Social Icons

Monday, January 29, 2018

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেয়ার অাগে জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

কার না মন চাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে। তবে এর জন্য ভালো প্রস্তুতিও দরকার। জিআরই, স্যাট, আইইএলটিএস বা টোফেল করা, প্রয়োজনীয় ভাষা শেখা, দরকারি কাগজপত্র জোগাড়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন, স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ছাড়াও আছে নানা ঝামেলা। সামলাবেন কীভাবে?

এইচএসসির পর বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ভিনদেশে পাড়ি জমান অনেক শিক্ষার্থী। পড়াশোনার অনেক সুযোগ আছে বাইরের দেশগুলোতে। দরকারি তথ্য না জানার কারণে যোগ্যতা থাকার পরও উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না অনেকে। বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোনোর পর মেলে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ। তবে সব তথ্য জানা থাকলে তা সামাল দেওয়া কঠিন নয়। যোগ্যতা থাকলে সিদ্ধান্ত এখনই

যুক্তরাজ্যের লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির পরিচালক মার্ক বিকারটন জানান, “যোগ্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয় আগের সব পরীক্ষার ফলাফল, আইইএলটিএস ও আর্থিক সামর্থ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে। ব্যাচেলর পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিকে সিজিপিএ ৩.০ এবং আইইএলটিএসে ৫.৫ থাকতে হয়। তবে মাস্টার্সের ক্ষেত্রে ৬.০ থাকতে হবে আইইএলটিএসে।”


বিদেশে ভর্তির বেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচনে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অভিজ্ঞরা। ভুল তথ্য জেনে নামসর্বস্ব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে উচ্চশিক্ষা তো অনিশ্চিত হবেই, সেই সঙ্গে অর্থ আর সময়ও নষ্ট হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষাবিষয়ক সরকারি ওয়েবসাইট কিংবা কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেই দরকারি সব তথ্য পাবেন। যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান সেটির মান কেমন, দেশটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির র‌্যাংকিং কত, তা জেনেই ভর্তির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কেমন খরচ হবে, কোনো আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে কি না, খণ্ডকালীন কাজের অনুমতি মিলবে কি না-সব জেনে তবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দরকারি সব তথ্যই পাওয়া যাবে অনলাইনে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য জেনে নিজের যোগ্যতা ও আর্থিক সামর্থয অনুযায়ী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক সাইটগুলোতে।

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশন শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই ভর্তি আবেদনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন অভিজ্ঞরা। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে ফরমের সঙ্গে সাধারণত পাসপোর্ট আকারের ছবি, সব পরীক্ষার সনদ, নম্বরপত্রের ফটোকপি (নোটারি করা কপি পাঠাতে হয় অনেক ক্ষেত্রে), সুপারিশপত্র, পারিবারিক আয়ের তথ্য, পাসপোর্ট, মেডিক্যাল সনদ ইত্যাদি যুক্ত করতে হয়।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি আবেদনের অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে ‘ভাষা দক্ষতা’। ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য প্রচলিত আছে আইইএলটিএস, টোফেল, স্যাট, জিম্যাট প্রভৃতি পরীক্ষা। এসব পরীক্ষার মধ্যে প্রার্থীর কোনটি দরকার, কত স্কোর লাগবে তা নির্ভর করে দেশ ও কোর্সের ওপর। 

বেশির ভাগ দেশে আইইএলটিএস চাওয়া হয়, থাকতে হয় ৫.৫ থেকে ৬ পয়েন্ট। তবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ কিছু কিছু দেশে টোফেল (আইবিটি/পিবিটি) গ্রহণযোগ্য। আইবিটিতে সাধারণত ৯০-১০৫ অথবা পিবিটিতে থাকতে হয় ৫০০-৬২০ স্কোর। এ বিষয়ে আগে খোঁজ নিয়েই তবে আইইএলটিএস বা টোফেল করা উচিত। ভাষা দক্ষতার এ পরীক্ষায় এমন সময় অংশ নেওয়া উচিত, যাতে ফল খারাপ হলেও পরে আবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায়। এসব পরীক্ষার ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাবে বাংলাদেশে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আমেরিকান সেন্টারে।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দেশভেদে সাধারণত বছরে দুই থেকে তিনবার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারেন। ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু করতে হয় সেশন শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন মাস আগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন ফরম সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ আবেদন করতে হয়।

