Social Icons

Monday, November 6, 2017

উচ্চশিক্ষায় দক্ষিণ কোরিয়া

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সব কিছুর মতো শিক্ষা খাতেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়া এখন যেন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে সবারই স্বপ্ন থাকে উচ্চশিক্ষার জন্য উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ অথবা অস্ট্রেলিয়ার ডিগ্রি নেওয়ার। কিন্তু কেন এই সব দেশ বাদ দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে বেছে নেওয়া? এর অনেকগুলো উত্তর হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের গবেষণা খাতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া, কোরিয়ান টেকনোলজি ও লাইফ স্টাইলও কোরিয়ায় যাওয়ার অন্যতম কারণ। যদিও ভাষাগত কিছু সমস্যা থাকে। তবে কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য সব চেয়ে বড় যে বিষয়টি কাজ করে তা হলো ভালো স্কলারশিপ। এর মধ্যে টিউশন ফি‍ ও থাকার খরচ অন্যতম। যে কারণে শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম জবের কথা একদম চিন্তা করতে হয় না। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় একজন অধ্যাপকের ফান্ড পাওয়াটাও কিন্তু একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর নির্ভর করে। তাই কোরীয় অধ্যাপকেরা ভালো প্রজেক্ট পাওয়ার জন্য অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় স্বপ্ন পূরণের দেশ হতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া। কারণ দেশটির উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে সেখানকার শিক্ষার মানও হয়েছে অনেক উন্নত।
দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য রয়েছে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি, ব্যাচেলরস ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি ও ডক্টরেট প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার সুযোগ। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য নিশ্চিন্তে বেছে নেওয়া যায় দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে বছরে দুটি সেমিস্টারে ভর্তি করানো হয়। স্প্রিং সেমিস্টার মার্চ থেকে জুন এবং ফল সেমিস্টার সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাথমিক যে যোগ্যতার দরকার তা হলো এইচএসসি পাস, টোফেল আইবিটি স্কোর ৭৯ থেকে ৮০ অথবা আইইএলটিএস স্কোর ৬-এর বেশি হতে হবে। এ ছাড়া কোরিয়ান ভাষায় পড়াশোনায় ইচ্ছুক হলে সেক্ষেত্রে টেস্ট অব প্রফিসিয়েন্সি ইন কোরিয়ান (টপিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ভর্তির বিষয়গুলোর মধ্যে লোক প্রশাসন, সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ, বিবিএ, হেলথ সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, ফুড সায়েন্স ম্যানেজমেন্ট, হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ট্যুরিজম, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, থিয়েটার অ্যান্ড ফিল্ম, ইঞ্জিনিয়ারিং, কোরিয়ান পেইন্টিং, ডান্স ইত্যাদি বিষয়ে এখানে পড়ানো হয়। এখানে পড়াশুনায় যে পরিমাণ খরচ হতে পারে তা হলো সরকারি অথবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বছরে প্রায় ৪ থেকে ১০ হাজার ডলার টিউশন ফি দিতে হয়। প্রতি মাসে থাকা-খাওয়া বাবদ প্রায় ৩০০ ডলার খরচ হয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের ওয়েবসাইটসহ ইন্টারনেটে বৃত্তি সম্পর্কে জানা যাবে। ভর্তির প্রক্রিয়া হলো প্রথমেই অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আবেদনপত্র সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই পাওয়া যায়। আবেদন করার ৬ থেকে ৮ মাস আগে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যাবে। যথাযথভাবে পূরণ করা আবেদনপত্র, সব সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের ইংরেজি ভার্সন, অফার লেটার, ভাষা শিক্ষার সনদ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। আরো কিছু তথ্য হলো দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার জন্য মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স বাবদ প্রতিমাসে ২০-৩০ ডলার দিতে হয়। এক সেমিস্টার শেষ হওয়ার পর প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের অনুমতি পাওয়া যায়। তবে সেমিস্টারের বিরতির সময় কাজ করার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য ক্রেডিট স্থানান্তরেরও সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষারত কোর্সের অর্ধেকের কম ক্রেডিট এবং সিজিপিএ অবশ্যই বি-গ্রেড থাকতে হবে। এখানে সাধারণত এমএস ডিগ্রির জন্য ২ বছর লাগে। পিএইচডি ৩-৪ বছর। কম্বাইন এমএস পিএইচডি ৫-৬ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস ডিগ্রি শেষ করে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী পিএইচডি করছেন অস্ট্রেলিয়ায়। অনেকেই আছেন কানাডা ও আমেরিকায়। যে কেউ কোরীয় এমএস পিএইচডি ডিগ্রি শেষ করে অন্য যেকোনো দেশে আবেদন করলে ওই সব দেশের অধ্যাপকরা এই ডিগ্রীর মূল্য দেয়। তবে একটি কথা বলা যায়, স্বপ্ন পূরণ করতে হলে অবশ্যই সাহসী হতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates