বিশ্বব্যাপী অনলাইন ভিত্তিক বাণিজ্য উম্মুক্ত থাকলেও, উম্মুক্ত নেই সেই বাণিজ্যের পুরোদস্তরে পেমেন্ট সার্ভিস।যার কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে আউট সোসিং এ তরুণরা নিজেদেরকে নিযোজিত রাখলেও তুলে ধরলেও পাচ্ছে না সমন্বিত অর্থনীতিতে তাদের উপার্জিত অর্থ। কারণ পেমেন্ট সেবা(পেপল জুম সার্ভিস) না থাকায় কয়েকটি মাধ্যম হয়ে টাকা পাচ্ছে এসব আউটসোর্সারা।আর এর কারণে ডলার এক্সচেঞ্জ হয়ে কয়েকধাপে কমে যাচ্ছে সেই অর্থ। তবে সম্প্রতি পেপল পেমেন্ট সিস্টেম চালু হওয়ায় কারণে সে দুর্বোধতা থাকবে না বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।আর পরিপূর্ণ এই সেবা চালু থাকলে এবং সিকিউপিটি ব্যবস্থাপনা থাকলে আগামী দিনগুলোতে তাদের এই অর্থ বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পেপল পেমেন্ট সিস্টেম জুম ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে চালু হয়েছে। পেপল সিস্টেমের এই সেবা নিয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এম. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, যে কোন একাউন্ট হোল্ডার খুব সহজেই এখন অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারেন। বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীরা এখন এই বৈধ চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হবে। তিনি বলেন, এই সেবার মাধ্যমে শুধু ফ্রিল্যান্সাররাই নন, অনাবাসী বাংলাদেশীরাও এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন এবং ঝামেলা মুক্ত এইইলেকট্রনিক চ্যানেল ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।
আইসিটি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম আবু নাসের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারি অনাবাসী বাংলাদেশী জুমের মাধ্যমে তাদের পেপল একাউন্ট ব্যবহার করে সরাসরি ৪০ মিনিট থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে বাংলাদেশে তাদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠাতে পারবে। তিনি বলেন, বিশ্বে ২০৩টি দেশে পেপল সুবিধা রয়েছে। এই ২০৩টি দেশের মধ্যে ২৯টি দেশে পেপল পূর্ণাঙ্গ সেবা দিচ্ছে। ১০৩টি দেশের জন্য শুধুমাত্র অন্তর্মুখী সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এই সেবাটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে চালু হয়েছে। দেশটি বংলাদেশের ৪৫ শতাংশ আউট সোর্সিং বাজার কাভার করেছে। খুব শিগগিরই অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের জন্য সার্ভিসটি সম্প্রসারণ করা হবে। জুম সার্ভিসের আওতায় রেমিটেন্সের পরিমাণ ১ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হলে ফ্রিল্যান্সাররা বিনামূল্যে এই সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবে। জুম সার্ভিসের আওতায় যে কেউ এক সঙ্গে ১০ হাজার ডলার পাঠাতে পারবেন এবং গ্রাহকরা ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী শ্রমিকরা অক্টোবর মাসের প্রথম ১৩ দিনে ৫৬৬ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছে। বিগত বছরের এ সময়ে রেমিটেন্স এসেছিল, ১৪২ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, বিশ্বে অনলাইনে শ্রমদাতা (আউটসোর্সিং) দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও পাঠদান বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউট (ওআইআই)’-এর একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভারত অন্যসব দেশের চেয়ে এগিয়ে প্রথমস্থান অধিকার করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অনলাইনে শ্রমদান বা অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রে ভারত ২৪ শতাংশ অধিকার করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১৬ শতাংশ ও যুক্তরাষ্ট্র ১২ শতাংশ অধিকার করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, রাশিয়া, ইতালি ও স্পেন বাংলাদেশের পেছনে অবস্থান করছে।
তাই সরকার যদি এ খ্যাতে তরুণদেরকে উৎসাহিত এবং তাদের উপার্জিত অর্থের একটা বৈধ ও সরাসরি চ্যানেলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তরুণদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে তাহলে এ খ্যাত থেকে যে অর্থ আসবে তা রেমিটেন্সকে আরও শক্তিশালী করবে। সেই সাথে দেশে আইটি পার্ক, অনলাইন ব্যবস্থাপনা এবং ব্যাংকিং সেবায় অনলাইন সোসিং একটা আলাদা সেবা চালু থাকে তাহলে প্রতিবছর দেশে এই সেবা থেকে বর্তমান তরূণ প্রজম্ম বড় একটা বাণিজ্য দিতে পারে। সেই সাথে প্রতিযোগিতায় ভারতে পেছনে ফেলে শীর্ষ স্থান দখল করারও যথেষ্ট সম্ভবনা তৈরী হতে পারে।
No comments:
Post a Comment