হার দিয়েই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিকূল নিউজিল্যান্ডে দীর্ঘ সফর। নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম ম্যাচে জয়-পরাজয়ের চেয়ে অবশ্যই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সগুলো জরুরি।
বৃহস্পতিবার রান পেয়েছেন সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম। বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান। সবচেয়ে বড় কথা চোট কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে ২ উইকেট পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেছেন রুবেল হোসেন-তাসকিন আহমেদ।
ফাঙ্গেরাইয়ের কোবহ্যাম ওভালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টার বেশি সময় পর শুরু হয় খেলা। বাংলাদেশ ইনিংসের একাদশ ওভার শেষে আবার বৃষ্টি নামলে ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪৩ ওভারে। সবার অবদানে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান করে অতিথিরা।
ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতি জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ড একাদশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৪৫ রান। ৪১ ওভার ৪ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
টস জিতে ব্যাটে নেমে শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারায় বাংলাদেশ। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। পাল্টা আক্রমণে নিজেদের ওপর থেকে চাপটা সরিয়ে নেন ইমরুল। শুরুতে একটু নড়বড়ে হলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে ফিরে পান সৌম্য। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গড়েন ৫৫ রানের জুটি।
ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন ৭টি চারে ২৯ বলে ৩৬ রান করা ইমরুল। রানে ফেরার লড়াইয়ে থাকা সৌম্য ফিরেন ৪৭ বলে ৪০ রান করে। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিডঅনে ক্যাচ দেন এই তরুণ। বিপিএলের সেরা খেলোয়াড় মাহমুদউল্লা ৪৬ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ রান করে স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়েন।
রানে ফেরার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব। দুই অঙ্ক ছুঁয়েই ফিরেছেন সাব্বির রহমান। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে আসা তানভীর রান আউট হওয়ার আগে করেন ১০ রান। ছন্দে থাকা মুশফিক ফিরেন ৪১ বলে ৪৫ রান করে।
শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় আড়াইশ পর্যন্ত গেল না সংগ্রহ। অপরাজিত ২১ রানের ইনিংসে দলকে তার কাছাকাছিই নিয়ে যান অধিনায়ক মাশরাফি।
গ্যাপ বের করতে সমস্যা হয়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। প্রান্ত বদল করে সচল রেখেছেন স্কোর বোর্ড। বাজে বলে আদায় করেছেন বাউন্ডারি। সব মিলিয়ে তাদের ব্যাটিংয়ে ছিল দ্রুত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ছাপ।
এই ম্যাচে চোখ ছিল মুস্তাফিজুর রহমানের ওপর। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট নেন মুস্তাফিজ। তবে শুরুর সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি অতিথিরা। বেন স্মিথ ও ভারত পপলির দৃঢ়তায় প্রতিরোধ গড়ে স্বাগতিকরা। নিজের দুই ওভারে দুই থিতু ব্যাটসম্যানের সঙ্গে অধিনায়ক কোল ম্যাককনকিকে বিদায় করেন সাকিব।
জয়-পরাজয়ের চেয়েও এই ম্যাচে বেশি জরুরি ছিল বোলারদের নিজের লেংথ বুঝে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া। তাই ঘুরে ফিরে সব বোলারকেই বোলিংয়ের সুযোগ দেন অধিনায়ক মাশরাফি। সবচেয়ে বেশি ৯ ওভার বল করান লেগ স্পিন অলরাউন্ডার তানভীর হায়দারকে দিয়ে। ৫৯ রান দিয়েছিলেন উইকেটশূন্য; অবশ্য তার বলে কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
হেনরি শিপলি ও উইকেটরক্ষক বেন হর্নের ব্যাটে খেলায় ফিরে স্বাগতিকরা। শিপলিকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন মুস্তাফিজ। তবে অবিচল ছিলেন হর্ন। ব্রেট হ্যাম্পটনের সঙ্গে তার দারুণ জুটিতে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে নিউজিল্যান্ড একাদশ।
৫৩ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন হর্ন। ২১ বলে অপরাজিত ২৯ রানের আরেকটি কার্যকর ইনিংস খেলেন নয় নম্বর ব্যাটসম্যান হ্যাম্পটন। সাকিব ৪১ রানে নেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজ ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৩৯ রান।
No comments:
Post a Comment