শিক্ষার্থীদের পাঠানো আবেদনপত্র ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্য শিক্ষার্থীদের ঠিকানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভর্তি শাখা’ ডাকযোগে ভর্তির অনুমতিপত্র বা ‘অফার লেটার’ পাঠিয়ে থাকে। একাডেমিক পরীক্ষায় ফল ভালো হলে ভর্তির অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্যান্য যোগ্যতা বা কাগজপত্রের গুরুত্বও কম নয়। ইংরেজি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষায় ভালো স্কোর থাকলে ভর্তি সহজ হয়ে যায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পেলেই যে দেশটিতে পড়ার সুযোগ মিলবে তা কিন্তু নয়। স্টুডেন্ট ভিসা না পেলে সব পরিশ্রমই বৃথা যাবে। অফার লেটার পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে। বিভিন্ন দেশ স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয়। তবে আবেদনপ্রক্রিয়া প্রায় একই।

ভিসা পেতে কিছু দেশে সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হতে হয়। তবে বেশির ভাগ দেশেই এখন সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘অফার লেটার’ পাঠালেই কোনো কোনো দেশের স্টুডেন্ট ভিসা প্রায় নিশ্চিত। আবার কোনো দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পাওয়া সহজ হলেও ভিসা পাওয়া কঠিন।

কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস বা কর্তৃপক্ষ ভিসা দেয়। ‘আবেদনকারী পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে আসবে কি না’-এমন প্রশ্নের জবাবে সদুত্তর দিতে না পারলে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বিভিন্ন উচ্চশিক্ষাবিষয়ক সাইটের পরামর্শ, অবৈধ বা ভুয়া স্পন্সর দেখানো, সঠিক তথ্য না দেওয়া বা আবেদনপত্রে ভুল তথ্য থাকার কারণে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান বা বাতিল হতে পারে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কোনোটি বাদ পড়া, একাডেমিক ফল ভালো না হওয়া, অফার লেটার পাঠানো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান ভালো না থাকা, কাগজপত্র ইংরেজির পরিবর্তে অন্য কোনো ভাষায় থাকা, সনদসহ জমা দেওয়া বিভিন্ন কাগজপত্রের অনুলিপি ঠিক না থাকার কারণেও এমনটি হতে পারে।

প্রতিবছরই অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার বৃত্তি নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। ভালো ফলাফল থাকলে খুব সহজেই মেলে এসব শিক্ষাবৃত্তি।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য তুলনামূলক বেশি বৃত্তির সুযোগ মেলে জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও সুইডেনে। 

কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রফেসর ফান্ডের মাধ্যমে বৃত্তি পেয়ে দেশটিতে পড়াশোনা করছেন।
বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বৃত্তির ঘোষণা দেয়। বিভিন্ন দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট কিংবা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে খোঁজ নিলে ঘরে বসেই মিলতে পারে বৃত্তির তথ্য। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটও (www.moedu.gov.bd) নিয়মিত বিভিন্ন দেশের বৃত্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি দেওয়া শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশের গন্তব্য যুক্তরাজ্য। দেশটিতে ভর্তি, পড়াশোনার তথ্য পাওয়া যাবে এসব সাইটে-
www.educationuk.org
www.ucas.com
www.ukba.homeoffice.gov.uk,
http://ukinbangladesh.fco.gov.uk/bn/visas,
www.ukcisa.org.uk, www.britishcouncil.org/bangladesh

ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও পড়তে যায় অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। এসব দেশে উচ্চশিক্ষার তথ্য পাওয়া যাবে নিচের সাইটগুলোতে-
www.studyineurope.eu
www.scholarshipportal.eu
http://eacea.ec.europa.eu/index_en.php
http://ec.europa.eu/education/study-in-europe

অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার তথ্য পাওয়া যাবে দেশটির সরকারি এই সাইটে- www.studyinaustralia.gov.au

কানাডায় উচ্চশিক্ষার তথ্য মিলবে সাইট দুটিতে
www.cic.gc.ca/english/study
www.cic.gc.ca/english/information/applications/student.asp

অনলাইনে একটু চোখ রাখলেই অন্যান্য দেশের তথ্যের খোঁজ মিলবে সহজে, তবে সঠিক তথ্য পাবেন সরকারি সাইটগুলোতে।


No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates