Social Icons

Wednesday, November 23, 2016

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম প্রবেশ বন্ধে আগের অবস্থানে ট্রাম্প!

নির্বাচিত হলে মসুলিম প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করার আগের ঘোষণা ফিরিয়ে এনেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যাপিটাল হিলে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের আলোচনায় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সেটিও এড়িয়ে যান তিনি। তবে তার দলের শীর্ষ নেতা বলছেন, মুসলিম প্রবেশ বন্ধের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম বাড়াবাড়ি করছে, ট্রাম্প জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার প্রেসিডেন্ট হতে চান বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে শঙ্কা আর কাটছে না মুসলিমদের। ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে কোনো ঘোষণা আর অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে আশা করছেন অনেকেই। তবে সেই অবস্থান পরিষ্কার করলেও উত্তর ইতিবাচক হবে এমন সম্ভাবনা কম।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পবিরোধীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে এসেছেন। ‘ট্রাম্প আমার প্রেসিডেন্ট নয় বলে মুহূর্মুহু স্লোগানে ভরিয়ে তোলা নিউইয়র্কের র‌্যালিতে ছিলেন জাতি ধর্ম নির্বিশেষ সকল নাগরিকদের প্রতিনিধি, যারা ট্রাম্পের উত্থানে শঙ্কিত। সেখানে মুসলিমরা এমন প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করছে কিনা সেটা জানা যায়নি। তবে ভিতরে ভিতরে প্রতিটি মুসলিম যে শঙ্কায় আছেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই ভীতিকে ভিন্ন ভিন্নভাবে তুলে আনছে গণমাধ্যম। মুসলিমরা বলছেন, তারা ভীত এবং বিব্রত।
‘আই এম এ্যবসলুটলি হরিফাইড’- আমার স্কুলগামী মেয়ে আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে কেন এটা হলো।কীভাবে হিলারী অন্তত ৪ লাখ বেশি ভোট পেয়েও আমাদের প্রেসিডেন্ট নয়? কেন একজন র্বণবাদি, যৌনআগ্রাসি আমাদের মাথার উপর প্রেসিডেন্ট হয়ে বসে গেছেন, আর আমার কাছে কোনো উত্তর নেই।’-এমএসএন বিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলছিলেন কাউস্সিল অন ইসলামিক রিলেশনস অফ আমেরিকা-কেয়ার এর নিউইয়র্ক প্রধান লিন্ডা সারসুর।
এসব আশঙ্কার কারণ রয়েছে যথেষ্ট। কেননা, অক্টোবরের ২২ তারিখে পেনসিলভেনিায়া পিটার্সবার্গ এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম ১০০ দিনে কী কী করবেন, সেটা বলতে গিয়ে প্রথমেই মুসলিমদের নাম না মুখে নিলেও, সন্ত্রাসী তৎপরতা আছে এমন দেশ থেকে যে কাউকে যুক্তরাষ্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরীক্ষা নিরীক্ষা বা এক্সস্ট্রিম ভেটিংয়ের কথা পূনর্ব্যক্ত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুসলিম বিদ্বেষ বেড়ে যায় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে।আর ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হ্ওয়ার ১০ ঘন্টার মাথায় সেটির আবার দেখা মিলেছে দেশের কয়েকটি জায়গায়। ক্যালিফোর্নিয়ার সানজোস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর হিজাব ধরে টান দিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করার খবর প্রকাশ করেছে সিএনএন। নিউইয়র্কে যারা হিজাব পরে খোলামেলা ঘোরাফেরা করেন তারা দিনের আলো ছাড়া সন্ধায় বের হতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন বলে খবর আসছে নানাভাবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভুমিধ্বস উত্থানের অনেক প্রতিক্রিয়ার একটি এই মুসলিমদের অস্বস্থি। সেই অস্বস্থি দূর করার জন্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যিনি আড়াই মাস পর অর্থাৎ জানুয়ারির ২০ তারিখে শপথ নেবেন, তিনি নতুন কোনো অবস্থান স্পষ্ট করবেন কিনা এমন প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে নানা আলোচনায়। তবে সেসব বিষয়ে চুপ থাকার নীতিতে আছেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, সীমান্ত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য বিল এবং চাকুরি সৃষ্টিকেই বড় কাজ হিসেবে সামনে আগানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে মুসলিমদের প্রবেশধিকার নিয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট অবস্থান নিতে নারাজ ট্রাম্প। ক্যাপিটাল হিলে প্রথমদিনের সফর শেষে সাংবাদিকরা তাকে এই প্রশ্ন করলে, এড়িয়ে গিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যান তিনি।
অবশ্য, রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক আরএনসি চেয়ারম্যান র‌্যান্স পিয়ারেবাস বলছেন, এটা একটা পুরোনো ইস্যু যা কয়েক মাস আগে কোনো এক প্রেক্ষাপটে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন। এখন নির্বাচিত হওয়ার পর তার যে বক্তব্য সেটাতে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন ট্রাম্প যে তিনি সবার প্রেসিডেন্ট হতে চান। এখানে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার নিয়ে এখন আলোচনাটাই হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।
‘দেখুন আমি জানি তার মনে কি আছে।তার চিন্তার কেন্দ্রে সবার প্রেসিডেন্ট হ্ওয়ার স্বপ্ন আছে। নতুন করে এই বিষয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করাটা অহেতুক ভিন্ন আলোচনার শামিল’ সিএনএন এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলছিলেন র‌্যান্স পিয়ারেবাস।
তবে, ট্রাম্পের প্রচারণা দফতর বলছে একেবারে ভিন্ন কথা। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের ৭ তারিখে দেওয়া মুসলিম প্রবেশ বন্ধ সংক্রান্ত ভাষণটি সরিয়ে রেখেছিলেন তারা এই কয়েক দিন। যা নিয়ে গত দুই দিন বেশ আলোচনা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার আবার সেটি সেই একই জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রচারণা দফতর থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, কোনো কারিগরি ত্রুটির কারণে হয়ত সেটি পাওয়া যাচ্ছিল না।এখন আবার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সেই ঘোষণাপত্র।
এমন অবস্থায় মুসলিমরা করণীয় ঠিক করছেন , নতুন বাস্তবতায় কী হতে পারে তাদের অবস্থান। গণমাধ্যমও বেশ কৌতুহল, এ নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট করে জানা যায় কীনা।তবে নিরুত্তর ডোনাল্ড ট্রাম্প।এসব কথা বার্তার মধ্যে আশার কথা হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প একে একে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আর ভিন্নমতের রাজনীতিকদের সঙ্গে দুরত্ব কমিয়ে আনার রাস্তায় হাঁটছেন।তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে হাউস স্পিকার পল রায়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তারা অভিবাসনসহ নানা বিষয়ে রিপাবলিকান রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছেন দুজনই।
পল রায়ান এর আগে ট্রাম্পের মুসলিম প্রবেশ বন্ধ সংক্রান্ত ঘোষণার পর সরাসরি সে অবস্থান অস্বীকার করে বলেছিলেন, এটা কনজারভেটিভ রাজনীতি নয়, রিপাবলিকান দল তার এই বক্তব্য সমর্থন করে না।তার মতো স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছিলেন আরো অনেক শীর্ষ রিপাবলিকান রাজনীতিক। এখন দেখার বিষয় মূল ধারার কনজারভেটিভ রিপাবলিকান মতাদর্শ যেটি সকল জাতি ধর্মকে আমেরিকার সংবিধান অুনযায়ী মর্যাদা দানের পক্ষে সেটি কতখানি সমুন্নত থাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates