেখাতে বাংলাদেশকে তার নৈতিক ও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শাহদীন মালিক বলেন, বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা বাড়ার সাথে কিছু সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। কেউ অবৈধভাবে বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়লে সরকার বলছেদায়িত্ব নেবে না। এটা মধ্যযুগীয় চিন্তা। সরকারকে এই অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে। একইসঙ্গে অনেক কর্মী বিদেশে গিয়ে অপহরণকারীদের হাতে অপহূত হয়ে মুক্তিপণ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এসব পরিবারকে সর্বস্ব বিক্রি করতে হচ্ছে। এই সিন্ডিকেট অপরাধ দমনে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
No comments:
Post a Comment