বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজের পাঁচদিনের সফরের সময় লোহিত সাগরের দুটি দ্বীপ মিত্র সৌদি আরবকে হস্তান্তরের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সরকারি এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন মিশরীয় নাগরিকেরা।
সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেছে নিয়েছেন দেশটির নাগরিকেরা। আইনিভাবেও সরকারের এ পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। শনিবার মিশরীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, মিশর ও সৌদি আরব জলসীমা চুক্তি সই করেছ এবং চুক্তি অনুযায়ী তিরান ও সানাফির দ্বীপ সৌদি জলসীমায় পড়েছে।
ছয় বছরের মধ্যে দ্বীপ দুটি সৌদি জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। সৌদি ও মিশরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বীপ দুটি আদতে সৌদি আরবের। ১৯৫০ সালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ আল সৌদ মিশরকে দ্বীপ দুটি দেখে রাখতে বলেছিলেন বলে এ দুটো মিশরীয় নিয়ন্ত্রণে আছে।
মিশরীয় পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ওই চুক্তিটির এই অপ্রত্যাশিত বক্তব্যে মিশরীয়রা সন্দিহান হয়ে উঠেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন, স্কুলে তাদের পড়ানো হয়েছে দ্বীপ দুটি মিশরের। ওই ঘোষণার পরপরই ট্যুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘আওয়াদ তার জমি বিক্রি করে দিয়েছে’ লেখা মন্তব্য আসতে থাকে।
এই মন্তব্যে মিশরের একটি জনপ্রিয় গানের কথা বলা হয়েছে, যেখানে আওয়াদ নামের এক মিশরীয় অত্যন্ত লজ্জাজনক প্রক্রিয়ায় নিজের জমি বিক্রি করে দিয়েছিল। ২০১১ সালের এক গণঅভ্যুত্থানে দেশটিকে ৩০ বছর ধরে শাসন করে আসা একনায়ক হোসনি মুবারকের পতন হয়। তারপর থেকে অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে মিশরকে।
মুবারকের পতনের পর মিশরের ইতিহাসের প্রথম অবাধ, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ইসলামপন্থি মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রার্থী মুহাম্মদ মুরসি জয়লাভ করে প্রেসিডেন্ট হন। কিন্তু ২০১৩ সালে গণ অসন্তোষের সুযোগে দেশটির সেনাবাহিনী মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর পরপরই মুসলিম ব্রাদারহুড বিরোধী সৌদি আরব মিশরকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে ভাসিয়ে দেয়।
মুরসিকে ক্ষমতা থেকে সরানোয় নেতৃত্ব দেওয়া তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিই এখন মিশরের প্রেসিডেন্ট। এ থেকেই অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন, মিশর দ্বীপ দুটোকে বিক্রি করে দিলো কিনা? গার্ডিয়ান।
Tuesday, April 12, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment