মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান শুরু করে ২৫ আগস্ট থেকে। এই অভিযানে ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের গণধর্ষণ করেছে সেনারা। বৃহস্পতিবার ৩৭ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এই প্রতিবেদনকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণধর্ষণ ও নৃশংসতার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের মাটি থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিরতরে নিধন করার অভিযানে সে দেশের সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা একটি অন্যতম অস্ত্র হলো- গণধর্ষণ। তবে ধর্ষণের সঙ্গে যে সীমাহীন নৃশংসতা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঘটিয়েছে, তা এতোটাই লোমহর্ষক যে, মানব মনের ভয়ংকরতম দুঃস্বপ্নকেও হার মানিয়ে দেয়। এইচআরডব্লিউ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৫২ জন রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীর সাক্ষাতকার নিয়েছে। এদের মধ্যে ২৯ জন ধর্ষণের শিকার। তাদের বেশ কয়েক জনের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এইচআরডব্লিউ’র নারী অধিকার বিষয়ক গবেষক স্কাই হুইলার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণধর্ষণের ভয়াবহতার ব্যাপকতা নিয়ে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ভয়াবহ সঙ্কট পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে আমি ভেঙ্গে পড়েছি। কিন্তু এর চেয়ে বেশি কষ্ট তখন পাই, যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের ওপর পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যৌন সহিংসতার জন্য দায়ী সেনাদের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করতে হবে। হুইলার বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এখনই। নইলে আগামীতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাদের হামলা অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে।
No comments:
Post a Comment